Advertisement
E-Paper

দেব-দর্শন জনতার, স্বস্তি তৃণমূলে

‘দে..ব....’ ‘দে..ব..’— মাথার উপর চপারটাকে চক্কর কাটতে দেখেই গর্জে উঠল গোটা মাঠ। একটু ঠাহর করে না দেখলে ভুল হতে পারে, এটা রাজনৈতিক প্রচার সভা, না কি দেব-দর্শনের ভিড়।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৫৩
মাঠ উপচেছে ভিড়ে। কালনা অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামে। নিজস্ব চিত্র।

মাঠ উপচেছে ভিড়ে। কালনা অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামে। নিজস্ব চিত্র।

‘দে..ব....’ ‘দে..ব..’— মাথার উপর চপারটাকে চক্কর কাটতে দেখেই গর্জে উঠল গোটা মাঠ। একটু ঠাহর করে না দেখলে ভুল হতে পারে, এটা রাজনৈতিক প্রচার সভা, না কি দেব-দর্শনের ভিড়। মঙ্গলবার কালনার অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামের ওই ভিড়টা দেখে প্রচারের শেষ বেলায় খানিকটা হলেও অক্সিজেন খোঁজার চেষ্টা করলেন কালনা মহকুমার তৃণমূল নেতৃত্ব।

বেলা ১০টায় সভা হওয়ার কথা। কিন্তু প্রায় ঘণ্টা দেড়েক কেটে গিয়েছে, এখনও নেতাদের, থুড়ি দেবের দেখা নেই। মাথার উপর গনগনে রোদ্দুর। তবে তাতেও ভিড় পাতলা হওয়ার নাম নেই। কেউ সঙ্গের গামছা, তোয়ালে দিয়ে ঘাম মুছছেন। কেউ বা আবার ঘনঘন গলাটা একটু ভিজিয়ে নিচ্ছেন।

অপেক্ষার শেষ। ১১টা ৫০ মিনিট। হেলিকপ্টার থেকে দুজনকে নামতে দেখা গেল। ‘পাগলু’, ‘রোমিও’-র নায়ক নেমে পড়েছেন মাঠে। ততক্ষণে স্টেডিয়াম জুড়ে ঠাসা ভিড়টা ‘পাগলু’, ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ সিনেমার নায়কের নাম ধরে ডাকা শুরু করে দিয়েছে। কালনা শহর থেকে এক সঙ্গে এসেছিল দুই বন্ধু। একজন তো বলে বসে, ‘‘দেখলি দেব আমাদের দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ল!’’

ততক্ষণে মঞ্চে উঠে পড়েছেন অন্যান্য নেতা-নেত্রীরাও। বেশ কয়েকজন নেতা-নেত্রীকে আবার দেবের সঙ্গে ছবি তুলতেও দেখা যায়। কেউ রেখে দেন অটোগ্রাফ। অটোগ্রাফ পেয়ে বেজায় খুশি এখ তৃণমূল কর্মী। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলে আসতে পারেনি। কিন্তু আব্দার করেছিল সই চাই।’’

দেবকে দেখতে ভিড় যে হবে, আঁচ করে আয়োজকেরা মঞ্চের চারপাশে বাঁশের ব্যারিকেড দেওয়া হয়। তবে তাতে তেমন কাজ হয়নি। পরনে সাদা জামা, হাল্কা সবুজ প্যান্ট আর রোদ চশমা পরে নায়ককে একটি বার ছুয়ে দেখতে উৎসাহী মানুষজন ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন। নায়ককে মোবাইল বন্দি করার জন্য শুরু হয় ব্যাপক হুড়োহুড়ি। উসাহের চোটে অনেককে মাটিতে আছাড় খেয়ে খাবি খেতেও দেখা গেল।

তবে নায়কও এ দিন নিরাশ করেননি ভক্তকুলকে। কখনও গায়ের উত্তরীয়, কখনও বা ফুলের তোড়া ছুড়ে দেন ভক্তদের লক্ষ করে।

মঞ্চে বক্তব্য রাখেন মুকুল রায়, স্বপন দেবনাথ, দেবু টুডু, কালনা ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি প্রণব রায় প্রমুখ। তবে উপস্থিত কর্মী-সমর্থকদের বক্তব্যে বিশেষ মন ছিল না বলেই দেখা যায়। কলেজ ছাত্রী মালতী ঘোষ, দেবমালা কর্মকারদের বক্তব্যেও সেই রেশ দেখা যায়। এক জন বলেই ফেলে, ‘‘বকবক নয়। দেবের সঙ্গে ছবি তুলব বলে এসেছি।’’ একই কথা স্কুল পড়ুয়া সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। সে বলে, ‘‘ছবি তোলার ইচ্ছে ছিল, হয়নি। কিন্তু খুব কাছ থেকে দেখলাম।’’

প্রচারের শেষ দিনে এমন বিড় খানিকটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে শাসক শিবিরকে। কারণ এর আগে বেশ কয়েকটি প্রচারসভায় আশানুরূপ ভিড় হয়নি বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীকে দিয়েও কালনা শহরে প্রচার চালানো হয়। বেশ কয়েকটি পথসভাও করেন। কিন্তু তারপরেও তেমন ভিড় জমেনি বলে শাসক দলের সূত্রে খবর। এ দিনের ভিড় দেখে বেশ চাঙ্গা দেখিয়েছে শাসকদলকে। বর্ধমানের জেলা সভাপতি দেবু টুডু তো বলেই ফেললেন, ‘‘মানুষের ভিড়ই বলে দিচ্ছে ফল কী হতে চলেছে। আর দীপক অধিকারী তো দলেরই সাংসদ।’’ তবে এই ভিড়কে তেমন পাত্তা দিতে নারাজ সিপিএম। সিপিএমের কালনা জোনাল কমিটির সদস্য স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘‘ভিড়ে যাঁরা ছিলেন তাঁদের অনেকেই ভোটার নন। অনেকেই শুধু দেবকে দেখতে গিয়েছিলেন। ফলে ভিড় নিয়ে আমরা ভাবছিই না।’’

assembly election 2016 TMC Dev
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy