—প্রতীকী চিত্র।
শাসক শিবির তৃণমূল আমলই দিতে নারাজ। বিজেপি শিবির উৎসাহী হলেও সাবধানী। শনিবার সন্ধ্যায় একাধিক বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল প্রকাশের পর রবিবার এমনই ছবি দেখা গেল জেলার যুযুধান দুই শিবিরের দলীয় কার্যালয়ে।
শনিবার রাতে সমীক্ষা সামনে আসার পর থেকেই উন্মাদনা বেশ কিছুটা বেড়েছে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। রবিবার সকালে নিয়ম মেনেই বিজেপির জেলা কার্যালয়ে উপস্থিত হন দলের স্থানীয় নেতারা৷ বেশ কিছুক্ষণ বিভিন্ন সংস্থার করা সমীক্ষা নিয়ে চলে আলোচনা। প্রায় সমস্ত সমীক্ষার ফলাফলেই যেভাবে দেশে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটকে এগিয়ে রাখা হয়েছে, তা নিয়ে চাপা উচ্ছ্বাসও দেখা গিয়েছে কার্যালয়ে উপস্থিত কর্মীদের মধ্যে।
তবে সমীক্ষার উপর ভরসা করে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হওয়ার পক্ষপাতী নন কেউই। আগামীকালের ফল প্রকাশের জন্য অপেক্ষা করতে চাইছেন সকলেই। বিজেপির বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্য বলেন, “জয়ের ব্যাপারে আমি বরাবরই আশাবাদী ছিলাম, এখনও আছি৷ গোটা রাজ্যেই মানুষ তৃণমূলকে হারাবেন। এখন গণনার দিনের জন্য অপেক্ষা করছি। সেখানে দাঁতে দাঁত চেপে সমস্ত রকম পরিস্থিতি মোকাবিলা করার প্রস্তুতি চলছে।” বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, “দেশে এবং রাজ্যে বিজেপি ভাল ফল করবে, সেই ব্যাপারে আমরা অত্যন্ত আশাবাদী। সমীক্ষাগুলিও একই কথা বলছে। তবে গণনা না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়।”
বুথ ফেরত সমীক্ষার ফলাফলকে অবশ্য কোনও গুরুত্বই দিতে নারাজ তৃণমূল। রবিবার খোদ তৃণমূলনেত্রী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সব সমীক্ষাকে ‘ভুয়ো’ বলে উড়িয়ে দেন। দলের নেতাকর্মীরাও সেই সুরেই জানাচ্ছেন, এই ধরনের সমীক্ষার কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই।
অন্য দিনের মতোই এ দিনও সিউড়ির দলীয় কার্যালয়ে তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বোলপুর ও রামপুরহাটের তৃণমূল কার্যালয়ে তুলনামূলক ভিড় কম থাকলেও কর্মীদের চোখে-মুখে কোথাওই চিন্তার ছাপ দেখা যায়নি। এ দিন তৃণমূল কার্যালয়গুলিতেও সমীক্ষার ফলাফল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে রাজ্যে তৃণমূলের প্রাপ্ত আসন যে সমীক্ষার তুলনায় অনেকটাই বেশি হবে, তা নিয়ে কার্যত সকলেই নিঃসন্দেহ। তবে দেশের সার্বিক ফলাফলের নিরিখে বিজেপির আসন প্রাপ্তির সংখ্যা নিয়ে কিছুটা চিন্তা প্রকাশ করেন অনেকে।
সমীক্ষার ফল নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও চিন্তার কথাই মানছেন না তৃণমূল নেতারা৷ দলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই ধরনের সমীক্ষা বিশ্বাসযোগ্য নয়৷ বহু ক্ষেত্রেই তা মেলে না৷ মানুষ তৃণমূলের সঙ্গেই আছেন। ভোটের ফলেই তা প্রমাণ হবে৷” প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছে বোলপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের গলাতেও। তিনি বলেন, “এই সমীক্ষার ফলাফল আমরা মানি না৷ ২০২১ সালেও তৃণমূলের যে খারাপ ফলাফল সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, তা বাস্তবে হয়নি। এ বারেও তাই হবে।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি সমীক্ষা দেখে এত লাফাচ্ছে, ওরা তো গণনার এজেন্টই জোগাড় করতে পারছে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy