আদালতের নির্দেশে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের নিয়োগ বাতিল হওয়ায় নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে খানিকটা আতান্তরে পড়ল জেলা প্রশাসন। কারণ এমনিতেই ভোটকর্মী জোগাড় করতে গিয়ে কার্যত নাজেহাল অবস্থা কর্তাদের। ভোটকর্মী নিয়োগ করা গেলেও ‘রিজ়ার্ভ’ কর্মীর সংখ্যা পর্যাপ্ত নয় বলেই প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এর উপরে চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা ভোটের ডিউটি না করলে যে শূন্যস্থান সৃষ্টি হবে সেটা কী ভাবে সামাল দেওয়া যাবে তা এখনও কর্তাদের কাছে পরিষ্কার নয়। তাঁরা আপাতত তাকিয়ে আছেন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশের দিকে। তবে এক জন ভোটকর্মীকে একাধিক দিন ভোটগ্রহণ করতে হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে।
এমনিতেই বছরের পর বছর সরকারি কর্মীদের অবসর ও শূন্যপদে নিয়োগ না হওয়ার জেরে ভোটকর্মীর সংখ্যা ক্রমশ কমছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ব্যক্তিদেরও তালিকা থেকে বাদ দিতে হয়েছে। এ ছাড়া আছেন অসুস্থতা বা শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে ছাড় পাওয়া কর্মীরা। বুথে গিয়ে ভোটগ্রহণ ছাড়াও নির্বাচন সংক্রান্ত অন্যান্য কাজের জন্য একটা বড় সংখ্যক কর্মীর প্রয়োজন হয়। এখন আর নতুন করে ভোটকর্মী পাওয়ার সম্ভবনা নেই বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা। যে কারণে চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা যদি ভোটর ডিউটি করতে না পারলে প্রশাসনকে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে।
নির্বাচন কমিশন এখনও কোনও নির্দেশিকা না পাঠালেও জেলার কর্তারা নিজেদের মতো করে পরিস্থিতি সামলানোর পরিকল্পনা শুরু করেছেন। তবে এখনও পরিষ্কার নয়, আদালতের নির্দেশের ফলে কত জন ভোটকর্মী কমবে। নদিয়া জেলা মাধ্যামিক স্কুল পরিদর্শক দিব্যেন্দু পাল বলেন, “এখনও আমাদের কাছে কোনও তালিকা আসেনি। ফলে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়।” তবে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রধান শিক্ষক ছাড়া চাকরি যাওয়া সহকারী শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় পাঁচশো। তার সঙ্গে ‘সি’ ও ‘ডি’ গ্রুপের কর্মীরা তো আছেনই।
প্রশাসন সূক্রে জানা গিয়েছে, নদিয়া জেলায় ৪৬২৪ টি বুথের জন্য প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার ভোটকর্মীর প্রয়োজন। তার সঙ্গে ‘রিজ়ার্ভ’ ভোটকর্মী পাওয়া গিয়েছে মাত্র আট শতাংশ। রিজার্ভ ভোট কর্মী রাখতেই হবে। সংখ্যাটা এর থেকে কোনও ভাবেই কমানো যাবে না বলে কর্তাদের দাবি। ফলে আরও কর্মীর প্রয়োজন। সেটাও সম্ভব নয়। তা হলে উপায়? জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ বলেন, “এখনও বিষয়টি পুরোপুরি পরিষ্কার নয়। তবে প্রয়োজনে হরিণঘাটা, কল্যাণী বা করিমপুর এলাকার ভোটগ্রহণের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের একটা অংশকে কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট কেন্দ্রের ভোটের কাজে ব্যবহার করতে হতে পারে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)