Advertisement
E-Paper

ঘুষ-তদন্তে মুকুলকে বাঁধতে তৎপর সিপিএম

গোপন ভিডিও-র ঘুষ-কাণ্ডে তদন্তের আওতা থেকে মুকুল রায় যাতে কোনও ভাবেই ছাড় না-পান, তার জন্য ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে সিপিএম।সিপিএম সূত্রের খবর, রাজ্যসভার এথিক্স কমিটি যাতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মুকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখা শুরু করে, সিপিএম এখন তারই চেষ্টা চালাবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৬ ০৪:১৩

গোপন ভিডিও-র ঘুষ-কাণ্ডে তদন্তের আওতা থেকে মুকুল রায় যাতে কোনও ভাবেই ছাড় না-পান, তার জন্য ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে সিপিএম।

সিপিএম সূত্রের খবর, রাজ্যসভার এথিক্স কমিটি যাতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মুকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখা শুরু করে, সিপিএম এখন তারই চেষ্টা চালাবে। তাদের যুক্তি, এথিক্স কমিটি নিজে থেকে যে কোনও সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পারে। নিয়ম অনুযায়ী কমিটির সেই এক্তিয়ার রয়েছে।

তৃণমূল সাংসদদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ লোকসভায় এথিক্স বা নীতি কমিটির কাছে পাঠানো হলেও রাজ্যসভার এথিক্স কমিটির কাছে তা পাঠানো হয়নি। নারদ নিউজের ভিডিও-য় রাজ্যসভার সাংসদ মুকুল রায়ের বিরুদ্ধেও ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যসভার এথিক্স কমিটিতে না-যাওয়ার অর্থ, মুকুলের বিরুদ্ধে কোনও সংসদীয় তদন্ত হবে না। সিপিএম এক দিকে বিষয়টিকে বিজেপি-তৃণমূলের গোপন আঁতাত বলে প্রচার চালালেও সংসদের লড়াইয়ে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে

রাজি নয়।

ঘটনাচক্রে মুকুল রায় নিজেই রাজ্যসভার এথিক্স কমিটির সদস্য। রয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরিও। এই এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা কর্ণ সিংহ। কমিটিতে রয়েছেন, বসপা-র সতীশ মিশ্র, জেডি(ইউ)র শরদ যাদবের মতো সিনিয়র নেতারা। সিপিএমের যুক্তি— এথিক্স কমিটি নিজে থেকেই যে কোনও সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পারে। তার সেই ক্ষমতা ও এক্তিয়ার রয়েছে। মুকুলের বিরুদ্ধে তদন্ত হলে রেওয়াজ অনুযায়ী তাঁকে কমিটি থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। মুকুল নিজেও তা জানেন। তিনি বলেছেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত রাজ্যসভার নীতি কমিটির কাছে বিষয়টি পাঠানো হয়নি। যদি হয়, তা হলে নিয়ম অনুযায়ী পদত্যাগ করাটাই উচিত।’’ সে ক্ষেত্রে কমিটির সদস্যপদের জন্য অন্য কারও নাম পাঠাবে তৃণমূল।

সোমবার যে দিন নারদ নিউজের ভিডিও প্রকাশ্যে আসে, সে দিনই বৈঠকে বসেছিল রাজ্যসভার এথিক্স কমিটি। সে দিন অন্য দু’টি বিষয় থাকলেও কিংফিশারের কর্ণধার বিজয় মাল্যর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়। মাল্য রাজ্যসভার সদস্য। বিষয়ের গুরুত্ব বুঝে তাঁর বিষয়টি নিয়েই আগে আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়। কমিটির পরবর্তী বৈঠকের দিনক্ষণ এখনও ঠিক না-হলেও সেখানে একই ভাবে ইয়েচুরি মুকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে খতিয়ে দেখার দাবি তুলবেন। রাজ্যসভার তরফে এখনও বিষয়টি এথিক্স কমিটিতে পাঠানো না-হলেও কমিটি যাতে নিজেই বিষয়টি তদন্ত করে, সেই দাবিতেও সরব হবেন তিনি।

আজ এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ইয়েচুরি বলেন, ‘‘রাজ্যসভার অধিবেশন চলাকালীনই আমরা ডেপুটি চেয়ারম্যানের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম— বিষয়টি এথিক্স কমিটিতে পাঠানো হোক। কিন্তু তিনি প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, তাঁর কিছু করার নেই। সরকারকে সায় দিতে হবে।

এই কারণেই আমরা বলছি যে বিজেপি-তৃণমূলের মধ্যে ম্যাচ ফিক্সিং হয়ে গিয়েছে।’’

সিপিএমের কেন্দ্রীয় সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য নীলোৎপল বসু বলেন, ‘‘তৃণমূল সকালে সংসদ চত্বরে আধার-এর বিরুদ্ধে ধর্না দিল। অথচ রাজ্যসভায় এই বিলে সরকারের বিরুদ্ধে ভোট না-দিয়ে তারা সরকারের সুবিধা করে দিল। ডেপুটি চেয়ারম্যান নিজে যখন বলছেন, সরকারের সায় প্রয়োজন। অরুণ জেটলি চুপ করে সভায় বসে রয়েছেন। অথচ তাঁর ঘাড়েই দেশের দুর্নীতি দূর করার দায়িত্ব।’’

তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন রাজ্যসভায় অভিযোগ তুলেছিলেন, ওই স্টিং অপারেশনে বিদেশের কালো টাকা ব্যবহার হয়েছে। ইয়েচুরি বলেন, ‘‘যদি বিদেশের কালো টাকা ব্যবহার হয়ে থাকে, তার তদন্ত হোক। কিন্তু এই অভিযোগ তোলার অর্থ, তৃণমূল নিজেরাই স্বীকার করে নিচ্ছে সেই টাকা হাতবদলও হয়েছে।’’ নীলোৎপলের শ্লেষ— ‘‘কালো টাকা হাতবদল হয়েছে, আবার ভিডিওটি জাল— দু’টো তো এক সঙ্গে সত্যি হতে পারে না!’’

assembly election 2016
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy