Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

মার্কিন মুলুকে চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে, কেন কংগ্রেস ত্যাগ? মহুয়ার জবাব, তাঁর রাজনীতি তৃণমূলেই

মহুয়া মৈত্র চাকরিজীবনে আমেরিকায় থাকতেন। কখনও ভেবেছিলেন মার্কিন মুলুকে রাজনীতি করবেন? মহুয়ার স্পষ্ট জবাব, আমেরিকাকে তাঁর ততটা ভাল লাগে না। বরং তাঁর কাছে তাঁর ‘সেকেন্ড হোম’ বিলেত।

Why did he leave Congress, replied Mahua Moitra

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৪ ২০:১২
Share: Save:

তিনি চাকরি করতেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় বহুজাতিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান জেপি মর্গ্যানে। ছিলেন সেই প্রতিষ্ঠানের ভাইস প্রেসিডেন্ট। বস্টন ম্যারাথনে দৌড়তেন। লন্ডনের স্টারবাকসে বসে চুমুক দিতেন কফির পেয়ালায়। তিনি তৃণমূলের কৃষ্ণনগরের প্রার্থী তথা সেই লোকসভার প্রাক্তন সাংসদ মহুয়া মৈত্র।

কিন্তু সে সব এখন প্রায় ‘গত জন্মের কথা’। তাঁর ‘চেক ইন’ তালিকায় এখন বস্টন, নিউ ইয়র্ক বা লন্ডন নেই। বদলে জায়গা করে নিয়েছে তেহট্ট, পলাশিপাড়া, নাকাশিপাড়া, কালীগঞ্জের মতো এলাকা। ইউরোপীয় শহরের বদলে বাংলার পাড়াগাঁ। কিন্তু কেন সেই বৈভব এবং ব্যসনের জীবন ছেড়ে তিনি ধুলোমাটির রাজনীতিতে এলেন? কোনও আক্ষেপ হয়? আনন্দবাজার অনলাইনের সাক্ষাৎকারভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘দিল্লিবাড়ির লড়াই: মুখোমুখি’তে মহুয়া প্রত্যাশিত ভাবেই জানিয়ে দিলেন, তাঁর কোনও আফসোস নেই। বরং বললেন, ‘‘এখন মনে হয়, এই জন্যই বোধ হয় আমি জন্মেছি। ঈশ্বর আমায় এই জায়গায় এনে ফেলেছেন। এটাই আমার পথ।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

সাক্ষাৎকারে ওই কথা বলার সময় দৃশ্যতই মহুয়াকে আবেগতাড়িত লেগেছে। কিন্তু মহুয়া জানিয়েছেন, তিনি আবেগে তাড়িত হয়ে বলছেন না। যা বলছেন, সচেতন ভাবেই বলছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি আমার পেশাগত জীবনে সাফল্য পেয়েছি। হয়তো আরও সাফল্য পেতাম। আমার বাবা-মা বলতে পারতেন তাঁদের মেয়ে এই করছে, এত টাকা উপার্জন করছে, এই শহর-সেই শহর ঘুরছে। কিন্তু তা সার্বিক সামাজিক দিক থেকে বিশেষ অর্থবহ কিছু হত না।’’

দেশে ফিরে মহুয়ার রাজনীতি শুরু কংগ্রেসে। কিন্তু কেন কংগ্রেস ছেড়ে দিলেন? মহুয়ার জবাব, তিনি মাত্র এক বছর কংগ্রেস করেছেন। বাকি সংগঠন করা, বিধায়ক হওয়া, সাংসদ হওয়া—সবই তৃণমূল থেকে। কিন্তু কংগ্রেস ছাড়লেন কেন? তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার রাজনীতির ক্ষেত্র ছিল বাংলা। সেই সময়ে উত্তরবঙ্গ থেকে মুর্শিদাবাদ পর্যন্ত কংগ্রেসের কিছু হলেও শক্তি ছিল। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গে কিছুই ছিল না। পরে সেই সংগঠনও ভাঙতে থাকে। বুথে লোক পাওয়া দুষ্কর ছিল। তা ছাড়া সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম পর্বে বাংলায় যখন মমতাদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) মাটি কামড়ে আন্দোলন করছেন, তখন কংগ্রেস নেতৃত্ব বলতেন বামেরা তাঁদের শরিক। কারণ, বামেদের সমর্থনে তখন কেন্দ্রে ইউপিএ-১ সরকার চলছে। তাই সময়ের দাবিতে, হিসেব করেই আমি তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম।’’

মহুয়া চাকরিজীবনে আমেরিকায় থাকতেন। কখনও ভেবেছিলেন মার্কিন মুলুকে রাজনীতি করবেন? মহুয়ার স্পষ্ট জবাব, আমেরিকাকে তাঁর ততটা ভাল লাগে না। বরং তাঁর কাছে তাঁর ‘সেকেন্ড হোম’ বিলেত। তিনি জানিয়েছেন, কখনও-সখনও ভেবেছেন ইংল্যান্ডেও তিনি রাজনীতি করতে পারতেন। যে ইংল্যান্ডের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক ভারতীয় বংশোদ্ভূত। মহুয়া জানিয়েছেন, সেখানকার ‘সিস্টেমে’ তাঁর সুযোগ রয়েছে। বিলেতে রাজনীতি করলে কোন দল করতেন? তাঁর কথায়, ‘‘কনজ়ারভেটিভদের কিছু নীতি আমার ভাল লাগে। আবার লেবার পার্টির অনেক নীতির সঙ্গেও আমি সহমত। কিন্তু বাম ঘরানার রাজনীতি আমি পছন্দ করি না। তবে আমায় তো ভারতে ফিরতেই হত। ফিরেছি, এখানেই রাজনীতি করছি।’’

মহুয়া জানিয়েছেন, ভারতের সংবিধান ‘বিপন্ন’। তা রক্ষা করার দায়িত্ব পালনে ব্রতী হয়ে কাজ করে যেতে চান তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘তবেই ইতিহাস আমাদের মনে রাখবে।’’ মহুয়া তাঁর যন্ত্রণার কথাও জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও দেশের মানুষের মধ্যে এই আর্থিক বৈষম্য চোখে জল আনে। আমাদের তা ঘোচাতে অনেক পথ অতিক্রম করতে হবে।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE