Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Election 2021

শাসকের ঘরে কোন্দল-কাঁটা জেলা সদরে

তৃণমূল সূত্রের খবর, তমলুক বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হতে পারেন সৌমেনবাবু। তাই তিনি ইতিমধ্যেই দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে ক্ষোভ প্রশমিত করার চেষ্টা করেছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২১ ০৬:২৫
Share: Save:

কখনও কাঁটায় কাঁটায় টক্কর দিয়ে আসন ছিনিয়ে নিয়েছে বামফ্রন্ট। তো লোকসভা ভোটে ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে গেরুয়া শিবির। পূর্ব মেদিনীপুর তথা ‘অধিকারীদের গড়ে’ তমলুক বিধানসভায় গত কয়েক বছরে কিছুটা হলেও নড়েছে জোড়াফুলের সিংহাসন। আর তা দেখেই আসন্ন বিধানসভা ভোটে গেরুয়া শিবিরের দিকেই পাল্লা ভারী বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

পাঁচ বছর আগে বিধানসভার ভোটে রাজ্য জুড়ে ছিল তৃণমূলের জয়জয়কার। কিন্তু যে জেলা থেকে রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের উত্থান বলে দাবি করা হয়, সেই পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক বিধানসভায় তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা নির্বেদ রায়কে হারিয়ে বাম শরিক সিপিআই প্রার্থী অশোক দিন্দার জয় রাজনৈতিকমহলে আলোড়ন ফেলেছিল। তমলুক বিধানসভায় ৫২০ ভোটের ব্যবধানে জয় হয়। তৃণমূলের শক্তঘাটি তমলুকে পরাজয়ের কারণ হিসেবে উঠে আসে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে শাসকদলের তীব্র গোষ্ঠী কোন্দল।

গত লোকসভা ভোটে তমলুক কেন্দ্রে তৃণমূলের হয়ে লড়েছিলেন তৃণমূল নেতা তথা অধিকারী পরিবারের সদস্য দিব্যেন্দু অধিকারী। তিনি জয়ী হলেও তাঁকে সমানে টক্কর দিয়েছেন বিজেপির প্রার্থী সিদ্ধার্থ নস্কর। বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে বিজেপির চেয়ে তৃণমূল এগিয়েছিল প্রায় পাঁচ হাজার ভোটে। আবার তমলুক ব্লকের চারটি পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূল পিছিয়ে ছিল প্রায় এক হাজার ভোটে।

লোকসভা ভোটের পরে কেটে গিয়েছে প্রায় দু’বছর। এর মধ্যে জল গড়িয়েছে জেলা রাজনীতিতে। এক সময় পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের কাণ্ডারি শুভেন্দু অধিকারী গত ডিসেম্বরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক অশোক দিন্দা এবং তমলুক শহর তৃণমূলের সভাপতি বিশ্বনাথ মহাপাত্র। এছাড়া, ‘দাদার অনুগামী’ হিসাবে শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ দলবদল করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রের খবর, শুভন্দুর দলবদলের পরেও এই বিধানসভা এলাকায় একাধিক তৃণমূল নেতার মধ্যে কোন্দল দেখা দিয়েছে। অনেকে ক্ষোভও প্রকাশ করেছিনেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্রের কাছে। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন শরৎ মেট্যা।

তৃণমূল সূত্রের খবর, তমলুক বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হতে পারেন সৌমেনবাবু। তাই তিনি ইতিমধ্যেই দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে ক্ষোভ প্রশমিত করার চেষ্টা করেছেন। যদিও রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, এর পরেও দুর্নীতি এবং অনুন্নয়ন হাতিয়ার করে গেরুয়া শিবির নিজেদের দিকে পাল্লা ভারি করতে পারে। এছাড়া, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে একসময় তৃণমূলের দাপুটে নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি দিবাকর জানা এবং তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জয়দেব বর্মণের কোন্দল তো এখনও অব্যাহত রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করতে জেলা নেতৃত্বকে হিমসিম খেতে হচ্ছে বলে খবর। যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেনের দাবি, ‘‘সমর্থনের দিক থেকে আমরাই এগিয়ে রয়েছি। জয়লাভ নিয়ে কোনও সংশয় নেই।’’ অন্যদিকে বিধানসভা নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান শরতের দাবি, ‘‘কোন্দল আগে ছিল। এখন মিটে গিয়েছে। আমরা সবাই এক সঙ্গে প্রচার চালাচ্ছি।’’

বিজেপি’র জেলা (তমলুক) সভাপতি নবারুণ নােয়ক বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটে আমরা সংগঠনহীন অবস্থাতেও ভাল ফল করেছি। এবার ২০ থেকে ২২ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP West Bengal Election 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE