(বাঁ দিক থেকে) শেখ শাহজাহান এবং দেবাশিস ধর। —ফাইল চিত্র।
এক সময় যিনি তাঁর জন্য চা-বিস্কুট এনে দিতেন, সন্দেশখালির সেই শেখ শাহজাহান তৃণমূল সরকারের সময়ে হয়ে গেলেন ‘লিডার’— এমনটাই দাবি করেছেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী এবং প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধর। তিনি আরও দাবি করেছেন যে, রাজ্যের মানুষ দু’টি জমানা দেখেছেন। কিন্তু, বাম আমলে এত চুরি দেখেননি!
সংবাদমাধ্যমের একাংশের সঙ্গে কথোপকথনে দেবাশিস দাবি করেন, তৃণমূল আমলে সমাজের বুদ্ধিজীবী, শিক্ষিত মানুষদের এড়িয়ে (‘বাইপাস’ করে) শাহজাহানের মতো ‘বাহুবলীদের’ নেতা বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দুই আমলে পুলিশের চাকরি করায় তফাত কী, সে প্রশ্নে তাঁর ব্যাখ্যা, বাম আমলে সরকারের মাথারা ছিলেন অত্যন্ত শিক্ষিত। আইন-সহ বিভিন্ন বিদ্যায় দক্ষতা ছিল। কিন্তু, তৃণমূলের সময়ে অনেক ভাল লোক থাকা সত্ত্বেও উত্থান হয়েছে শাহজাহানদের।
দেবাশিস বলেন, ‘‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি শাহজাহানকে। বসিরহাটের এসডিপিও ছিলাম ২০১০-’১১ সালে। এই সরকার আসার আগেই। শাহজাহান তখন সন্দেশখালি থানার বাইরে বসে থাকত। আমি গেলে বড়বাবু বলতেন, এই দ্বীপে কিছু পাওয়া যায় না। আমি চা খেতে ভালবাসি। বড়বাবু শাহজাহানকে বলতেন, ‘সাহেব এসেছে, ভাল চা পাতা আর বিস্কুট নিয়ে আয়’।’’
দেবাশিসের দাবি, শাহজাহান নদী পেরিয়ে চা ও টোস্ট বিস্কুট নিয়ে আসতেন। দেবাশিসের কথায়, ‘‘বাম আমলে যার এমন দশা ছিল, যে লোক ইটভাটায় কয়লা সরবরাহ করত, সেই তৃণমূল আমলে নেতা হয়ে গেল, হল জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ! আগে সে ওসির ফাইফরমাস খাটত। পরবর্তী কালে শাহজাহানের ফাইফরমাশ খাটতেন বড়বাবু। ১২ বছর ধরে অন্ধকারের রাজত্ব চালিয়ে গেল।’’
দেবাশিসকে আক্রমণ শানিয়েছে বাম শিবির। তোপ দেগেছে শাসকদলও। সিপিএমের বীরভূম জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূলের বিরোধিতা যে কারণে করি, সেটা হল দুর্নীতি, গণতন্ত্রের উপরে আক্রমণ , মানুষকে কথা বলতে দেয় না বলে। কিন্তু, উনি যে দলে গিয়েছেন, সেই দল সুশাসন করে বলে তাঁর মনে হলে, তিনি বিভ্রান্তির চূড়ান্ত জায়গায় আছেন। বিজেপির মূল নীতিই হল মানুষকে কথা বলতে না দেওয়া। স্বৈরশাসন শিক্ষিত লোক করছে না, অশিক্ষিত, সেটা বিষয় নয়।’’
জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এ নিয়ে যা বলার রাজ্য নেতৃত্ব বলবেন।’’ তৃণমূলের জেলা সহসভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে দলে তিনি যোগ দিয়েছেন, সেই দলের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কথা ভুলে গেলেন। তিনিও তো চা বিক্রি করতেন। এমন কোনও নিয়ম নেই, কম শিক্ষিত হলে তিনি রাজনীতি করতে পারবেন না বা মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy