সোমবার দিল্লিতে মুখ্য় নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। —নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় সংস্থার মাধ্যমে বিরোধী দলের নেতাদের হয়রানি করছে কেন্দ্রের শাসক দল। আসন্ন লোকসভা ভোটের প্রচারে এর প্রভাব পড়ছে। এই মর্মে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে সোমবার নালিশ জানিয়ে এল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, সাগরিকা ঘোষ, দোলা সেন এবং সাকেত গোখেল। তাঁরা সোমবার দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) রাজীব কুমার এবং অন্য নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে দেখা করেন এবং একটি চিঠি দেন। চিঠিতে তাঁরা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের গ্রেফতারের কথা তুলে ধরেছেন। এ ছাড়া আরও সাতটি ঘটনার তালিকাও তুলে ধরেছেন যেখানে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), সিবিআই, জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) এবং আয়কর বিভাগ (আইটি) তৃণমূল সংসদ, বিধায়ক বা কর্মীদের বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ করেছে।
গত সপ্তাহেও তৃণমূলের তরফে এ বিষয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছিল। সোমবার ফের চিঠি দেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া ওই চিঠিতে লেখা হয়েছে, “এটি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে আজ আমরা আপনাকে লিখছি যে, কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ বিভিন্ন বিভাগ এবং সংস্থা সারা দেশ জুড়ে বিরোধী দলগুলির নেতা-কর্মীদের হয়রান করছে। জনাদেশের সঙ্গে আপস করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সংস্থার এ হেন পদক্ষেপের ফলে তাদের নির্বাচনী প্রতিনিধিরা নির্বাচনের দৌড়ে অনেক পিছিয়ে পড়ছেন। এ সব কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। কেন্দ্রীয় সরকার নিজের স্বার্থ চরিতার্থে কেন্দ্রীয় সংস্থা এবং বিভিন্ন কেন্দ্রীয় বিভাগকে ব্যবহার করছে।”
উদাহরণ হিসেবে মহুয়া মৈত্রের কথা লিখেছে তৃণমূল। চিঠিতে লেখা হয়েছে, “কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রকে জেনেবুঝে হয়রান করছে সিবিআই। গত ২৩ মার্চ, মহুয়ার অফিস এবং বাসস্থান-সহ মোট চারটি জায়গায় হানা দেয় সিবিআই। এই হানায় সদর্থক কিছুই পাননি সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। শুধু তাই নয়, সকল নথিপত্র জমা দেওয়ার পরেও বৈদেশিক মুদ্রা আইন (ফেমা)-এও মহুয়াকে ডেকেছিলেন ইডির আধিকারিকেরা। এ সবই ভোটারদের মনে মহুয়ার প্রতি এক বিরূপ মনোভাব যাতে তৈরি হয়, তারই প্রচেষ্টা আর কিছুই নয়।”
চিঠিতে তৃণমূলের রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিন্হার বাসভবনে ইডির অভিযানের কথা তুলে ধরেছে। যাঁকে পরে তলব করেছিল ইডি। এ ছাড়াও কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর জুঁই বিশ্বাসের বাড়িতে তিন দিনের জন্য আয়কর বিভাগের অভিযান চালানো হয়েছিল। সে বিষয়েও জানানো হয়েছে। তৃণমূল আরও অভিযোগ করেছে যে, এনআইএ তৃণমূলের নির্বাচনী প্রচারাভিযান ব্যাহত করার জন্য ২০২৩ সালে নথিভুক্ত একটি মামলায় ১৯ জন দলীয় কর্মীকে গ্রেফতার করেছে।
কমিশনের কাছে তৃণমূলের অনুরোধ, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে তাদের দলের সদস্য এবং বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা থেকে যেন বিরত থাকে। ভোটের প্রাক্কালে সব দল যেন সমান ভাবে প্রচার করা সুযোগ পায় তা নিশ্চিত করতে ইডি, সিবিআই, আইটি এবং এনআইএ-র অধিকর্তাদের অবিলম্বে অন্যত্র স্থানান্তর করার অনুরোধ করেছে তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy