E-Paper

আজ ব্রিগেডের পথে পাঁচশো বাস

তৃণমূল সূত্রের দাবি, সামনে লোকসভা ভোট। তার আগে বাস-দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ যাতে না পড়েন, সে ব্যাপারে জেলা নেতৃত্ব নজর রাখতে বলেছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৪ ০৮:২৮
বাসে এমন পোস্টার সাঁটানো হয়েছে।

বাসে এমন পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।

‘জনগর্জন সভা’র জন্য জেলার অধিকাংশ বাস আজ, রবিবার ব্রিগেডমুখী হবে। ছুটির দিনেও তৃণমূলের সভার সৌজন্যে বাস পেতে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হবে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। শনিবারই খণ্ডঘোষের সিপিএমের প্রতিনিধিরা বাঁকুড়া রোডে বাস চলাচল রবিবার স্বাভাবিক রাখার দাবিতে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। ‘জনগর্জন সভায় যোগ দিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে ব্রিগেড চলুন’ লেখা পোস্টা সাঁটিয়ে তৃণমূল বাসের ‘দখল’ নিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে প্রশাসন ও বাস মালিকদের সংগঠনের দাবি, এ বার বাসের জন্য অতিরিক্ত ‘চাপ’ আসেনি।

তৃণমূল সূত্রের দাবি, সামনে লোকসভা ভোট। তার আগে বাস-দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ যাতে না পড়েন, সে ব্যাপারে জেলা নেতৃত্ব নজর রাখতে বলেছিলেন। তার পরেও রায়না, আউশগ্রাম, খণ্ডঘোষ, জামালপুরের কয়েকটি এলাকায় শনিবার বিকেল থেকে বাস আটকে চালকলের ভিতরে, গুদামে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। সিপিএমের দাবি, রবিবার খণ্ডঘোষে মাঠকালী পুজো উপলক্ষে প্রায় তিন লক্ষ মানুষের জমায়েত হওয়ার সম্ভাবনা। বাঁকুড়া মোড় থেকে গাড়ির চাপে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে এই পুজোয়। রাজনৈতিক সভার জন্য বাস তুলে নেওয়ায় ভক্তের অসুবিধার মধ্যে পড়বেন। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য বিনোদ ঘোষের কথায়, “সাধারণ মানুষ যাতে অসুবিধায় না পড়েন, সে জন্য আমরা প্রশাসনকে হস্তক্ষেপ করতে বলেছি।” খণ্ডঘোষের ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপার্থিব ইসলাম বলেন, “রাস্তায় পর্যাপ্ত বাস থাকবে।”

তৃণমূল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, শুক্রবার বিকেলে জেলার দলীয় কার্যালয়ে বিধায়ক, ব্লক সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক করেন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। সেখানে বিধায়ক ও ব্লক সভাপতিদের অনেকেই ৫-৯ হাজার লোক নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সেই হিসাবে, পূর্ব বর্ধমান জেলা থেকে লক্ষাধিক লোকের ব্রিগেডে হাজির থাকার কথা। মাঠ থেকে এখন ফসল তোলার কাজ চলছে। তবে তা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত সংখ্যায় কর্মী-সমর্থকেরা যাবেন বলে আশা নেতাদের। তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য মুখপাত্র তথা কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘পরিকল্পনা অনুযায়ী জেলা থেকে লাখখানেক লোক সভায় যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ফসল তোলার মরসুম হলেও নেতা-কর্মীদের উৎসাহে খামতি নেই।’’

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, কাটোয়া, কালনা ও পূর্বস্থলী থেকে বর্ধমান-কাটোয়া লাইনের ট্রেন ধরে, বর্ধমান উত্তর ও দক্ষিণ, আউশগ্রাম, গলসি, রায়না, জামালপুর, মেমারির একাংশ থেকে বর্ধমান-হাওড়া মেন ও কর্ড লাইনের ট্রেন ধরে কর্মীরা যাবেন। এ ছাড়া, আউশগ্রাম থেকে প্রায় একশোটি, রায়নায় ৭৯টি, খণ্ডঘোষ ৬৪টি-সহ ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫২৫টি বাস ব্রিগেড রওনা হবে রবিবার সকালে। পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেশির ভাগ লোকজন ট্রেনে রওনা দেবেন। তবে কয়েকটি জায়গা থেকে বাস ও ছোট গাড়ি ভাড়া করেছেন কর্মী-সমর্থকেরা।’’

বাস মালিকদের একাংশের দাবি, শনিবার ভোর থেকেই বাঁকুড়ার ইন্দাস, পাত্রসায়র-সহ একাধিক জায়গায় বাস তুলে নেওয়া শুরু হতেই পূর্ব বর্ধমানেও তার রেশ পড়ে। বিকেলের পরে বাস অনিয়মিত হওয়ায় যাত্রীদের অসুবিধা হয়েছে। যদিও তৃণমূল সূত্রের দাবি, যাত্রীদের অসুবিধা যাতে না হয়, সে জন্য বেসরকারি বাসের বদলে সরকারি বাস ভাড়া নেওয়া হয়েছে। জেলা বাস মালিক সমিতির কর্তা তুষার ঘোষের বক্তব্য, “দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া, এ বার বাস নেওয়ার চাপ তুলনায় কম রয়েছে।” প্রশাসনের দাবি, রাস্তায় বাসের অভাব হবে না।

বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘কিছু লোক হয়তো সভায় যাবেন। তবে ভোট তাঁরা আমাদেরই দেবেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC Brigade Bardhaman Mamata Banerjee

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy