বাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর হল। চলল অবাধে লুঠপাটও। অথচ সেই আক্রান্তদেরই গ্রেফতার করল পুলিশ!
পুলিশ সুপার বদলে গেলেও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ থেকে নিজেদের দূরে রাখতে পারল না বীরভূম জেলা পুলিশ, এমনটাই দাবি করছে বিরোধীরা। পাড়ুইয়ের পরেই ভোট পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত হল সিউড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত দুবরাজপুরের পারুলিয়া পঞ্চায়েতের মাজিগ্রাম। যেখানে তৃণমূলকে ভোট না দেওয়ার অপরাধে বাম কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুঠপাটের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের ঘটনায়। কিন্তু, সোমবার রাতের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পুলিশ যে ছ’জনকে ধরেছে, তাঁদের চার জনই বাম কর্মী-সমর্থক। যার পরেই পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন জেলার বাম নেতৃত্ব। তৃণমূল যদিও গোটা ঘটনার দায় বামেদের ঘাড়েই চাপিয়েছে। এক দলীয় কর্মীর স্ত্রীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া ও লুঠপাটের পাল্টা অভিযোগও করেছে তৃণমল। দু’পক্ষই মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা পক্ষপাতের অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া মেলেনি জেলার নতুন এসপি সব্যসাচীরমণ মিশ্রের। তিনি এ দিন ফোন ধরেননি, এসএমএস-এরও উত্তর দেননি।
সিপিএমের দাবি, সোমবারের ঘটনায় দলীয় কর্মী সুনীল মাজির বাড়ি থেকে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা চারটি গরু চুরি করেছে, তাঁর ছেলের দোকানও ভাঙচুর করা হয়েছে। সেই সুনীলবাবুকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি ছাড়া বাকি ধৃতেরা হলেন মনচোরা বাউড়ি, ফটিক বাউড়ি, নীলকান্ত ধারা ও সুরেশ মণ্ডল। সুরেশবাবুকে দলীয় কর্মী বলে দাবি করেছে তৃণমূল। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা ওই কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী রামচন্দ্র ডোমের অভিযোগ, ‘‘শাসকদল যেখানেই ইচ্ছেমতো ভোট করাতে পারেনি, সেখানেই প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করছে। মাজিগ্রামে আক্রমণের কারণ সেটাই।’’ তাঁর দাবি, স্থানীয় হাজরাপুর থেকে লোকজন জন নিয়ে এসে মাজিগ্রামে দলীয় কর্মী-সমর্থকদেরে বাড়িতে হামলা চালায় তৃণমূল। বাড়ি থেকে গরু-ছাগল খুলে নিয়ে চলে যায়, লুঠপাট ভাঙচুর চালায়। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘আমরা সাহায্য চাইলে গ্রামে গিয়ে আক্রান্তদেরই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিচুতলার পুলিশকর্মীদের এই ভূমিকা নিন্দনীয়।’’