মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।
প্রচারে বেরিয়ে বলেছিলেন বিজেপির আঘাতের জবাব ভোটের মাধ্যমে দিতে হবে। নিজে ডায়মন্ড হারবারে বিপুল ভোটে জয়ী হবেন বলে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষ পর্যন্ত বিজেপির সিআর পাতিলের রেকর্ড গুঁড়িয়ে লোকসভা নির্বাচনে জয়ের ব্যবধানে একটি নজির গড়লেন তিনি। ৭ লক্ষ ১০ হাজার ৯৩০ ভোটে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতে এ বার হ্যাটট্রিক করলেন তৃণমূলের সেনাপতি। আর সেই চোখ ধাঁধানো ফলের পরেই তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে দিলেন ‘ইন্ডিয়া’য় তাঁর দলের তরফে দূত হবেন ভ্রাতুষ্পুত্র অভিষেকই।
লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু থেকেই বাংলায় তৃণমূলের জয়জয়কারের শুরু। বিভিন্ন ভোটফেরত সমীক্ষাকে ফুৎকারে উড়িয়ে রাজ্যে ৪২ আসনের মধ্যে ২৯টি আসনে জয় পেয়েছে মমতা-অভিষেকের দল। এক একটি কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীদের জয়ের মার্জিনও চোখ ধাঁধানো। দলের ‘সেনাপতি’ সে দিক থেকে নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়েছেন। ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে সেখানে এবার রেকর্ড গড়েছেন।
ভোটের সার্বিক ফল দেখে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অভিষেককে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা। সেখানে ‘সেনাপতি’র ভূয়সী প্রশংসা করেন নেত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এই জয় মানুষের জয়। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র জয়। আমি আমার সমস্ত ‘ইন্ডিয়া’র সঙ্গীকে সমর্থন জানাচ্ছি। যাঁরা আছেন, যাঁরা আমাদের সঙ্গে জুড়তে চান, তাঁদের প্রত্যেককে আমার শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’’ মমতার সংযোজন, ‘‘অভিষেক সাত লক্ষের বেশি ভোটে জিতেছে। গোটা দেশে রেকর্ড করেছে। ওকে দেখে দিল্লির শেখা উচিত, শুধু রিগিং করে ভোট হয় না। ওকে আপনারা সবাই অভিনন্দন জানান।’’ এর পরই মমতা জানিয়ে দেন বুধবার দিল্লিতে যে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের বৈঠক হবে, সেই ‘ইন্ডিয়া’র আলোচনায় তিনি নন, তৃণমূলের পক্ষে থাকবেন অভিষেক।
To those who dared to doubt the strength and resilience of Bengal, who sought to suppress us through a section of judiciary in HC, media, central investigative agencies and underestimated the power of the common man, Tonight shall serve as the resounding response.
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) June 4, 2024
জয় বাংলা 💪🏼 pic.twitter.com/dq3pa2YBas
তাঁর এবং দলের জয়ের পর এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) অভিষেক লেখেন, ‘‘যাঁরা বাংলার শক্তি এবং সহনশীলতা নিয়ে সন্দেহ করার সাহস করেছিলেন, যাঁরা হাইকোর্ট, মিডিয়া, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির মাধ্যমে আমাদের দমন করতে চেয়েছিলেন এবং সাধারণ মানুষের শক্তির অবমূল্যায়ন করেছিলেন, আজকের রাত তাঁদের জন্য একটা দুর্দান্ত প্রতিক্রিয়া হিসাবে কাজ করবে।’’ শেষে তিনি লেখেন, ‘জয় বাংলা।’
উল্লেখ্য, এ রাজ্যে এর আগে আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্র থেকে ৫ লক্ষ ৯২ হাজার ভোটে জিতে রেকর্ড গড়েছিলেন সিপিএমের অনিল বসু। ২০০৪ সালে তাঁর ওই বিপুল জয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল। তবে দেশের মধ্যে লোকসভা নির্বাচনে সর্বোচ্চ ব্যবধানে জিতেছিলেন বিজেপি প্রার্থী প্রীতম মুন্ডে। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে ৬ লক্ষ ৯৬ হাজার ভোটে হারান। তবে লোকসভা উপ-নির্বাচনে জয়ী হওয়ায়া তাঁর ওই ব্যবধানকে রেকর্ড হিসাবে ধরা হয় না। গত লোকসভা ভোটে গুজরাতের নবসারি লোকসভা কেন্দ্র থেকে ৬ লক্ষ ৮৯ হাজার ৬৮৮ ভোটে জিতেছিলেন বিজেপি প্রার্থী সিআর পাতিল। সেই ব্যবধানকেও ছাপিয়ে ডায়মন্ড হারবার থেকে ৭ লক্ষের বেশি ভোটে জিতলেন অভিষেক। উল্লেখ্য, এই লোকসভা ভোটেই গান্ধীনগর থেকে সাত লক্ষের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন অমিত শাহ।
অভিষেক ছাড়াও বড় মার্জিনে যে তৃণমূল প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বর্ধমান পূর্বের প্রার্থী শর্মিলা সরকার (১,৬০,৫৭২)। রয়েছেন বসিরহাটের নুরুল ইসলাম (৩৩৩৫৪৭), বীরভূমের প্রার্থী শতাব্দী রায় (১,৯৭,৬৫০), বোলপুরে অসিত মাল (৩২৭২৫৩), ঘাটালের দীপক অধিকারী ওরফে দেব (১৮২০০০) প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy