Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Nirmala Sitharaman

গান্ধী পরিবার নিয়েই কথা শ্বেতপত্রের চর্চায়

শ্বেতপত্রে মনমোহন সরকারের জারি করা অধ্যাদেশ রাহুল গান্ধীর ছিঁড়ে ফেলার প্রসঙ্গ তুলে বলা হয়েছে, নেতৃত্বের সঙ্কটে ভুগছিল ইউপিএ সরকার।

Nirmala Sitharaman

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৫১
Share: Save:

ছিল অর্থনীতির শ্বেতপত্র। হয়ে গেল গান্ধী পরিবারের চার্জশিটের খতিয়ান!

ইউপি আমল বনাম মোদী সরকারের সময়ের অর্থনীতির তুলনা করে গত কালই সংসদে হোয়াইট পেপার বা শ্বেতপত্র পেশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ইউপিএ জমানার বিপর্যস্ত অর্থনীতির মোড় ঘুরিয়ে কী ভাবে মোদী সরকার গত দশ বছরে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে, তাই ছিল ওই শ্বেতপত্রের মূল বিষয়। কিন্তু গোটা দিন ধরে লোকসভার আলোচনায় শাসক শিবিরের আক্রমণের সুর ও শেষে নির্মলা সীতারামনের জবাবি বক্তব্য বিশ্লেষণ করে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মত হল, গোটা আলোচনায় অর্থনীতি ছিল কম, বরং গান্ধী পরিবারের উদ্দেশে আক্রমণ ছিল অনেক বেশি। বক্তব্যের ছত্রে ছত্রে গান্ধী পরিবারকে উদ্দেশ করে আক্রমণ শানাতে দেখা গিয়েছে নির্মলাকে। পিছিয়ে ছিলেন না বিতর্কে অংশ নেওয়া অন্য বিজেপি সাংসদেরাও। যা দেখে অনেকেই বলছেন, অন্তর্বর্তী বাজেটে যেমন অর্থনীতির চেয়ে লোকসভায় জিতে আসার কথা বেশি ছিল, এ ক্ষেত্রেও শ্বেতপত্রে অর্থনীতির চেয়ে প্রাধান্য পেয়েছে গান্ধী পরিবারকে আক্রমণের বিষয়টি। পাল্টা আক্রমণে কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম বলেন, এই শ্বেতপত্র হল আগের সরকারের বদনাম করা। পাশাপাশি বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারার ব্যর্থতাকে এড়িয়ে কৌশল।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

শ্বেতপত্রে মনমোহন সরকারের জারি করা অধ্যাদেশ রাহুল গান্ধীর ছিঁড়ে ফেলার প্রসঙ্গ তুলে বলা হয়েছে, নেতৃত্বের সঙ্কটে ভুগছিল ইউপিএ সরকার। যা সরকারের নীতিপঙ্গুত্বের জন্য দায়ী। আজ নিজের বক্তব্যে ইউপিএ জমানায় সনিয়া গান্ধী কার্যত ‘সুপার প্রধানমন্ত্রী’ হিসাবে সক্রিয় ছিলেন বলে অভিযোগে সরব হন নির্মলা। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কোন যুক্তিতে ওই বিশেষ ক্ষমতা ভোগ করতেন সনিয়া? সংসদীয় স্থায়ী কমিটির পরিবর্তে তাঁর বাড়িতে মন্ত্রিসভার বিল যেত।’’ নির্মলার অভিযোগ, ইউপিএ জমানায় অন্তত ৭১০টি ফাইল সনিয়ার বাড়িতে গিয়েছিল আলোচনার জন্য। কেন গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর মতে এ ধরনের বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রবণতা দুর্নীতির জন্ম দেয়। নির্মলার কথায়, ‘‘কংগ্রেসের মূল মন্ত্র ছিল— প্রথম (গান্ধী) পরিবার প্রথমে। এ ধরনের শর্ত থাকলে স্বচ্ছতা বিঘ্নিত হবেই। আর তাই হয়েছে। ফলাফল সামনে। ইউপিএ আমলে টুজি, কমনওয়েলথ, অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড দুর্নীতির বিষয়গুলি সামনে আসে। সেখানে মোদী সরকারের অগ্রাধিকার হল দেশ সর্বপ্রথম।’’ এ দিন নিজের বক্তব্যে ইউপিএ আমলে হওয়া কয়লা খনি বণ্টন দুর্নীতি নিয়ে সরব হন নির্মলা। তিনি বলেন, ‘‘পরিবারের আত্মীয়, বন্ধু, গুটখা সংস্থাকে কয়লা খনি বণ্টন করা হয়েছিল। যা পরে বাতিল করা হয়। যে কারণে রাজ্যগুলিকে বঞ্চিত হতে হয়েছে রাজস্ব লাভ থেকে।

আজকের আলোচনায় আরএসপি নেতা এন কে প্রেমচন্দ্রন দাবি করেন, পূর্ববর্তী সরকারের বিরুদ্ধে এ ধরনের শ্বেতপত্র আনতে পারে না বর্তমান সরকার। নির্মলা পাল্টা বলেন, ‘‘সনিয়া গান্ধী সুপার প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। তাঁর নেতৃত্বাধীন জাতীয় উপদেষ্টা কমিটি সরকারের কোনও অংশ না হয়েও সরকারের জন্য বিলের খসড়া করে দিতে পারে। আর দু’বার নির্বাচিত হওয়া মোদী সরকার একটি শ্বেতপত্র আনতে পারে না?’’ প্রেমচন্দ্রনের শ্বেতপত্র প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্বের পাশে দাঁড়ানো নিয়ে কটাক্ষ করে বিজেপি সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘তা হলে পরমাণু চুক্তির সময়ে ইউপিএ ছাড়তে গেলেন কেন?’’ পাশাপাশি ইউপিএ আমলে রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার থাকার সুযোগ নিয়ে কী ভাবে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার স্বামী রবার্ট বঢরা বিকানেরের বিস্তীর্ণ এলাকায় বেআইনি ভাবে জমি অধিগ্রহণ করেছিলেন, তা নিয়ে সরব হন রবিশঙ্কর। তিনি বলেন, ‘‘রাহুলের উচিত একবার সেখানে যাওয়া। তা হলে বুঝবেন স্থানীয়েরা কী ভাবে তাঁর পরিবারের কারণে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন!’’

অন্য দিকে এই শ্বেতপত্র আসলে ‘নির্জলা মিথ্যা’ বলে সরব হয়েছেন পি চিদম্বরম। তিনি বলেন, ‘‘এটি অর্থনৈতিক রিপোর্ট নয়। বরং অনেক বেশি রাজনৈতিক খতিয়ান। নিজেদের সরকারের ব্যর্থতাকে ঢাকতেই ওই রিপোর্ট আনা হয়েছে।’’ চিদম্বরমের যুক্তি, ‘‘কোনও নিরপেক্ষ রিপোর্টই হঠাৎ করে ২০০৪ সাল থেকে শুরু হয়ে ২০১৪ সালে শেষ হতে পারে না। যদি রিপোর্ট বানাতেই হত, তা হলে তা ২০০৪ সালের আগে থেকে শুরু হত এবং অর্থনীতির প্রভাব বুঝতে ২০১৪ সালের পরের কিছু বছরকেও ধরা উচিত ছিল।’’ এই সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ফি বছর দু’কোটি চাকরি, একশো দিনের মধ্যে কালো টাকা ফিরিয়ে আনা, কালো টাকা ফিরিয়ে এনে দেশবাসীর প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা পাঠানো, পেট্রল-ডিজেলের দাম ৩৫ টাকা কিংবা কৃষকের আয় দ্বিগুণ করার মতো প্রতিশ্রুতিগুলি রক্ষার ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার কী করেছে, তা পাল্টা প্রশ্নে জানতে চেয়েছেন চিদম্বরম।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE