Advertisement
০৬ মে ২০২৪

জয়ের উৎসবে আর রক্ত নয়

ভোট গণনা উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হাওড়া ও হুগলির গণনাকেন্দ্রগুলিতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। শুধু তাই নয়, গণনার পরে যাতে কোনও হিংসাত্মক ঘটনা না ঘটে তার জন্যও বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। একইসঙ্গে জেলার ভোটযুদ্ধে বিবদমান রাজনৈতিক দলগুলিও তাদের কর্মীদের কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছে।

নুরুল আবসার ও গৌতম বন্দোপাধ্যায়
হাওড়া ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৬ ০২:৩০
Share: Save:

ভোট গণনা উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হাওড়া ও হুগলির গণনাকেন্দ্রগুলিতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। শুধু তাই নয়, গণনার পরে যাতে কোনও হিংসাত্মক ঘটনা না ঘটে তার জন্যও বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। একইসঙ্গে জেলার ভোটযুদ্ধে বিবদমান রাজনৈতিক দলগুলিও তাদের কর্মীদের কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছে।

ভোট ফল প্রকাশের পরে যাতে অশান্তি না হয় তার জন্য কর্মীদের কোনওরকম প্ররোচনার ফাঁদে পা না দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সিপিএমের জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার জানান। তিনি বলেন, ‘‘বামফ্রন্ট কর্মীদের বলা হয়েছে যে সব প্রার্থী জিতবেন তাঁদের হয়ে কোনও বিজয় মিছিল করা যাবে না। বামফ্রন্টের কোনও কর্মী আক্রান্ত হলে সম্মিলিত ও শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করতে হবে।’’

তৃণমূলের জেলা সদর সভাপতি অরূপ রায় এবং গ্রামীণ জেলা সভাপতি পুলক রায় বলেন, ‘‘তৃণমূল হিংসায় বিশ্বাস করে না। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচন, ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরে কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি। এবারেও দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি কোনও হিংসা হবে না। রুক্ত ঝরুক, এটা কাম্য নয়।’’ আমতার কংগ্রেস প্রার্থী অসিত মিত্রও দলীয় কর্মীদের কোনও প্ররোচনায় পা না দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।

সতর্ক প্রশাসনও। বুধবার থেকেই জেলার উত্তেজনাপ্রবণ এলাকাগুলি চিহ্নিত করে সেখানে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। গণনার পরেও এই নজরদারি বাড়ানো হবে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, যে ভাবে নির্বাচন হয়েছে সেই ভাবেই গণনার পরেও জেলাকে হিংসার হাত থেকে মুক্ত রাখার জন্য যা প্রয়োজন তা করা হবে। থাকছে ত্রিস্তর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রথমে থাকবে লাঠিধারী পুলিশ। তার পরে থাকছে সশস্ত্র পুলিশ। মূল গণনা যেখানে হবে সেটিকে ঘিরে থাকবে কেন্দ্রীর বাহিনী। তিনটি গণনাকেন্দ্রে নয়শো রাজ্য পুলিশ এবং ২ কম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে।

বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল দেখানোর পর হুগলির আরামবাগ, হরিপাল, তারকেশ্বরের বিভিন্ন জায়গায় শাসক এবং বিরোধীদের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নিয়েছে। গোঘাটের একটি ঘটনায় শাসক এবং বিরোধীদের গ্রেফতার পর্যন্ত করেছে পুলিশ। তার উপর যে কোনও ধরনের ঘটনা এড়াতে বিজয় মিছিলের উপর প্রশাসন আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তার উপর আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যে সব মদের দোকান এবং বারগুলি খোলা থাকার ব্যাপারেও প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

হুগলির এক পদস্থ পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘ভোট গণনার আগে সর্বদলীয় বৈঠকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে বার বার সর্তক করা হয়েছে। তাঁরাও আমাদের কথা দিয়েছেন নিজেদের কর্মী সমর্থকদের সংযত রাখতে সচেষ্ট থাকবেন। এরপরও কোনও বিচ্যুতি দেখলে পুলিশ কড়া হাতে মোকাবিলা করবে।’’

জেলার এক প্রবীণ সিপিএম নেতার কথায়, ‘‘আমাদের সমর্থকদের সংযত করার জায়গা কোথায়? আমরাই তো বারবার আক্রান্ত হচ্ছি। আমরা চাই যে দলই জিতুক, রক্ত যেন না ঝরে।’’

ভোট গণনার কাজে বুধবার রাত থেকেই চন্দননগর, শ্রীরামপুর, আরামবাগ এবং চুঁচুড়ায় সব দলের নেতা-কর্মীরা গণনাকেন্দ্রে সময়মত পৌঁছতে রাতেই এসে গিয়েছেন। হুগলিতে শাসকদলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘প্রশাসনের কাছে মিথ্যা অভিযোগ না করতে আমরা সব দলকেই অনুরোধ করছি। আমাদের ছেলেদেরও কোনও প্ররোচনায় পা না দিতে ও সংযত থাকতে বলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016 TMC Congress Vote result
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE