ঘাটালের তৃণমূলের অভিনন্দন মিছিল। নিজস্ব চিত্র।
বন্যায় ডোবে চাষির জমি। ডোবে মাস্টার প্ল্যান। তবে সেই বৃষ্টির আশাতেই বাঁচে চাষা। প্রতিশ্রুতির বর্ষায় বাঁচে ঘাটালও।
রাজনীতির টানাপড়েন আপাতত মিটতেই এল ঘোষণা। সোমবার আরামবাগের সভা থেকে ঘাটালের সাংসদ দেবকে পাশে বসিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করলেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রাজ্য সরকার একাই করবে। ঘোষণার পর শাসক শিবির বিলি করল মিষ্টি। সংশয় প্রকাশ করল বিরোধীরা। রাজনীতির গলিতে ঢুকতে রাজি নয় ঘাটালবাসী। মুখ্যমন্ত্রী কথা দিলে তা রাখেন— এটা ধরে নিয়েই খুশিতে মেতেছে তারা।
তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা থেকে দেবের পদত্যাগ এবং তাকে ঘিরে গত দশ দিন ধরে রাজনৈতিক টানাপড়েন দেখেছে ঘাটালবাসী। দেব সাংসদে দাঁড়িয়ে চলতি লোকসভার শেষদিনেও উল্লেখ করেছেন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কথা। পরে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমার দশ বছরের লড়াই এবং ঘাটালের মানুষের দীর্ঘদিনের লড়াই। কেন্দ্রকে বহুবার বলা হয়েছে। ২০২৪ সালে যেই জিতুক, দিদির কাছে আমার অনুরোধ, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান যেন হয়।’’ সোমবার আরামবাগে প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রাজ্যই কার্যকর করবে। ১২৫০ কোটি টাকা (কয়েক দফায়) দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতার ঘোষণার পরই ঘাটালের বাসিন্দাদের মনে একটা বাড়তি আবেগ-উন্মাদনা তৈরি হয়। ঘাটাল তৃণমূলের তরফে শুরু হয় মিছিল। ঘাটাল ব্লক সভাপতি দিলীপ মাজি তার গ্রাম শিলা রাজনগরে মিছিলের পাশাপাশি মিষ্টি বিলিও করেন। ঘাটাল শহরেও মিছিল হয়। ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক জয়ন্ত শাসমল বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর ওই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।” ঘাটাল আদালতের আইনজীবী তপন রায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন হলে ইতিহাসের পরিসমাপ্তি ঘটবে।”
বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না। সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অশোক সাঁতরা বলেন, “বাজেট তো ক’দিন আগে হয়েছে। সেখানে টাকা ধরা আছে তো? ২০১১ সালে প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী এমন কথা ঘোষণা করেছিলেন।” বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “এটা নিবার্চনী চমক। যদিও উনি ( মুখ্যমন্ত্রী) একাই করবেন,তা হলে এতদিন অপেক্ষা করলেন কেন। কেন্দ্রকে দোষারোপ করছিলেন কেন।” মন্ত্রী মানস ভূুঁইয়া বলেন, ‘‘দেব কে পাশে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ওই ঘোষণা মেদিনীপুরবাসী ও ঘাটালবাসী হিসেবে চির কৃতজ্ঞ থাকব।’’ ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক ও দেবাশীষ মাইতি বলেন, ‘‘দ্রুত ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হোক।’’
শাসকের অন্দরে বিরোধ, দ্বন্দ্বের পর ঘোষণা। তৃণমূলের এক নেতা বললেন, ‘‘রবিঠাকুরই তো বলে গিয়েছেন, সকল দ্বন্দ্ববিরোধ-মাঝে জাগ্রত যে ভালো/ সেই তো তোমার ভালো।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy