Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha election 2024

শুরুতেই জোটে হোঁচট! বুধে বৈঠকই হল না সেলিম এবং অধীরের, ট্রেনে কলকাতার পথে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক

আগে থেকে কথা না বলে, সময় ঠিক না করে সেলিম কী ভাবে অধীরের সঙ্গে বৈঠকের কথা সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করে দিলেন? নাকি এমন কিছু ঘটল, যাতে শেষ মুহূর্তে ভেস্তে গেল জোটের প্রথম বৈঠকটিই?

There was no meeting between Adhir Chowdhury and Md Salim on Thursday

(বাঁ দিকে) অধীর চৌধুরী, মহম্মদ সেলিম। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:২৯
Share: Save:

বুধবার সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ঘোষণা করেছিলেন, বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক হবে। সেই বৈঠকে ‘আসন-বসন’ সব নিয়ে আলোচনা হবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেই সেলিমই জানালেন, অধীরের সঙ্গে তাঁর কোনও বৈঠক হয়নি। অধীর-ঘনিষ্ঠ বহরমপুরের এক কংগ্রেস নেতা আবার বললেন, ‘‘সেলিম সাহেব যে বৈঠক করবেন, তেমন কোনও খবর দাদার কাছে ছিলই না! মিটিং হবে কোথা থেকে?’’

আনন্দবাজার অনলাইনকে সেলিম বলেন, ‘‘আমি মুর্শিদাবাদে এসেছিলাম। অধীরবাবুও জেলাতেই ছিলেন। ভেবেছিলাম বসে নেওয়া যাবে। কিন্তু আমারও সারা দিন জেলা কমিটির মিটিং ছিল। ওঁরও আলাদা কর্মসূচি ছিল। তাই বৈঠক হয়নি।’’ তবে সেলিম এ-ও বলেছেন, ‘‘খুব তাড়াতাড়ি কলকাতায় বসা হবে।’’ যদিও তার কোনও দিনক্ষণ জানাননি সেলিম।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

কৌতূহলের বিষয় হল, আগে থেকে কথা না বলে, সময় ঠিক না করে সেলিম কী ভাবে অধীরের সঙ্গে বৈঠকের কথা সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করে দিলেন? নাকি এমন কিছু ঘটল, যাতে শেষ মুহূর্তে ভেস্তেই গেল জোটের প্রথম বৈঠক? এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। তবে সিপিএম এবং কংগ্রেসের মধ্যে বৈঠক না-হওয়া নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছে। মুর্শিদাবাদ সিপিএম সূত্রের খবর, জেলা কমিটির বৈঠকের পর হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেসে সেলিম কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। অর্থাৎ, শুক্রবারেও ওই বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। যদি না অধীর কলকাতায় আসেন।

সিপিএম সূত্রে খবর, অধীরের সঙ্গে লোকসভা ভোটে আসন সমঝোতা নিয়ে বৈঠকের জন্য সেলিম সমস্ত প্রস্তুতি নিয়েই গিয়েছিলেন। দার্জিলিং আসনে লড়তে চায় কংগ্রেস। মাস দুয়েক আগে পাহাড়ের নেতা বিনয় তামাং ও অজয় এডওয়ার্ডকে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন অধীর। সে দিনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, দার্জিলিং আসনে কংগ্রেসের নজর রয়েছে। সূত্রের খবর, বৈঠক হলে সিপিএম প্রস্তাব দিত, দার্জিলিং কংগ্রেস লড়লে জলপাইগুড়ি আসনটি বামেদের দেওয়া হোক। আবার রায়গঞ্জ আসন কংগ্রেসকে এক কথায় ছেড়ে দিতে সিপিএমের কোনও আপত্তি থাকবে না বলেই একটি সূত্রের দাবি। ২০১৪-২০১৯ পর্যন্ত রায়গঞ্জের সাংসদ ছিলেন স্বয়ং সেলিম। ২০১৯ সালের ভোটে শেষ মুহূর্তে কংগ্রেস-বাম জোট ভেস্তে গিয়েছিল। রায়গঞ্জে সেলিমের বিরুদ্ধে প্রার্থী ছিলেন কংগ্রেসের দীপা দাশমুন্সি এবং বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরী। দেখা গিয়েছিল সেলিম-দীপার ভোট কাটাকাটিতে রায়গঞ্জ আসন জিতে গিয়েছে বিজেপি। এ বার আর সেই ‘ভুল’ করতে চায় না সিপিএম।

তবে মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর ও মুর্শিদাবাদ আসন বামেদের ছাড়া হোক, কংগ্রেসকে এমন প্রস্তাব দেওয়া হত বলেও সিপিএম সূত্রে খবর। বস্তুত, মুর্শিদাবাদ আসনটি যে সিপিএমের সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকারের জায়গা, তা গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে একাধিক বার আনন্দবাজার অনলাইনে লেখা হয়েছে। তবে নিজের জেলায় অধীর দু’টি আসন বামেদের ছেড়ে দেবেন কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এই রকম ভাবে পুরুলিয়া, বীরভূম, কৃষ্ণনগরের মতো আসনে সিপিএম কী চায়, তা-ও বৃহস্পতিবার প্রাথমিক ভাবে বলার মতো প্রস্তুতি সেলিমের ছিল বলে খবর।

তবে বাম-কংগ্রেসের প্রথম বৈঠক হল না বলেই যে লোকসভা ভোটে জোট বা আসন সমঝোতা হবে না, তা-ও নয়। ভিন্ন মতাদর্শের এই ধরনের একাধিক দলের জোটের ক্ষেত্রে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হতে সময় লাগে। একটি বৈঠকেই তা চূড়ান্ত হয় না। প্রথম বৈঠকে সাধারণত একপক্ষ অপরপক্ষকে খানিক মেপে নেওয়ার কাজ শুরু করে। তার পরে নানা ধরনের যুক্তি এবং পাল্টা যুক্তিতে দরকষাকষি চলে। তবে বাংলায় সিপিএম এবং কংগ্রেসের একটি বড় অংশ চাইছিল, আলোচনাটা অন্তত শুরু হোক। সেই মতো প্রস্তুতিও ছিল বিভিন্ন মহলে। কিন্তু সেটাই হল না।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE