Advertisement
E-Paper

ভোট মিটতেই গুলি খেজুরি, নাটাবাড়িতে

ভোট-পর্ব মোটামুটি শান্তিতে মিটেছিল। কিন্তু তারপরই তেতে উঠল শেষ দফা ভোটের দুই জেলা পূর্ব মেদিনীপুর এবং কোচবিহার। চলল গুলি। বৃহস্পতিবার রাতে কোচবিহারের নাটাবাড়িতে সিপিএম প্রার্থীর পোলিং এজেন্টের বাড়ি লক্ষ করে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৬ ০৩:১৬
খেজুরিতে গুলিবিদ্ধ তৃণমূল সমর্থক শেখ মুসুদ। শুক্রবার তমলুক জেলা হাসপাতালে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

খেজুরিতে গুলিবিদ্ধ তৃণমূল সমর্থক শেখ মুসুদ। শুক্রবার তমলুক জেলা হাসপাতালে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

ভোট-পর্ব মোটামুটি শান্তিতে মিটেছিল। কিন্তু তারপরই তেতে উঠল শেষ দফা ভোটের দুই জেলা পূর্ব মেদিনীপুর এবং কোচবিহার। চলল গুলি।

বৃহস্পতিবার রাতে কোচবিহারের নাটাবাড়িতে সিপিএম প্রার্থীর পোলিং এজেন্টের বাড়ি লক্ষ করে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তবে কেউ হতাহত হননি। শুক্রবার বিকেলে পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে আবার গুলিবিদ্ধ হন এক তৃণমূল সমর্থক। জখম শেখ মুসুদ সিপিএমের দিকে আঙুল তুললেও স্থানীয় সূত্রে খবর, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা। একই ব্যাখ্যা দিয়েছে পুলিশও।

ভোট মিটলে ‘ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে মেপে নেওয়া’র হুঁশিয়ারি বারবার দিয়েছেন খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই রাজ্যের নানা প্রান্তে বিরোধীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বর্ধমানের খণ্ডঘোষে তো ভোট শেষে বাম প্রার্থীর এক পোলিং এজেন্ট-সহ দু’জনকে খুন পর্যন্ত করা হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতাতেও ভোটের পরে বিরোধী এজেন্ট, কর্মীদের উপর হামলায় নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের। শেষ দফা ভোটের পরেও সেই হিংসার ছবি।

বৃহস্পতিবার রাত দশটা নাগাদ কোচবিহারের নাটাবাড়ি কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী তমসের আলির পোলিং এজেন্ট সজল খাসনবীশের বাড়ি লক্ষ করে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গুলি চালায় বলে অভিযোগ। বাবুরহাটের ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার কর্মী সজলবাবু শুক্রবার বলেন, “এক পড়শির সঙ্গে দাবা খেলছিলাম। আচমকা গুলির শব্দ। গুলির খোলও পাওয়া গিয়েছে।” এ দিন সিপিএম প্রার্থী তমসের আলি সজলবাবুর বাড়িতে যান। নাটাবাড়ি কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের অবশ্য দাবি, “পারিবারিক বিবাদের জেরেই ওই ঘটনা।’’ কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে।

খেজুরির ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার বিকেলে। স্থানীয় কলাগেছিয়া পঞ্চায়েতের ঘোলাবাড়ের বাসিন্দা শেখ মুসুদ এলাকায় তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত। অভিযোগ, ঘোলাবাড় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তাঁকে লক্ষ করে গুলি ছোড়া হয়। গুলি লাগে পেটের বাঁ দিকে। কারা গুলি ছুড়ল? তমলুক জেলা হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে মুসুদের দাবি, ‘‘জনা তিরিশেকের একটা জটলা ছিল। তার মধ্যে থেকেই এক জন আমাকে গুলি করে।’’ হামলাকারী সিপিএমের বলেই মুসুদের দাবি। তবে কারও নামে রাত পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের করেননি তিনি। এ দিকে, সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হিমাংশু দাসের দাবি, ‘‘মুসুদ আগে সিপিএম করতেন। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। যদিও এ বার ভোটের আগে তিনি খেজুরির জোট সমর্থিত নির্দল প্রার্থী অসীম মণ্ডলের হয়ে প্রচার করেছিলেন। তাই তৃণমূলের লোকজন হামলা করেছে।’’

স্থানীয় সূত্রে অবশ্য জানা যাচ্ছে, এলাকায় জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম দাসের গোষ্ঠীর সঙ্গে খেজুরির তৃণমূল প্রার্থী রণজিৎ মণ্ডলের অনুগামীদের বিরোধ রয়েছে। পার্থ অনুগামী মুসুদ সেই কোন্দলেই আক্রান্ত হয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়াও বলছেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা।’’ যদিও রণজিৎবাবু বলেন, ‘‘এমন ঘটনা জানি না।’’

তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়াতেও। বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় মাসিয়া বাজারের ওই ঘটনায় অভিযুক্ত সিপিএম। পুলিশে ৬ জনের নামে অভিযোগও দায়ের করেছে তৃণমূল। যদিও সিপিএমের দাবি, এটা নিজেদের মধ্যে গোলমালের জের। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

assembly election 2016
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy