জনগণের সঙ্গে শতাব্দী রায়। —ফাইল চিত্র।
বিজেপি ইতিমধ্যেই বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে। প্রচার শুরু করে দিয়েছেন প্রার্থী পিয়া দাস। তবে, তৃণমূল কংগ্রেস এখনও কোনও আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করেনি। এ বার পরীক্ষা-নিরীক্ষা পথে হাঁটবে দল, নাকি বীরভূম কেন্দ্রে টানা চতুর্থবারের জন্য শতাব্দী রায় এবং বোলপুর কেন্দ্রে দ্বিতীয় বারের জন্য অসিত মালকেই প্রার্থী করা হবে— এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে জেলা তৃণমূলের অন্দরে।
প্রথম দফায় ১০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি। তাতে বোলপুরের নাম থাকলেও বীরভূমের ছিল না। বিজেপি সূত্রের খবর, বীরভূমের প্রার্থীর নাম ঘোষিত হবে কয়েক দিনেই। কিন্তু, তৃণমূলের কে কোথায় প্রার্থী হবেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছেই। জেলার শীর্ষ
নেতাদের একাংশ জানান, বীরভূমের দুই আসনে পরিবর্তন হওয়ার কোনও লক্ষণ এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না।
তাঁদের মতে, অনুব্রত মণ্ডল থাকা আর না-থাকার মধ্যে অনেকটাই ফারাক রয়েছে। কোর কমিটি থাকলেও এই মুহূর্তে অনুব্রতের মতো ওজনদার নেতা এখন আর কেউ নেই জেলায়। ফলে, যাঁদের ওই কেন্দ্রগুলি থেকে জেতার অভিজ্ঞতা রয়েছে, জনভিত্তি রয়েছে, তাঁদের উপরেই হয়তো দল আস্থা রাখবে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতাদের একাংশ।
দল সূত্রে খবর, এ বারেও প্রার্থিপদ নিয়ে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় আত্মবিশ্বাসী শতাব্দী রায় ও অসিত মাল, উভয়েই। টানা তিন বার বীরভূম কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন শতাব্দী। গত ১৫ বছর আগে বীরভূমের ‘লাল দুর্গে’ ‘বহিরাগত প্রার্থী’ হিসাবে ঘাসফুল ফুটিয়ে যিনি সকলকে চমকে দিয়েছিলেন। প্রতিবার নিজের ব্যবধান বাড়িয়ে গিয়েছেন শতাব্দী। গত লোকসভা ভোটেও বীরভূম আসনে ‘তারকা প্রার্থী’ শতাব্দীর উপরেই ভরসা রেখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি প্রার্থী দুধকুমার মণ্ডলকে প্রায় ৮৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হন শতাব্দী।
এ বারের প্রেক্ষিত ভিন্ন। গত কয়েক মাস ধরে জেলা তৃণমূলের নেতারা বহুবার সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে প্রকাশ্য সভায় শতাব্দীকে তুলে ধরেছেন। অনুব্রতহীন বীরভূমে শতাব্দীও নিজের তারকা ভাবমূর্তি দূরে সরিয়ে শহরে ও গ্রামে গিয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বসছেন। জনসংযোগ সারছেন। সংগঠনে খামতি দেখলে কড়া অবস্থান নিচ্ছেন। তা নিয়ে দলের কর্মীদের একাংশ শতাব্দীর উপরে ক্ষুব্ধ ছিলেন বলেও জানা যাচ্ছে। তৃণমূল সূত্রের খবর,
শহর ও ব্লকের নেতাদের একাংশ উপরতলায় আর্জি জানিয়েছিলেন, বীরভূমে এ বার প্রার্থী বদল হলে ভাল। যদিও তা মান্যতা পেয়েছে, এমন খবর নেই।
বরং শতাব্দী রায় অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। নিয়মিত জেলায় সাংগঠনিক সভা ও বৈঠক করছেন। শতাব্দী নিজে বলছেন, ‘‘দিদির কথাই শেষ কথা। তা ছাড়া ভাল পড়ুয়ারা সারা বছর পড়াশোনা করে, কেবল পরীক্ষার সময় নয়।
আমি সেই তালিকায়। এমন নয় যে শুধু ভোটের সময় বীরভূমে আসি। সারা বছর কাজ করি। সেটাই এখনও করছি।’’
অন্য দিকে, বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রেও প্রার্থী হিসেবে বর্তমান সাংসদ অসিত মালের নাম চর্চায় রয়েছে সবচেয়ে বেশি। কারণ
গতবার বিজেপি প্রার্থী রামপ্রসাদ দাসকে ১ লক্ষেরও বেশি ভোটে হারিয়েছিলেন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া অসিত। তবে ওই কেন্দ্রে প্রার্থী করার একটা চেষ্টা চলছে আরও দু’জনকে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। তাঁদের এক জন বর্তমান বিধায়ক, অন্য জন প্রাক্তন বিধায়ক। তবে দলের
একাংশই মানছেন, ভাবমূর্তি এবং দলের প্রতি আনুগত্যের নিরিখে অসিত এগিয়ে। কোর কমিটির এক নেতা বলেন, ‘‘গতবারে জেতা প্রার্থীর উপরেই আস্থা রাখতে পারে দল।
তবে, সিদ্ধান্ত দলের।’’ অসিত
নিজে কিছু বলতে চাননি প্রার্থিপদ নিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy