Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

বাতিলেও, বিক্ষোভেও? দুই ফুলের নিশানায় বাম

রাজ্য সরকার অবশ্য হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১৬-র প্যানেল বাতিলের পরেই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা জানিয়েছিল।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

দয়াল সেনগুপ্ত 
  সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:০১
Share: Save:

সিপিএমের আইনজীবী নেতা চাকরি বাতিলের সওয়াল করছেন। আবার, সিপিএমের শিক্ষক সংগঠনই চাকরিহারাদের হয়ে আন্দোলন করছেন। ভোটের মুখে এসএসসি মামলায় সিপিএমের এই দুই ভূমিকার দাবি করে ‘দ্বিচারিতা’র অভিযোগে তাদের আক্রমণে করছে তৃণমূল-বিজেপি। অভিযোগ অস্বীকার করছে সিপিএম। বাম বনাম দুই ফুল, ঘাসফুল ও পদ্মের এই তীব্র তরজার মধ্যে চাকরিপ্রার্থীদের প্রশ্ন, ‘‘আমরা কি তবে রাজনীতির খেলার ঘুঁটি?’’

শনিবার যোগ্যদের চাকরি ফেরানোর দাবি নিয়ে এসএসসি ভবন ঘেরাও কর্মসূচি নিয়েছিল বাম-ছাত্র যুব ও শিক্ষক সংগঠন। শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-র দাবি, যোগ্যদের চাকরি বহাল রাখতে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ারও প্রস্ততি নিচ্ছে তারা।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

রাজ্য সরকার অবশ্য হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১৬-র প্যানেল বাতিলের পরেই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা জানিয়েছিল। সেই প্রসঙ্গ তুলেই তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি তথা আইনজীবী মলয় মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘এক দিকে যখন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে সওয়াল করছেন পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হোক, সেখানে ভোটের আগে ওই দলের ছাত্র যুব ও শিক্ষক সংগঠন এখন যোগ্যদের চাকরি ফেরানোর দাবিতে আন্দোলন করছে। এটা স্রেফ দ্বিচারিতা।’’ তৃণমূল নেতাদের দাবি, যোগ্যদের চাকরি বাতিল হওয়ায় ক্ষোভের মুখে এবিটিএ রাজনীতি করতে নেমেছে।

গত ২২ তারিখ সোমবার, এসএসসি মামলার রায়ে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করার নির্দেশ দেয়। শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে রাজ্যে এক ধাক্কায় চাকরি বাতিল হয় ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের। তৃণমূলের নেতারা রায়ের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করে দাবি করছেন, সেখানে দুই বিচারপতি উল্লেখ করেছেন মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সওয়াল করেছিলেন দুর্নীতির অভিযোগে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াই বাতিল করা হোক। তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন সমূহের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক বলছেন, ‘‘দু’মুখো নীতিই তো বামেদের চরিত্র। দু’দিকেই খেলছে। তৃণমূল সরকার প্রথম থেকেই বলছে যোগ্যদের কোনও ভাবেই বঞ্চিত করা যাবে না।’’

তৃণমূলের আনা অভিযোগ মানেননি বীরভূমে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের জেলা নেতা মতিউর রহমান। তিনি বলছেন, ‘‘বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের ওটা শেষ কথা। কিন্তু তার আগে অনেকগুলো অনুচ্ছেদে এবং তারিখে আরও অনেক কথা বলেছেন তিনি। সেগুলির অন্যতম এসএসসি অযোগ্যদের তালিকা দেওয়ার কথা।’’ মতিউরের দাবি, বারবার আদালত বলা সত্ত্বেও কমিশন যোগ্য অযোগ্যদের তালিকা দিতে পারেনি। একই সুরে বীরভূমে এবিটিএ-র জেলা সম্পাদক আশিস বিশ্বাসের দাবি, ‘‘বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আইনজীবী হিসেবে তাঁর মত দিয়েছেন। আসলে কমিশন কারা যোগ্য সেটা বলতে চায়নি বা বলতে পারেনি। আমরা জানি জানি যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন তাঁদের একাংশ অবশ্যই যোগ্য তাঁদের পাশে থাকতেই হবে।’’ এ দিনই বীরভূমে কর্মিসভায় এসে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবশ্য দাবি করেন, এসএসসি কারা অযোগ্য সেটা তিন বার আদালতে জমা করেছে।

বাম-তৃণমূল দু’পক্ষকেই আক্রমণে নেমেছে বিজেপি। বিজেপির শিক্ষক সেলের আহ্বায়ক মোহন সিংহের দাবি, ‘‘বামেদের এই আন্দোলন আসলে ভোটের মুখে চাকরিহারা পরিবারগুলির সমর্থন জোটানোর চেষ্টা ও দু’মুখো নীতির পরিচয়।’’ সেই সঙ্গেই তৃণমূলকে বিঁধে তাঁর মন্তব্য, ‘‘মূল দায়ী রাজ্য সরকার এবং এসএসসি।’’

আদালতের রায়েই ব্যতিক্রম হিসেবে ক্যানসার আক্রান্ত সোমা দাসের চাকরি বহাল থাকবে বলে জানানো হয়েছে। সেই সোমা বলছেন, ‘‘আমরা আসলে শাসক বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের ঘুঁটি। সমস্যার সমাধান হয়নি। তবে কমিশন অযোগ্যদের যদি বাঁচাতে না চাইত তাহলে গোটা প্যানেল বাতিল করতে হত না।’’ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের (ওয়েটিং লিস্টে থাকা) হয়ে আন্দোলনে থাকা বীরভূমের আমিত লেটের আক্ষেপ, ‘‘বিকাশরঞ্জন আমাদের আইনজীবী ছিলেন। আমরা চাইনি গোটা প্যানেল বাতিল হোক। তাতে যোগ্য হয়েও আমাদের আশা ক্ষীণ হয়ে গেল।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE