Advertisement
E-Paper

ভরসা দিচ্ছে বাহিনী, ভয় উপেক্ষা করেই ভোট দিতে যাচ্ছেন মানুষ

ভয়ের আবহ জিইয়ে রাখার শাসকের সব রকম চেষ্টা সত্ত্বেও মানুষের ভোট দেওয়ার ইচ্ছাকে তা দমন করতে এখনও ব্যর্থ তারা। কেন্দ্রীয় বাহিনী কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে রেখেছেন বুথ ও পার্শ্ববর্তী এলাকা। খড়দহে ছক ভেঙে অভিনব উদ্দ্যোগ নিলেন সিআরপিএফ জওয়ানরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ১১:৪৮

ভয়ের আবহ জিইয়ে রাখার শাসকের সব রকম চেষ্টা সত্ত্বেও মানুষের ভোট দেওয়ার ইচ্ছাকে তা দমন করতে এখনও ব্যর্থ তারা। কেন্দ্রীয় বাহিনী কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে রেখেছেন বুথ ও পার্শ্ববর্তী এলাকা। খড়দহে ছক ভেঙে অভিনব উদ্দ্যোগ নিলেন সিআরপিএফ জওয়ানরা। সাধারণ মানুষের ভয় ভাঙাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিরাপত্তার আশ্বাস দিলেন তাঁরা। বাহিনীর তত্পরতা যত বাড়ছে, ততই মরিয়া হয়ে উঠছে শাসক। বহু জায়গায় বাহিনী এবং পুলিশের জন্য বুথের আশেপাশে ঘেঁসতে না পেরে, ঘুর পথে সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগ উঠছে তাদের বিরুদ্ধে। পাড়ায় ঢুকে, বাড়িতে বাড়িতে চলছে হুমকি, শাসানি। যদিও, সেনা জওয়ানরাদের কড়াকড়িতে অবাধ সন্ত্রাস, ছাপ্পা ভো়টে বেশ খানিকটা রাশ পড়েছে।

ভয় দেখানোর জন্য রাতের অন্ধকারকেই বেছে নিয়েছিল শাসক দল। তাদের হুমকির হাত থেকে রক্ষা পেল না সাড়ে তিন বছরের শিশুও। বীজপুরে বারেন্দ্র গলিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে সাড়ে তিন বছরের সায়ন্তিকা ঘোষ। তার মা এলাকায় সিপিএম সমর্থক বলেই পরিচিত। অভিযোগ রবিবার রাতে তাঁদের বাড়িতে হামলা চালায় কয়েক জন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী। টোটোর বাবা মায়ের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওই ছোট শিশুকেও গলা টিপে খুনের হুমকি দেয় তারা।এমনকি সায়ন্তিকাকে লাঠি দিয়ে মারধরের অভিযোগও করা হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও হাল ছাড়তে নারাজ টোটোর বাবা-মা। তার বলেছেন, ‘যতই মারো, যতই ভয় দেখাও, আমার ভোট আমি দেবই দেব’। অন্য দিকে, ভোট শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই হালিশহরেই তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে ঋষভ মণ্ডল নামে এক ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ করা হয়েছে। চারটি বুথে বিরোধীদের বসতেই দেওয়া হয়নি। বেলা যত গড়াচ্ছে তত বেশি শাসকের মরিয়া গা জোয়ারির খবর আসছে। নিউ টাউনে বাম এজেন্টকে মারধরে অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীকে আটক করা হয়েছে। ব্যারাপুরে ৫টি, দমদমে দু’টি বুথে বিরোধী এজেন্টকে বসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল রাতে উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার সমাদ্দারপাড়ায় মুখে কাপড় বেঁধে স্থানীয় ও বহিরাগত তৃণমূল কর্মীরা রীতিমত সন্ত্রাস চালিয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, সিপিএম কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অবাধে চলেছে হুমকি, ভাঙচুর, গালাগালি। প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা সিপিএম নেতা বাপি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা অনেকেই ভোট দিতে আসতে ভয় পাচ্ছি। ইতিমধ্যেই কাউকে কাউকে মেরে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে জন্য দলবদ্ধ ভোট দিতে যাচ্ছি।’’

মধ্যমগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের কৈপুল গ্রামে ২৬৭ নম্বর বুথ থেকে ভোট দিয়ে ফেরার পথে বেধড়ক মারধর করা হল এক সিপিএম সমর্থককে। প্রদীপ মাঝি নামে ওই ব্যক্তিকে বাঁশ ও লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে অভিযোগ। শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। সিপিএমের দাবি, গত সাত-আট বছর ধরে প্রদীপবাবু এলাকাছা়ড়া ছিলেন। ভোটের দিন সকালেই তিনি পুলিশি নিরাপত্তায় গ্রামে ভোট দিতে ফিরেছিলেন। সেই ভোট দিয়ে ফেরার পথেই আক্রান্ত হন তিনি। তাঁকে মধ্যগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয় সিপিএম নেতা আহমেদ খানের অভিযোগ, ‘‘খামারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন বুথে জোট প্রার্থীর এজেন্টদের বসতে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না।’’

কিন্তু এত করেও আটকানো যাচ্ছে না সাধারণ মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকার প্রয়োগের ইচ্ছাকে— সব শাসানিকে অগ্রাহ্য করে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে বুথের বাইরে ভোটারদের ভিড়। ‘যতই মারো, ভয় দেখাও, ভোট দিতে যাবই’। বুথগুলির সামনে লম্বা লাইনই প্রমাণ করছে এই মানসিকতাকেই।

আরও পড়ুন-‘যতই মারো, যতই ভয় দেখাও, আমার ভোট আমি দেবই দেব’

আরও পড়ুন-কালকে খাওয়ানোটা দেখছি ফালতুই হল, এখন কেউ হেল্প করছে না’

assembly election 2016 vote election crpf jawans
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy