Advertisement
E-Paper

হোক ফেয়ার প্লে, বার্তা ভাইচুংয়ের

কড়া ট্যাকল নয়, ফেয়ার প্লে। সেই কথাটাই যেন বললেন তৃণমূলের ফুটবলার প্রার্থী। ভোটারদের হুমকি বা বাজে কথা নয়, ভালবেসে তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার কথা বলার জন্য দলীয় কর্মীদের পরামর্শ দিলেন শিলিগুড়ির তৃণমূল প্রার্থী ভাইচুং ভুটিয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৬ ০৩:০৪
শিলিগুড়ি জংশন এলাকায় প্রচারে ভাইচুং। — বিশ্বরূপ বসাক

শিলিগুড়ি জংশন এলাকায় প্রচারে ভাইচুং। — বিশ্বরূপ বসাক

কড়া ট্যাকল নয়, ফেয়ার প্লে। সেই কথাটাই যেন বললেন তৃণমূলের ফুটবলার প্রার্থী। ভোটারদের হুমকি বা বাজে কথা নয়, ভালবেসে তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার কথা বলার জন্য দলীয় কর্মীদের পরামর্শ দিলেন শিলিগুড়ির তৃণমূল প্রার্থী ভাইচুং ভুটিয়া।

রবিবার দুপুরে পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে একটি কর্মিসভা করে তৃণমূল। সভায় ভাইচুং বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের কাজকে সামনে রেখে আমরা ভোট লড়ছি। শিলিগুড়ির আরও উন্নয়ন করতে হবে। কর্মীদের সবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করতে হবে, সেই সময় কাউকে বাজে কথা বলবেন না। কোনও হুমকি দেবেন না। ভালবেসে সবাইকে বোঝাতে হবে। তাতে দেখবেন, সিপিএমের লোকেরাও আমাদের পাশে থাকবেন।’’

তৃণমূল প্রার্থীর এমন বক্তব্য শোনার পর বাম নেতাদের দাবি, ভাইচুং তো সত্যি কথাটাই বলে ফেলেছেন। আসলে উনি ভাল খেলায়োড় মানুষ তো তাই ‘ফেয়ার প্লে’-তে বিশ্বাসী। কিন্তু ওঁর দল তো তা নয়। উনি জানেন, ভোট আসলেই শিলিগুড়ি তো বটেই রাজ্য জুড়ে তৃণমূল কর্মীরা কী করেন। পুলিশ-প্রশাসনকে ব্যবহার, ভয়-ভীতি, মামলার হুমকি সব চলে। এসবের মধ্যে হয়ত, নিজেকে না জড়াতেই তিনি ওই কথা বলে ফেলেছেন। বিষয়টি শোনার পর সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য তথা বাম প্রার্থী অশোক ভট্টচার্য ভাইচুংকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। অশোকবাবু বলেছেন, ‘‘ওঁকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসলে উনি তো রাজনৈতিক নেতা নন। তাই সত্যিটা বলেছেন। আর এবার ভয়, হুমকি দিয়েও লাভ নেই। মানুষের জোট হয়েছে। আর তা হলে কী হয়, তৃণমূল পুরসভা, পঞ্চায়েত ভোটে দুই দফায় টের পেয়ে গিয়েছে।’’

ভাইচুং-এর বক্তব্য অবশ্য অস্বস্তি বাড়িয়েছে শাসক দলের নেতাদের একাংশের। দলের নেতারা দাবি করেছেন, প্রার্থীর কথার ‘ভুল ব্যাখ্যা’ করা হচ্ছে। দলের জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘ভাইচুং উন্নয়নের কর্মযজ্ঞকে সামনে রেখে ভোটের কথা বলেছেন। তা বলতে গিয়ে উনি যেটা বলেছেন, তা সিপিএমের কাজকর্মের উদাহরণ। বামেরাই তো দীর্ঘদিন ভয়, ভীতির পরিবেশ তৈরি করে ভোট করত। এখন রাজ্য তা হয় না। অবাধে ভোট হয়।’’

সভায় দলের জেলার নেতা তথা প্রাক্তন মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল বাম প্রার্থী অশোক ভট্টচার্যকে ‘মেয়াদ উত্তীর্ণ মানুষ’ বলে কটাক্ষ করেছেন। কৃষ্ণবাবুর বক্তব্য, ‘‘অশোকবাবুর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। উনি আগেরবার ভোটে হেরেছিলেন। আবার পুরসভার মেয়র হয়েছেন। পুরসভাটাও ঠিকঠাক চালাতে পারছেন না। ওঁর উচিত এবার বিশ্রাম নেওয়া।’’ এই নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি অশোকবাবু। তিনি শুধু বলেছেন, ‘‘মানুষের যেমন ভাবনা তেমন বক্তব্য। আমি এই নিয়ে কিছু বলব না।’’

এদিন দুপুরে বর্ধমান রোডের ঝংকার মোড়ের একটি নির্মীয়মাণ ভবনে দলের কর্মিসভাটি হয়। সেখানে বাম-কংগ্রেস জোটের বিরোধিতা করে এলাকার কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলর স্বপন চন্দ অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। গত পুরভোটেও কংগ্রেসের টিকিটে তিনি এলাকা থেকে লড়ে হেরেছিলেন তিনি। গত শনিবারও দেবপ্রসাদ রায়ের জোট বিরোধী সভায় যোগ দিয়েছিলেন স্বপনবাবু। তিনি বলেন, ‘‘বরাবর বামেদের সঙ্গে এলাকায় লড়াই করে আসছি। সেই বামেদের গলায় হাত দিয়ে ভোটে কাজ করতে পারব না। তাই কংগ্রেস ছাড়লাম।’’ তিনি জানান, কংগ্রেসের নিচু তলার কর্মীরা এই জোট মানেননি। উপর তলার নেতারা জোট করেছেন। কিছু নেতা ভোটে লড়ে জেতার আশায় আর কেউ ভোটের বাজারে প্রাসঙ্গিক থাকার জন্য জোট জোট করছেন।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে কংগ্রেস-তৃণমূলের জোটের প্রার্থী হিসাবে জিতেছিলেন স্বপনবাবু। পরে আস্থা ভোটে বামেদের সমর্থনে কংগ্রেস বোর্ড গড়লে তিনি মেয়র পারিষদ হন। সেই সময় বামেদের বিরুদ্ধে সরব হননি বলে অভিযোগ। এই প্রসঙ্গে স্বপনবাবু যুক্তি, ‘‘আস্থা ভোট তো গোপন ব্যালটে হয়েছিল। কে কাকে ভোট দিয়েছে জানি না। প্রকাশ্যে তো সেই সময় কংগ্রেস-সিপিএম মানুষের কাছে যায়নি। তাই দুটোর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।’’ এই দলবদল প্রসঙ্গে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকারের বক্তব্য, ‘‘স্বপনবাবু বিরাট মাপের মানুষ। ওঁর বড় বড় বিরাট পদে থাকা উচিত। কংগ্রেস তো তা দিতে পারবে না। তাই তৃণমূলে গিয়েছেন। এলাকার কোনও কংগ্রেসি নেতা, কর্মী ওঁর পাশে নেই।’’

assembly election 2016 Baichung Bhutia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy