E-Paper

বিরোধী নয়, দিনভর সুদীপের চোখ দলেই

বাড়ির গায়েই শনিবার সকালে সস্ত্রীক ভোট দিয়ে কেন্দ্র জুড়ে পরিস্থিতি দেখতে বেরিয়ে ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘণ্টা তিন- চার ভোট হওয়ার পরেই আচমকাই চলে আসেন বেলেঘাটায়।

রবিশঙ্কর দত্ত

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৪ ০৮:৪৫
বেলেঘাটায় তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সঙ্গে কুণাল ঘোষ।

বেলেঘাটায় তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সঙ্গে কুণাল ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।

দুপুর পর্যন্ত বেলেঘাটা শান্ত। ফুলবাগান, সিআইটি মোড়, জোড়ামন্দির, খাল ধারে সামান্য ছোটাছুটিও হয়নি সকাল থেকে। কাশীপুর, বেলগাছিয়াও ঠান্ডা।

এই পরিবেশে মধ্য কলকাতায় কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিক ভোটের দিন খানিক বিস্মিতই। আর বেলা ১২টা পর্যন্ত এ সবেই উত্তর কলকাতা কেন্দ্রের ভোট-পরিণতির আভাস খুঁজছে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সঙ্গে এই কেন্দ্রে বিকেল পর্যন্ত ভোট একটু কম পড়া নিয়ে সম্ভাবনার অঙ্ক কষছেন দলের নেতারা।

বাড়ির গায়েই শনিবার সকালে সস্ত্রীক ভোট দিয়ে কেন্দ্র জুড়ে পরিস্থিতি দেখতে বেরিয়ে ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘণ্টা তিন- চার ভোট হওয়ার পরেই আচমকাই চলে আসেন বেলেঘাটায়। সেখানে একটি দলীয় কার্যালয়ে চলে যাওয়ার কার্য-কারণও কি সেই অঙ্কেরই উপাদান? গোটা ভোট-পর্বে অভ্যন্তরীণ টানাপড়েন পেরিয়ে এলেও সুদীপ অবশ্য এ সব চর্চা উড়িয়ে দিয়েছিলেন সাতসকালেই। পাঁচ বারের সাংসদ বলেন, ‘‘আমি প্রত্যেক বারই আগের ব্যবধানের থেকে বেশি ভোটে জিতেছি। এ বারও তা-ই হবে!’’

সাম্প্রতিক অতীতের ভোটের হিসেবে উত্তর কলকাতা তৃণমূলের নিশ্চিত আসন। কিন্তু সেই আসন নিয়ে এ বার গোড়া থেকেই তৃণমূলের ভিতরে ও বাইরে যে সব রাজনৈতিক ঘটনা ঘটেছে, তাতেই এখানকার ভোট আলাদা করে চর্চায় এসেছে। দল ছেড়ে যাওয়া তাপস রায় বিজেপির প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের ভিতরে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। ভোটের দিন সকাল থেকে অন্য সব কিছুর মতো সেই আলোড়নের গতিপ্রকৃতির দিকে আগাগোড়া নজর রেখে চলতে হল তৃণমূলের প্রার্থী সুদীপকে।

উত্তর কলকাতার যে সব অঞ্চলে ভোটের দিন উত্তেজনা কার্যত নিয়ম হয়ে গিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম বেলাোঘাটার তিন-চারটি ওয়ার্ড। তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ রাজু নস্করের বিরুদ্ধে গাজোয়ারি, ছাপ্পার অভিযোগ করে বিরোধীরা। বেলেঘাটা মেন রোডের ধারে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে রাজুর অফিসেই এ দিন দুপুরে হঠাৎ চলে যান তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।
প্রস্তুতি ও টিম-সহ সেখানেই ছিলেন ‘বাহুবলী’ রাজু। কিছু ক্ষণের মধ্যে সেখানে পৌঁছন সুদীপ। বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ পালকে সঙ্গে নিয়ে রাজুর অফিসে এসে তাঁদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন তৃণমূল প্রার্থী। তার পরেই পরেশ ও কুণালকে নিজের দু’পাশে ধরে সতীর্থদের বলেন, ‘একটা ছবি তুলে দাও কেউ’! এর পরে কুণাল চলে যান বেলেঘাটার গায়ের ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জীবন সাহার দফতরেও দীর্ঘক্ষণ কাটান তিনি। কুণালের এই ‘ঘুরে দেখা’ নিয়েই গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। সুদীপ অবশ্য বলেন, ‘‘যে যা পরিশ্রম করেছে, তা দেখা যাবে ফলেই।’’

শেষ দফার ভোটে কালীঘাটের বাড়ি থেকে সরাসরি উত্তরের দলীয় নেতাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখতে হয়েছে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শুধু তা-ই নয়, ভোটের হার কম হচ্ছে দেখেও একাধিক বার দলের নেতাদেরও ফোন করেছেন তিনি। এক সময় সুদীপকে ফোনে তিনি বলে ফেলেন, ‘আপনার ভোট দেখতেই আমার সময় চলে
গেল যে’!

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Sudip Banerjee TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy