Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

রাজ্যের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে, তোপ নির্মলার

এ দিন নির্মলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে বিঁধে বলেছেন, গত ১২ বছরে রাজ্য চূড়ান্ত ভাবে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কোষাগারের আয়ের ৩৫ শতাংশ চলে যাচ্ছে তাদের নেওয়া ধারের সুদ গুনতে এবং সরকারি কর্মীদের পেনশনের টাকা মেটাতে।

An image of Nirmala Sitharaman

নির্মলা সীতারামন। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩১
Share: Save:

সামনেই লোকসভা নির্বাচন। এই সময়ে পশ্চিমবঙ্গে এসে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। চাঁছাছোলা ভাষায় জানালেন, এ রাজ্যের অর্থনীতি কার্যত ভেঙে পড়েছে। পরিকাঠামোর কোনও উন্নতি হয়নি। পাশাপাশি আর্থিক নৈতিকতার ধার ধারছে না বঙ্গের তৃণমূল সরকার। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে এবং আবাস যোজনায় দুর্নীতি তো হচ্ছেই। সেই সঙ্গে আর্থিক স্বাস্থ্যের প্রায় প্রতিটি মাপকাঠির বিচারে রাজ্য কার্যত ডাহা ফেল করেছে। নির্মলা বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ বিশাল সম্ভাবনাময় রাজ্য। মোদী সরকার চায়, দেশের আর্থিক উন্নতির যাত্রায় সফর করার ইঞ্জিন হয়ে উঠুক পূর্বাঞ্চল।

তবে নির্মলার বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর অভিযোগগুলির ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে রাজ্যের অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, এ ব্যাপারে তাঁরা কোনও মন্তব্য করতে চান না।

এ দিন নির্মলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে বিঁধে বলেছেন, গত ১২ বছরে রাজ্য চূড়ান্ত ভাবে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কোষাগারের আয়ের ৩৫ শতাংশ চলে যাচ্ছে তাদের নেওয়া ধারের সুদ গুনতে এবং সরকারি কর্মীদের পেনশনের টাকা মেটাতে। ফলে মূলধন বৃদ্ধির হার ক্রমাগত কমছে। ২০১০-এ যা ছিল ৬.৭%, হালে তা নেমে গিয়েছে ২.৯ শতাংশে।

পশ্চিমবঙ্গ এক সময়ে শিল্পের ক্ষেত্রে দেশের প্রথম সারির রাজ্যগুলির অন্যতম ছিল বলে মন্তব্য করে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর অভিযোগ, দেশের মোট শিল্পোৎপাদনে এখন এ রাজ্যের অবদান ক্রমশ কমছে। তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালে সারা দেশের শিল্পোৎপাদনের ২৪ শতাংশই আসত বাংলা থেকে। অথচ ২০২০-২১ সালে তা কমে ঠেকেছে ৩.৫ শতাংশে। যার ফলে রাজ্যবাসীর মাথাপিছু আয়ের হার গত দু’দশক ধরে নিম্নমুখী।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে বহু শিল্প পাততাড়ি গুটিয়েছে বলেও এ দিন মন্তব্য করেন নির্মলা। যে সব কারণে এই রাজ্যের থেকে শিল্পপতিরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তৃণমূলের পাশাপাশি বাম জমানাকেও পরোক্ষ ভাবে দুষে কটাক্ষ করেন অর্থমন্ত্রী। বলেন, এখান থেকে শিল্প চলে যাওয়ার অন্যতম কারণ হল নিয়ন্ত্রণহীন ট্রেড ইউনিয়ন কার্যকলাপ। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের ক্যাডারে পরিণত হওয়া পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা বিশেষ করে তৃণমূলের আমলে এই রাজ্য থেকে শিল্পের মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার পিছনে একটা বড় কারণ বলে উল্লেখ করেন নির্মলা। তাঁর দাবি, এখানে তোলাবাজি একটি ‘সার্বভৌম অধিকারের’ পর্যায়ে চলে গিয়েছে। যার ফলে এখানে চাকরি নেই। ১০১০ সাল থেকে ১১ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক এই রাজ্য থেকে কাজের সন্ধানে অন্য রাজে গিয়েছেন।

নির্মলার অভিযোগ শুধু আর্থিক দিক দিয়েই নয়, পশ্চিমবঙ্গ অন্য অনেক রাজ্যের থেকে পিছিয়ে পড়ছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবার নিরিখেও। উদাহরণ হিসাবে তিনি বলেন, এক সময়ে সাক্ষরতার নিরিখে কেরলের পরেই ছিল পশ্চিমবঙ্গের স্থান। কিন্তু এখন ১০-১৪ বছর বয়সিরা শিক্ষার ক্ষেত্রে তামিল নাডু, গুজরাত এবং মহারাষ্ট্রের থেকে পিছিয়ে পড়েছে।

এমনকি কৃষি ক্ষেত্রেও রাজ্যের হাল খারাপ বলে উল্লেখ করেন নির্মলা। তিনি বলেন, এই রাজ্যে কৃষি ক্ষেত্রে সরকারি বিনিয়োগ নেই। যার ফলে কৃষি উৎপাদনে অন্য অনেক রাজ্য থেকে পিছিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। পর্যটন শিল্পের প্রসারের বিশাল সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তা নিতে পারেনি এই রাজ্যের সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE