কাজ চলছে আরামবাগ বাস স্ট্যান্ড এলাকার একটি ফ্লেক্স তৈরির কারখানায়। —নিজস্ব চিত্র।
অতীতে কোনও নির্বাচন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই ফ্লেক্স-ফেস্টুন কারবারিদের তৎপরতা শুরু হয়ে যেত আরামবাগে। বিশেষ করে শাসকদলের প্রার্থী ঘোষণা হোক বা না হোক, দলকে ভোট দেওয়ার ডাক দিয়ে ফ্লেক্স-ফেস্টুনের বায়না আসত। এ বার লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণা হয়েছে ১০ মার্চ। বিজেপির ২৪ মার্চ এবং সিপিএমের ২৯ মার্চ। কিন্তু এখনও তেমন বায়না পাননি বলে হতাশা প্রকাশ করছেন আরামবাগের বহু ব্যবসায়ী।
শহরের ব্যস্ত ফ্লেক্স-ফেস্টুন কারবারিদের অন্যতম বেনেপুকুরের সুভাষ শর্মা বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ভোটের তেমন কাজই আসেনি। ভোট দেরিতে হওয়ায়, না কি অন্য কোনও কারণ, বুঝতে পারছি না।” আবার, আরামবাগ বাস স্ট্যন্ডের গায়ে শহরের অন্য এক বড় ব্যবসায়ী রাজীব লাগা ভোটের কাজে বায়না পেলেও অন্যবারের তুলনায় বাজার ভাল নয় বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “এ বার অদ্ভুত ভাবে শাসকদল তৃণমূলের কাজ কম এসেছে। যে ক’টা কাজ মিলেছে, তার ৮০ শতাংশ বিজেপির। বাকি ২০ শতাংশ তৃণমূল এবং সিপিএমের।” বছর ছয়েক আগে ব্যবসা শুরু করা খানাকুলের মধ্যারঙ্গের অরিন্দম ভৌমিক বলেন, “এখন ব্যবসায় পরিচিতি বাড়ায় খানাকুল বিধানসভা এলাকার ভোটের ফ্লেক্স-ফেস্টুন তৈরির কাজের ৯০ শতাংশই আমি করছি। এখনও পর্যন্ত দেড় লক্ষ টাকার উপর কাজ করেছি। গত বিধানসভা ভোটে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার কাজ করেছি। ভোট এখনও দেরি আছে। আশা করছি, ব্যবসা খারাপ হবে না।”
ফ্লেক্স-ফেস্টুন তৈরির সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা জানান, এমনিতেই সারা বছর ব্যবসা টিকিয়ে রাখে রাজনৈতিক দলগুলি। তাদের নানা সম্মেলন-কর্মসূচি ছাড়াও ব্যবসায়ীরা তাকিয়ে থাকেন যে কোনও ভোটের দিকে। সারা বছরে যদি ব্যবসা হয় ২-৩ লক্ষ টাকার, ভোট থাকলে সেটাই আড়াই থেকে তিন গুণ বাড়ে বলে তাঁরা জানান। কিন্তু এ বারে এখনও রাজনৈতিক দলগুলির তেমন সাড়া মেলেনি বলে তাঁদের আক্ষেপ।
বিশেষ করে শাসকদলের সাড়া না মেলায় তাঁদের হতাশা বেশি। ওই ব্যববসায়ীদের অনেকেই জানিয়েছেন, তৃণমূলের জেলা থেকে অঞ্চল বা পুরসভার ওয়ার্ড স্তরের নেতারাও নিজের নাম প্রচারকের জায়গায় রেখে প্রার্থী এবং দলনেত্রীর ছবি-সহ বিভিন্ন ভোটে যে ফ্লেক্স-ফেস্টুন করান, তা এ বার নেহাতই কম।
প্রচার সামগ্রী কি সত্যিই কম?
এই প্রশ্নে তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার যুব সভাপতি পলাশ রায় বলেন, “কোনও ঘাটতি নেই। তবে, শুধু আমরা নয়, এখন কোনও দলই ফ্লেক্স-ফেস্টুনে জোর দেবে না বলেই মনে হয়। ঝড়বৃষ্টির সময়। ভোট দেরি আছে। এত আগে ফ্লেক্স-ফেস্টুন দিলে তা নষ্ট হয়ে ফের ভোটের আগে করাতে হতে পারে।” ওই তৃণমূল নেতা আরও জানান, এখন দেওয়াল লেখার কাজ সম্পূর্ণ করা হচ্ছে। রাজ্যস্তর থেকে সব বুথে একদফা পোস্টার এবং কিছু ফ্লেক্স দেওয়াও হয়েছে।
বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, “আমার ইতিমধ্যে বেশ কিছু ফ্লেক্স-ফেস্টুন তৈরি করে ঝুলিয়েছি। আরও তৈরির বরাত দিয়েছি।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ভাস্কর রায় বলেন, “আমরা এখানে প্রতি ভোটে যে পরিমাণ ফ্লেক্স-ফেস্টুনে বরাদ্দ রাখি, এ বারও তা রাখা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy