E-Paper

ভোট-খরচের হিসাব রক্ষায় জোর নবান্নের

প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় যে বিপুল কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছিল, তাদের খরচ বাবদ কেন্দ্রের থেকে অর্থ দাবি করেছিল রাজ্য।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:২৮
nabanna

নবান্ন। — ফাইল চিত্র।

লোকসভা ভোটের খরচের নিখুঁত হিসাব রাখার উপর এ বার বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে বলে খবর। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, খরচের (বিশেষ করে কেন্দ্রীয় বাহিনী বাবদ) প্রতিটি বিল-ভাউচার যত্ন করে রাখার নির্দেশ জেলা প্রশাসনগুলিকে ইতিমধ্যেই দিয়েছে নবান্ন। আধিকারিকদের একাংশের জল্পনা, বিভিন্ন খাতের খরচ নিয়ে কেন্দ্র যে ভাবে নজরদারি চালাচ্ছে, তাতে রাজ্যের এই অবস্থানকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে অভিজ্ঞ কর্তাদের অনেকের যুক্তি, ভোট-ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত খরচ হলে তা কেন্দ্রের থেকে চাওয়ার পথ প্রশস্ত রাখতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহল। তবে এ নিয়ে সরকারি ভাবে মুখ খুলতে চাননি সংশ্লিষ্ট কেউ। অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, হিসাব নিয়ে এই কড়াকড়ির ইঙ্গিত গত বছর পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে মিলেছিল।

প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় যে বিপুল কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছিল, তাদের খরচ বাবদ কেন্দ্রের থেকে অর্থ দাবি করেছিল রাজ্য। কিন্তু রাজ্যের সেই হিসাব অডিটের মাধ্যমে খতিয়ে দেখার বার্তা পাঠায় কেন্দ্র। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত জেলায় জেলায় ওই বাবদ বহু টাকা বকেয়া আছে। আগামী লোকসভা ভোটে এ রাজ্যে দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যায় ৯২০ কোম্পানি (পরে সংখ্যা বাড়তেও পারে) কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ফলে তাদের জন্য খরচ হওয়া অর্থের পূর্ণ হিসাব নথি-সহ রাখতে বলা হয়েছে জেলা কর্তাদের।

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের ব্যাখ্যা, বিভিন্ন বরাদ্দের খরচ কড়া নজরদারিতে রেখেছে কেন্দ্র। খরচের পদ্ধতি বা তাতে গরমিলের অভিযোগে একাধিক প্রকল্পে বরাদ্দ বন্ধও রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। যা কেন্দ্র-রাজ্যের রাজনৈতিক টানাপড়েন বাড়িয়েছে। এই অবস্থায় ভোটের খরচের পূর্ণ হিসাব রাখার অবস্থানকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারের এক কর্তার কথায়, “ছোট মাপের কোনও লোকসভা কেন্দ্রে খরচ হতে পারে ৭-৯ কোটি টাকা। বড় জেলার ক্ষেত্রে তা ১৮-২০ কোটি টাকা। গাড়ি ভাড়া, তেল, ভোটকর্মীদের পারিশ্রমিক-খাওয়া খরচ, পরিকাঠামো তৈরি, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবস্থাপনা ও জওয়ানদের ভাতা ইত্যাদি দিতেই বিপুল খরচ হয়। কখনও খরচের যৌক্তিকতা খতিয়ে দেখেনি কেন্দ্র। পঞ্চায়েত ভোটের পরে খরচের অডিট-বার্তায় বাড়তি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহল।”

অভিজ্ঞ এবং প্রাক্তন আমলাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, লোকসভা ভোটে খরচের পুরোই দেয় কেন্দ্র। বিধানসভার ক্ষেত্রে খরচ ৫০% করে ভাগ হয়ে যায় রাজ্য-কেন্দ্রের মধ্যে। ভোটে যাওয়ার আগে বিধানসভা বা লোকসভা কেন্দ্র ধরে ধরে খরচের একটা হিসাব কষে ফেলে অর্থ মন্ত্রক এবং কমিশন। তার ভিত্তিতে প্রতিটি রাজ্যকে অর্থ বরাদ্দ করে দেওয়াই রীতি। সেই বরাদ্দের অতিরিক্ত কিছু খরচ হলে তা কেন্দ্রের কাছে
চাওয়া যেতে পারে। তখন রাজ্যগুলিকে সেই অঙ্ক ফিরিয়ে দেয় আইন মন্ত্রক। রাজ্যের প্রাক্তন এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, “রিইমবার্সমেন্ট বা অতিরিক্ত খরচের টাকা ফেরত চাওয়া যায়। কিন্তু তার জন্য যথাযথ নথি থাকা প্রয়োজন। সেটাই প্রস্তুত রাখতে বলা হচ্ছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Nabanna TMC Mamata Banerjee

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy