রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
হাতে এক মুঠো ফুল। বাড়ির উঠোন থেকে নিয়ে আসা। স্বেচ্ছাসেবকদের শত অনুরোধেও জিয়াগঞ্জের রাস্তা থেকে নেমে দাঁড়াতে নারাজ রুবিনা। হুডখোলা লাল জিপ সেই রাস্তায় আসতেই পাশে পাশে দৌড় লাগালেন মধ্য তিরিশের গৃহবধূ। সাদা টি-শার্ট শোভিত ন্যায়যাত্রী গাড়ি থেকে হাত বাড়িয়ে সেই ফুল নিলেন, তবে শান্তি!
ওই ভাবে দৌড়নোর ক্ষমতা এখন আর নেই মনোজ চক্রবর্তীর। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে দলের কর্মী-সমর্থকেরা কিছুটা পথ করে দিলেন বহরমপুরের প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ককে। জেলা কংগ্রেস দফতরের সামনে থেকে কনভয় ছেড়ে যাওয়ার পরে কিছুটা পথ এগিয়ে দাঁড়িয়ে সংবর্ধনার উত্তরীয় প্রাক্তন বিধায়ক তুলে দিলেন প্রাপকের হাতে।
এই দু’টি কেবলই খণ্ডচিত্র। মুর্শিদাবাদের পথে পথে বৃহস্পতিবার দিনভর দৃশ্যতই জনজোয়ারে ভাসল রাহুলের ‘ন্যায় যাত্রা’! মালদহ থেকে ফরাক্কা দিয়ে ঢুকে জঙ্গিপুরে বিরতি, তার পরে লালগোলা, ভগবানগোলা, জিয়াগঞ্জ, লালবাগ হয়ে বহরমপুর— যাত্রাপথ জুড়ে শুধু মানুষ আর ফুল।
নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় তিন ঘণ্টা পরে যাত্রা বহরমপুর পৌঁছল। ভিড়ের চাপে মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে রাহুলের নামা হল না। শহরে জনতার উদ্দেশে দু’চার কথা বলার পরিকল্পনা থাকলেও তা হয়নি। প্রায় গোটা পথ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে পাশে নিয়ে হুডখোলা গাড়িতে গেলেন রাহুল।
বিড়ি শ্রমিকদের মহল্লায় ঢুকে কথা বলেছেন, পথের ধারে উৎসুক জনতার সঙ্গে হাত মেলান। জঙ্গিপুরের পিয়ারাপুরে আলাদা বৈঠক করেছেন মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী-সহ সিপিএম নেতৃত্বের সঙ্গেও। রাহুলের মন্তব্য, ‘‘লক্ষ লক্ষ মানুষ এই যাত্রায় শামিল হচ্ছেন। ভালবাসা, সৌহার্দ্য ও পরস্পরের প্রতি সম্মান— এটাই এঁরা দেখাচ্ছেন। এই ভাবনা নিয়েই দেশ ও সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।’’ এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, মুর্শিদাবাদের অভিজ্ঞতা বাড়তি শক্তি জোগাবে।
গত লোকসভা ভোটের আগে মালদহের চাঁচলে রাহুলের সভার ভিড়ের ছবি জাতীয় ইস্তাহারের প্রচ্ছদে এনেছিল এআইসিসি। তার পরে ভোটে কংগ্রেস সুবিধা করতে পারেনি। এখন মুর্শিদাবাদে কংগ্রেসের কোনও বিধায়ক নেই, খাস বহরমপুর বিজেপির দখলে। পঞ্চায়েতে প্রায় সবই তৃণমূল কংগ্রেসের। নেতা-নেত্রীদের হেলিকপ্টার দেখার যে ভিড় থাকে, রাহুলের এ বারের যাত্রায় সেই সুযোগও নেই। তবু এই ভিড় আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের মনোবল বাড়াবে। বাজেট অধিবেশনের সময়ে সংসদে না থেকে রাহুল-সঙ্গী হয়ে ঘুরে কিছুটা স্বস্তি পেতেই পারেন অধীর!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy