E-Paper

রোদের ঝাঁঝ কমতেই প্রচার দিনভর

খণ্ডঘোষের সেহারাবাজার এলাকায় যৌথ প্রচারে গিয়েছিলেন বর্ধমান পূর্ব লোকসভার সিপিএম প্রার্থী নীরব খাঁ এবং বিষ্ণুপুর লোকসভার প্রার্থী শীতলচন্দ্র কৈবর্ত্য।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৪৫
বর্ধমান শহরে সুকৃতি ঘোষাল (বাঁ দিকে),দাঁইহাটে অসীম সরকার (ডান দিকে)

বর্ধমান শহরে সুকৃতি ঘোষাল (বাঁ দিকে),দাঁইহাটে অসীম সরকার (ডান দিকে) ছবি: উদিত সিংহ , ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

দাবদাহ খানিক কমতেই প্রচারে গতি বাড়ালেন প্রার্থীরা। রবিবার রোড-শো থেকে মন্দিরে পুজো, কবিগানের আসরে ব্যস্ত ছিলেন বর্ধমান পূর্বের বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকার। সিপিএম প্রার্থী নীরব খাঁ যোগ দে প্রচারে, মিছিলে। তৃণমূল প্রচারের সঙ্গে একাধিক জায়গায় চাটাই-বৈঠক করে। রায়নায় প্রচারে যান প্রার্থী শর্মিলা সরকার।

বেলা ১১টা নাগাদ দাঁইহাটের ভাউসিং মোড় থেকে বাজনা নিয়ে টোটোয় চেপে হনুমান লাঠিতলা পর্যন্ত রোড-শো করেন অসীম। পথে শিবমন্দির, জগন্নাথ মন্দিরে পুজো দেন। কখনও টোটো থেকে নেমে পথচলতি মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন, কখনও বাজনার তালে শরীর দোলাতেও দেখা যায় তাঁকে। দুপুরে কাটোয়া আদর্শপল্লি এলাকায় এক দলীয় কর্মীর বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করেন। করুই গ্রামে পথসভা ও কবিগানেও যোগ দেন। পরে রাত সাড়ে ৭টা নাগাদ তিনি কাটোয়া শহরের ঘোষেশ্বরতলা মন্দিরে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। শ্রীচৈতন্য প্রবর্তিত হরিনাম প্রচার সমিতির কর্মকর্তা অভিজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা প্রতি বছর এই অনুষ্ঠান করি। কাটোয়া শহর-সহ নানা এলাকা থেকে বহু মানুষ আমাদের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে গীতাপাঠ করেছেন।’’ কলকাতা থেকেও সাধুসন্তরা অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। ধর্মীয় আলোচনা হয় সেখানে। দুপুরে হয় গীতাপাঠ ও গীতা আরতি। প্রায় হাজার দুয়েক মানুষ অন্নভোগ গ্রহণ করেন। অভিজিতের দাবি, কবিগানের শিল্পী হিসেবে অসীমবাবুকে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এতে রাজনীতির যোগ নেই। বিজেপির জেলা (কাটোয়া সাংগঠনিক) সাধারণ সম্পাদক সীমা ভট্টাচার্য বলেন, “সকাল থেকেই প্রচারে ভাল সাড়া মিলেছে।’’

মঙ্গলকোটের নানা জায়গায় প্রচারে এসেছিলেন বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী শ্যামলী প্রধান। দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে ইছাবটগ্রাম, পালিশগ্রাম, খুদরুন, সিঙ্গত, চৈতন্যপুর ও মাথরুন গ্রাম ঘোরেন তিনি। বিকেলে প্রচার চলে শ্যামবাজার, ভাল্যগ্রাম, লক্ষ্মীপুর ও পিন্ডিরা গ্রামে। মঙ্গলকোটের সিপিএম নেতা শাজাহান চৌধুরী বলেন, “আমাদের প্রার্থীকে দেখে শাসক দলের ভয়কে উপেক্ষা করেই এগিয়ে এসেছেন মানুষ। ভাল সাড়া মিলেছে।’’

খণ্ডঘোষের সেহারাবাজার এলাকায় যৌথ প্রচারে গিয়েছিলেন বর্ধমান পূর্ব লোকসভার সিপিএম প্রার্থী নীরব খাঁ এবং বিষ্ণুপুর লোকসভার প্রার্থী শীতলচন্দ্র কৈবর্ত্য। বর্ণাঢ্য মিছিল হয়। ছিলেন
কৃষক নেতা মির্জা আক্তার আলি ও বিনোদ ঘোষ। সিপিআইএমএল প্রার্থী সজলকুমার দে পূর্বস্থলী ২ ব্লকের নানা জায়গায় প্রচার করেন। চণ্ডীপুর, জামালপুর, কালেখাঁতলা, মুকসিমপাড়ায় প্রচারের পরে ফলেয়া এলাকায় সভা করেন। ধান, আলুর দর না মেলায় চাষিদের মুশকিল বাড়ছে বলে দাবি করেন তিনি।

রাজ্যের প্রাণি সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ প্রতিদিনই সকালে নানা পেশার, নানা এলাকার মানুষের সঙ্গে কথাবার্তা বলছেন। জানতে চাইছেন অসুবিধা রয়েছে কি না। রবিবার সকালে পরিবহণ শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের কোনও সমস্যা রয়েছে কিনা জানতে চান তিনি। চায়ে চুমুক দিতে দিতে আলোচনা চলে। সন্ধ্যায় মহিলাদের নিয়ে বাড়ির উঠোন, ঠাকুর দালান, আটচালায় চাটাই বৈঠক করেন। চলে সরকারি প্রকল্পের প্রচার। একটিতে ছিলেন বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলা সরকার।

বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বাম ও তৃণমূল প্রার্থীকেও ছুটতে দেখা যায় দিনভর। বাম প্রার্থী সুকৃতি ঘোষাল বোরহাট মোড় থেকে প্রচার শুরু করে ২৮, ২৫, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড ঘোরেন। বিকেলে রথতলা পার্টি অফিস মিছিল শুরু হয়ে ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড ঘোরে। তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ গিয়েছিলেন ভাতারের সাহেবগঞ্জ ১ এলাকায়। পথে মাঠে ক্রিকেট খেলা হচ্ছে দেখে গাড়ি দাঁড় করিয়ে নেমে পড়েন। প্রায় মিনিট ১৫ ব্যাট হাতে চার, ছয় হাঁকান। বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্যকে পেয়ে খুশি হন সুব্রত দাস, রূপম দাসের মতো খেলোয়াড়েরা। চলে ছবি তোলার পর্ব। পরে আলিনগর, বামুনাড়ায় মনসা মন্দিরে, বনপাসে শিব মন্দিরে পুজো দেন তিনি। সাহেবগঞ্জ ২ পঞ্চায়েতের ঘোলদা গ্রামে জনসংযোগ এবং ওরগ্রাম কলোনি এলাকায় কর্মিসভা করে মধ্যাহ্নভোজন সারেন। আবার সাহেবগঞ্জ ১ পঞ্চায়েতের কাশীপুরে কর্মিভায় যাওয়ার পথে ক্রিকেট খেলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী, জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি স্বরাজ ঘোষ, রাজ্য যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক শান্তনু কোনার। এ দিন গলসির পুরসায় একটি ইফতার পার্টিতে যোগ দেন কীর্তি। তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি জাকির হোসেন তাঁকে দুর্গার স্মারক উপহার দেন।

কীর্তি আজাদ শনিবার দাবি করেছিলেন, বিজেপির লোকেরাই দিলীপ ঘোষকে হারিয়ে দেবেন। রবিবার দুর্গাপুরে ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের জবাব, ‘‘কীর্তি আজাদকে এখানকার তৃণমূলের নেতারা যেটা মুখস্ত করিয়ে দিচ্ছেন, উনি সেটাই বলছেন। উনি বাংলা উচ্চারণ করতে পারেন না। দুর্ভাগ্য!’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Summer Season

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy