মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদী থেকে অমিত শাহ, বাংলার ভোট প্রচারে এসে বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্বের মুখে বারবার শোনা যাচ্ছে ‘সোনার বাংলা’ গড়ার কথা। এ বার সেই প্রতিশ্রুতিকেই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে এক বিশেষ উদ্যোগ নিতে চলেছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। তা-ও আবার নিজেদের ইস্তাহার মারফত। বুধবার নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আহত হওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের ইস্তাহার প্রকাশ করা যায়নি। আনন্দবাজার ডিজিটাল জেনেছে, গত ৭ বছর নরেন্দ্র মোদী সরকারের কোন কোন সিদ্ধান্তে দেশের অর্থনীতি থেকে সামাজিক ও সম্প্রীতির পরিস্থিতি নষ্ট হয়েছে, সে কথা তুলে ধরা হবে তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তাহারে। কেন্দ্রীয় সরকারের ৭ বছরের শাসনকালের সঙ্গে মমতার ১০ বছরের শাসনের তুলনা টানা হয়েছে জোরালো ভাবে। এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘যাঁরা সোনার বাংলা গড়ার কথা বলছেন, তাঁরা দু’বার সুযোগ পেয়েও দেশের অর্থনীতি থেকে সার্বভৌমত্ব কী ভাবে নষ্ট করেছেন, তার স্পষ্ট উল্লেখ থাকবে ইস্তাহারে।’’
মোদী সরকারের দূরদৃষ্টি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে এসেছে ইস্তাহারে। সেই অধ্যায়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের জেরে দেশজুড়ে চালু হয়েছিল লকডাউন। সেই লকডাউন যে কতটা অপরিকল্পিত ছিল, এবং লকডাউনের ফলে দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও শ্রমিক শ্রেণিকে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে, তারও উল্লেখ থাকছে ইস্তাহারে। মোদীর নেতৃত্বাধীন প্রথম এনডিএ সরকারের আমলে দেশে চালু হয়েছিল জিএসটি। সেই কর পরিষেবা চালু করার পর দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে বলেই দাবি করা হয়েছে তৃণমূলের ইস্তাহারে। বলা হয়েছে, নতুন এই কর কাঠামোর ফলে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের জীবনে নেমে এসেছে চরম আর্থিক কষ্ট। সঙ্গে নাগরিক সংশোধনী আইনের নামে দেশের মানুষকে নাগরিকত্ব ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকার বিভ্রান্ত করছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। এই আইনের ফলে সামাজিক বিভাজনের বিষয়টি প্রবলভাবে উঠে এসেছে, তা-ও তৃণমূলের ইস্তাহারে থাকবে।
দিল্লিতে কৃষক আন্দোলনের কথাও স্থান পেয়েছে তৃণমূলের এই ইস্তাহারে। ৩ কৃষি আইন এনে দেশের কৃষক সমাজকে চরম অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিচ্ছে মোদী সরকার, এমনটাই দাবি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতির মাঝেও তৃণমূল পরিচালিত সরকার মমতার নেতৃত্বে রাজ্যে ১০ বছরে কী কী উন্নয়নমূলক কাজ করেছে, তা-ও তুলে ধরা হয়েছে। বিদায়ী সরকারের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘‘আমরা গত ১০ বছরে কী উন্নয়ন করেছি, নির্বাচনী ইস্তাহারে সে কথাও যেমন থাকবে, তেমন থাকবে আগামী বছরগুলোতে বাংলাতে আমরা কী রকম উন্নয়ন করতে চাই, তার পরিকল্পনাও। ইস্তাহারে আমরা আমাদের বক্তব্য জানাব। এরপর মানুষ বিচার করবেন।’’ ইস্তাহার তৈরির দায়িত্বে ছিলেন দমদমের প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি এ নিয়ে মুখ খুলতে না চাইলেও জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে বিস্তারিত যা বলার মুখ্যমন্ত্রী বলবেন। শুক্রবার দুপুরে প্রকাশিত হতে পারে তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তাহার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy