(বাঁ দিকে) মহুয়া মৈত্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
তিনি খাতায়-কলমে এখন আর জনপ্রতিনিধি নন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সেই তিনি, লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র রইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারি পরিষেবা প্রদান কর্মসূচির মঞ্চে। যে মঞ্চ থেকেই মমতা আরও এক বার স্পষ্ট বলে দিলেন, ‘‘তোমরা মহুয়াকে তাড়িয়ে দিতে পারো। কিন্তু মানুষের ভোটে মহুয়া আবার জিতবে।’’ অর্থাৎ, আবার কৃষ্ণনগরের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিলেন তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী।
বৃহস্পতিবার নদিয়ার শান্তিপুরে মু্খ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি ছিল। সেখানেই মমতা বলেন, ‘‘মহুয়াকে ওরা তাড়িয়েছে! কেন? কারণ, মহুয়া মানুষের কথা বলেছিল।’’ এর আগে গত নভেম্বরে মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা। যে দিন মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়া হল, সেই ৮ ডিসেম্বর কার্শিয়ং থেকেও বিজেপির কড়া সমালোচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন, ‘‘দল মহুয়ার পাশে আছে। এই ঘটনা থেকে বিজেপির প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি আরও এক বার প্রমাণিত হল। মহুয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে কিছু বলার সুযোগই দেওয়া হল না। আমি এর তীব্র বিরোধিতা করছি।’’ সেই দিনই তিনি প্রথম পরোক্ষে হলেও জানিয়ে দেন, মহুয়াই কৃষ্ণনগরে তৃণমূলের টিকিট পাবেন। বৃহস্পতিবার তাতে আরও এক বার নেত্রীর ‘সিলমোহর’ পড়ল।
গত ১৫ অক্টোবর তৃণমূল সাংসদ মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘ঘুষ ও উপহারের বিনিময়ে প্রশ্ন’ করার অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ করেছিলেন বিজেপির সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এবং মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে ‘ঘুষ’ নিয়ে সংসদে আদানি শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন। সেই প্রশ্নে মহুয়া আদানির সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও। মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’ অভিযোগের ভিত্তিতে লোকসভার এথিক্স কমিটি তদন্ত করে। তার পরে কমিটি স্পিকারের কাছে সুপারিশ পাঠিয়ে বলে, মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ করা হোক। তার ভিত্তিতেই মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ হয়। তার পরে তাঁকে নয়াদিল্লির সরকারি বাংলো ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। তাঁকে ওই বাংলো থেকে ‘উচ্ছেদ’ করার আগেই অবশ্য মহুয়া বাংলো হস্তান্তর করে দিয়েছেন।
তবে গোড়ার দিকে মহুয়ার পাশে তৃণমূল দলগত ভাবে দাঁড়িয়েছিল, এমন নয়। সেই সময়ে সব নেতাই বলতেন, মহুয়ার লড়াই তাঁর ব্যক্তিগত। তাঁকেই সেই লড়াই লড়তে হবে। মহুয়া অবশ্য প্রথম থেকেই চোয়াল শক্ত করে তাঁর লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন। তৃণমূল যখন মহুয়ার পাশে সরাসরি দাঁড়ায়নি, তখন ঘটনাচক্রে অধীর চৌধুরী, সীতারাম ইয়েচুরি, মহম্মদ সেলিমেরা তাঁকে সমর্থন দিয়েছিলেন। শেষমেশ নভেম্বরে মমতা সরাসরি মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়ে নেতাজি ইনডোরে দলীয় কর্মসূচিতে মুখ খোলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy