Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

‘রাজমাতা’ নিয়ে জলঘোলা, সংশয় বিজেপির অন্দরেও

ইতিমধ্যে ধুবুলিয়ার সভামঞ্চ থেকে ‘রাজমাতা’ কথাটিকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মহুয়া মৈত্র (বাঁ দিকে), অমৃতা রায় (ডান দিকে)।

মহুয়া মৈত্র (বাঁ দিকে), অমৃতা রায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর  শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:২৩
Share: Save:

কৃষ্ণনগর রাজপরিবারের সদস্য অমৃতা রায়কে প্রার্থী করে চমক দিয়েছে বিজেপি। প্রচারে তাঁকে ‘রাজমাতা’ ও ‘রানিমা’ হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিজেপির অন্দরের খবর, কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির প্রতি মানুষের যে আবেগে সেটাই উসকে দিয়ে নির্বাচনে বাজিমাত করারক চেষ্টা চলছে। কিন্তু দলেরই একাংশের সংশয়, তুরুপের তাস করতে চাওয়া ‘রাজমাতা’ শব্দটি শেষ পর্যন্ত বুমেরাং হয়ে উঠবে না তো?

ইতিমধ্যে ধুবুলিয়ার সভামঞ্চ থেকে ‘রাজমাতা’ কথাটিকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘কোথাকার রাজমাতা’ এই প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই দেশে এখন আর কেউ রাজা নেই, সকলেই প্রজা। কৃষ্ণনগরের বাসিন্দাদের একাংশও ‘রাজমাতা’ শব্দটি রাজনীতির মঞ্চে ব্যবহার করা নিয়ে প্রকাশ্যে আপত্তি তুলছেন। সেই সঙ্গে পলাশির যুদ্ধে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের ভূমিকা অর্থাৎ সিরাজ-উদ-দৌলার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে ব্রিটিশকে সমর্থন করার যে বিষয়টি অমৃতা নিজেই উসকে দিয়েছেন, তার পক্ষে যা-ই যুক্তি থাক না কেন, নাগরিকদের অনেকেই যে সেটা ভাল ভাবে নিচ্ছেন না, জেলার বিজেপি নেতাদের অনেকের কাছেই তা পরিষ্কার। সুযোগ বুঝে তৃণমূলও বিষয়টি বার বার সামনে আনছে। মমতাও জনসভায় বলে গিয়েছেন, “মানুষ সিরাজকে সম্মান করে, মিরজ়াফরকে করে না।”

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

সংখ্যাঘু অধ্যুষিত চাপড়া বিধানসভা কেন্দ্রের ‘লিড’ যেমন তৃণমূলের জয়ের অন্যতম প্রধান চাবিকাঠি হতে পারে, তেমনই কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভার (কৃষ্ণনগর শহর এই কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত) উপর অনেকখানি নির্ভর করছে বিজেপির ভবিষ্যত। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এই কেন্দ্রে প্রায় ৫৩ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল। তার মধ্যে শুধু কৃষ্ণনগর শহরেই তাদের ‘লিড’ ছিল প্রায় ২৮ হাজার ভোটের। গত বিধানসভা নির্বাচনেও প্রায় একই ঘটনা ঘটে। সে বার ভোট কিছুটা কমলেও বিজেপি প্রার্থী মুকুল রায় প্রায় ৩৫ হাদার ভোটে জেতেন। কৃষ্ণনগর শহর থেকে তিনি প্রায় ১২ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন। প্রায় সব ওয়ার্ডে ভরাডুবি হয়েছিল তৃণমূলের।

এত দিন কৃষ্ণনগর শহরের মানুষদের কাছে রাজবাড়ির সদস্যেরা ছিলেন অনেকটা দূর গ্রহের বাসিন্দা। শুধু মাত্র পুজোর সময় বাদে রাজবাড়ির পাঁচিলের ও পারের জগৎ তাঁদের ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকত। আর বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলায় অমৃতা রায়কে কিছুটা কাছকাছি পাওয়া যেত। এখন অমৃতা প্রচারে গিয়ে সেই দূরত্ব ঘোচানোর চেষ্টা করলেন তা সত্যি কতটা হচ্ছে তা নিয়ে শহরের বিজেপি নেতাদের একাংশ সন্দিহান। তার মধ্যে ইতিহাস ও ‘রানিমা’ আখ্যা নিয়ে এই নতুন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা স্তরের এক নেতার কথায়, “বিষয়টা নিয়ে যে এ রকম জলঘোলা হবে, তা আমরা আগে বুঝতে পারিনি।”

অমৃতা রায় বলছেন, “আমি তো কাউকে ওই নামে ডাকতে বলিনি। প্রথম থেকেই মানুষ আদর করে আমায় ওই নামে ডেকে আসছেন। লড়াইয়ের ময়দানেও তাঁরা আমার সঙ্গে আছেন।” বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি সৈকত সরকারে মতে, “প্রথম দিকে একটু সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু এখন শহরের মানুষ তাঁদের আদরের রানিমাকে প্রার্থী হিসাবে সাদরে গ্রহণ করেছেন।” জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র, কৃষ্ণনাগরিক দেবাশিস রায় পাল্টা বলেন, “গণতান্ত্রিক দেশে রাজা-রানি বলে কিছু হয় না। ওই পরিবার শহরের মানুষের সঙ্গে কোনও দিন সামান্যতম যোগাযোগ রাখেনি। মানুষ কিছু ভোলেনি।”

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE