দিল্লিতে কংগ্রেসের সাংবাদিক বৈঠক। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।
কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ছিনতাই করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুললেন সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী এবং দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। এ বিষয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসারও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে সনিয়া বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে পরিকল্পিত ভাবে এমন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এই ঘটনা শুধু কংগ্রেসের উপর নয়, দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপরেও জঘন্য আঘাত।’’ রাহুল বলেন, ‘‘দেশে আজ গণতন্ত্র নেই। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ আদতে মোদী-শাহের অপরাধমূলক গতিবিধি।’’
অন্য দিকে, বিচার বিভাগ, আয়কর দফতর-সহ সাংবিধানিক সংস্থাগুলির কাছে খড়্গের আবেদন— ‘‘সত্যই যদি দেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন চান, তা হলে আমাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করার অনুমতি দিন।’’ ২০১৮-১৯ মূল্যায়ন বর্ষের আয়কর সংক্রান্ত অনিয়মের জন্য ১০৫ কোটি টাকা জরিমানার বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় হস্তক্ষেপ চেয়ে কংগ্রেসের তরফে আর্জি জানানো হয়েছিল দিল্লি হাই কোর্টে। কিন্তু বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বেঞ্চ সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে বলে, ‘‘এ ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপের কোনও উপযুক্ত কারণ দেখছে না আদালত।’’
অভিযোগ এর পরে আয়কর দফতর পদক্ষেপ শুরু করেছে। কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অ্যাকাউন্টে লেনদেন। এ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার সনিয়া বলেন, ‘‘কংগ্রেসকে আর্থিক ভাবে পঙ্গু করার চেষ্টা চালাচ্ছেন মোদী।’’ তবে লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এই পরিকল্পিত পদক্ষেপ সত্ত্বেও তাঁরা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই থেকে সরে আসবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, আয়কর দফতর সূত্রের খবর ২০১৮-১৯ মূল্যায়ন বর্ষের আয়কর সংক্রান্ত অনিয়মের জন্য ১০৫ কোটি টাকা জরিমানা এবং ৩০ কোটির সুদ অর্থাৎ মোট ১৩৫ কোটি কংগ্রেসের কাছে তাদের প্রাপ্য। রাহুলের দলের পাল্টা দাবি, যুব কংগ্রেস-সহ শাখা সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে আয়কর রিটার্ন সংক্রান্ত অতি সামান্য অনিয়মের অভিযোগে (নগদ ১৪.৪০ লাখ টাকা ওই অ্যাকাউন্টে জমা পড়া এবং রিটার্ন জমা দিতে ৪৫ দিন দেরি হওয়ার অভিযোগ) জরিমানা ধার্য করেছিল আয়কর দফতর। যা স্পষ্টতই ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’।
কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির বিরুদ্ধে আয়কর বিভাগের পদক্ষেপের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে যে আবেদন জানানো হয়েছিল, গত ৮ মার্চ আপিল ট্রাইবুনাল তা খারিজ করে দেয়। কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, তার পরেই আয়কর দফতর নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে তাদের ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি থেকে জরিমানা হিসাবে ১০৫ কোটি টাকা কেটেছে। এর পরে দিল্লি হাই কোর্ট স্থগিতাদেশের আর্জি খারিজ করার পরে ওই অ্যাকাউন্টগুলিতে লেনদেন কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
কংগ্রেসের অভিযোগ, ২০২৩ সালের মার্চের শেষে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ছিল ১৬২ কোটি টাকা। পাশাপাশি বিজেপির অ্যাকাউন্টে ছিল ৫,৪২৫ কোটি টাকা। কিন্তু বিজেপির থেকে কোনও আয়কর কাটা হয়নি। প্রসঙ্গত, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে এআইসিসির কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেন প্রথম অভিযোগ করেছিলেন, যুব কংগ্রেস-সহ শাখা সংগঠনগুলির কাছে আয়কর রিটার্ন সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগে ২১০ কোটি টাকা জরিমানার দাবি জানানো হয়েছিল সংশ্লিষ্ট দফতরের তরফে। তখন বিষয়টি আয়কর ‘অ্যাপিলেট ট্রাইবুনাল’-এর বিচারাধীন ছিল। কিন্তু তার মধ্যেই বেআইনি ভাবে পদক্ষেপ করে আয়কর দফতর দলের চারটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ় করে দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy