পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের আটটি আসনে আজ ছিল ভোট। আর আজ সকালেই পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কোলঘেঁষা আমরোহা নির্বাচনী ক্ষেত্রে বক্তৃতাক্রমে জাঠ নেতা চৌধরি চরণ সিংহের প্রশস্তি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের প্রচার শুক্রবার শেষ হয়ে গেলেও আজ কুশলী চালে মোদী অভিযোগ করেন, ওই অঞ্চলে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলের সরকার কৃষক, তফসিলি জাতি ও জনজাতি, ওবিসি-র আশা-আকাঙ্ক্ষাকে নির্মূল করেছে। রাহুল গান্ধী এবং অখিলেশ সিংহ যাদবের জুটিকে ব্যঙ্গ করে তিনি বলেছেন, দু’জন শাহজাদার জুড়িকে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমরোহায় ভোট দ্বিতীয় দফায় অর্থাৎ ২৬ এপ্রিল।
আমরোহার বিজেপি প্রার্থী কানওয়ার সিংহ তানওয়ারের সমর্থনে করা জনসভায় মোদীর বক্তব্য, "এর আগের সরকারগুলি তফসিলি জাতি, জনজাতি এবং ওবিসি-কে সামাজিক ন্যায়ের নাম করে ঠকিয়েছে। মোদী দিনরাত এক করে পরিশ্রম করে চলেছে জ্যোতিবা ফুলে, অম্বেডকর এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধরি চরণ সিংহের সামাজিক ন্যায়ের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে।"
এ দিন কংগ্রেস এবং অখিলেশের ভোটব্যাঙ্ককে (সংখ্যালঘু) বারবার ব্যঙ্গ করলেও রাজ্যের মুসলমান ভোটের কিয়দংশ পাওয়ার চেষ্টাও ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী। প্রশংসা করেছেন ভারতীয় দলের পেসার মহম্মদ শামির, যিনি আমরোহার ভূমিপুত্র। গত বছর বিশ্বকাপে তাঁর প্রয়াসকে মনে করিয়ে মোদী বলেছেন, গোটা বিশ্ব দেখেছে ক্রিকেট বিশ্বকাপে মহম্মদ শামির কী অসামান্য ভূমিকা ছিল। কেন্দ্রীয় সরকার শামিকে অর্জুন পুরস্কার দিয়েছে, খেলাধুলোয় দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য। প্রসঙ্গ, বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের পরাজয়ের পর ড্রেসিংরুমে গিয়ে শামিকে বুকে জড়িয়ে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী
তিন দিন আগেই রাহুল এবং অখিলেশ গাজিয়াবাদে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করে মোদীকে নিশানা করেছিলেন। আজ 'দুই শাহজাদার জুড়ি'কে ফ্লপ বলে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "যত বারই এঁরা উত্তরপ্রদেশের মানুষের কাছে ভোট চাইতে যান, সঙ্গে নিয়ে যান পরিবারবাদ, দুর্নীতি এবং তোষণের ঝুলি। আমাদের বিশ্বাসকে আক্রমণ করার সামান্য সুযোগও তাঁরা ছাড়েন না। ভারত মাতা কি জয় বলতেও এখানকার প্রার্থীর স্বর আটকে যায়। যাঁর ভারত মাতা কি জয় বলতে সমস্যা, তাঁকে সংসদে মানায় না।"
পাশাপাশি হিন্দু আবেগ জাগিয়ে তুলতে মোদী আজ বলেছেন, "রামমন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দিয়েছে এসপি এবং কংগ্রেস। রামমন্দির এবং সনাতন ধর্মকেও অপমান করেছে। নিজেদের ভোটব্যাঙ্ককে খুশি করতে এসপি রামভক্তদের ভণ্ড বলেছে। এই ইন্ডিয়া ব্লক সনাতন ধর্মকে ঘৃণা করে।"
আজ মোদী বলেছেন, "যখন গুজরাতের দ্বারকায় যাই, কংগ্রেসের যুবরাজ বলেছিলেন, জলের তলায় নাকি প্রার্থনা করার মতো কিছুই নেই! নিজেদের ভোটব্যাঙ্কের জন্য ওরা আমাদের বিশ্বাসে আঘাত করছে।" বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব এবং অখিলেশকে যৌথ আক্রমণ করে মোদীর বক্তব্য, "বিহারে কেউ নিজেদের যদুবংশী বলছেন। উত্তরপ্রদেশের নেতারা সুবিধা নিচ্ছেন যদুবংশী বলে। তাঁদের কাছে জানতে চাই, কী করে তাঁরা সেই দলে রয়েছেন, যারা ভগবান কৃষ্ণকে অপমান করে?"
আবারও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি পশ্চিম উত্তরপ্রদেশকে পুড়িয়ে দিয়েছে সাম্প্রদায়িক অশান্তির আগুনে। উত্তরপ্রদেশের মানুষ কিছুতেই ভুলতে পারবেন না সেই গুন্ডারাজের কথা। যোগী আদিত্যনাথ এই সব অপরাধীদের তাড়িয়ে ছেড়েছেন।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)