বামেদের পর এ বার প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়ে দিলেন জোট নিয়ে তাঁদের আন্তরিকতায় কোনও ঘাটতি নেই। রবিবার প্রদেশ কংগ্রস সভাপতি অধীর চৌধুরী জানিয়েছেন, যে সব কেন্দ্রে তাঁদের প্রার্থী নেই সে ক্ষেত্রে কংগ্রেস কর্মী ও সমর্থকরা সর্বতভাবে বামফ্রন্টের প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত করার জন্য প্রচার করবে।
ইতিমধ্যেই কংগ্রেস কর্মীরা বামফ্রন্ট প্রার্থীদের জন্য রাজ্যের সর্বত্র প্রচার শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু দলের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই যৌথ প্রচারের নির্দেশ এবং অনুরোধ আগে করা হয়নি। এ দিন অধীর বলেন, ‘‘যে সব কেন্দ্রে জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী নেই সেই সব কেন্দ্রে কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা সর্বতভাবে বামফ্রন্ট প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত করবে। এই প্রক্রিয়াতেই স্বৈরাচারী তৃণমূল কংগ্রেস পরাস্ত হবে এবং রাজ্যে ধর্ম-নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক জোটের সরকার প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে।’’
কংগ্রেস কর্মী, সমর্থকদের দেওয়া অধীরবাবুর এই নির্দেশে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাম নেতৃত্ব। সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘ আমরা তো আগেই আমাদের কর্মী-সমর্থকদের কংগ্রেস প্রার্থীদের সমর্থনে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছি। কংগ্রেস কর্মীরাও প্রায় সর্বত্রই আমাদের কর্মীদের সঙ্গে এক জোট হয়ে প্রচার করছেন। আসলে এ বার মানুষের জোট তৈরি হয়েছে।’’
জোটের ছবি পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি বেড়ে চলেছে তৃণমূল নেতৃত্বের দুশ্চিন্তাও। এ দিন পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডির সভায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোটকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘সিপিএম-এর হাতে ৫০ হাজার কংগ্রেস কর্মী খুন হয়েছে। সেই সিপিএম-এর সঙ্গে কংগ্রেস হাত মিলিয়েছে। তৃণমূল নরম মাটি নয় যে ইঁদুরে খামচালে ঝুরঝুর করে পড়ে যাবে। শক্ত মাটি। বাঘ আঁচড়ালে নখ ভেঙে যাবে, সিংহ আঁচড়ালেও নখ ভেঙে যাবে।’’ যারা সত্যিই বামপন্থীদের ভালবাসে তাদের কংগ্রেসকে ভোট দিতে বারণ করেন মমতা। জোটকে এক হাত নিতে গিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙায় একটি সভায় শুভেন্দু বলেন, ‘‘জোটের মুখ অধীরবাবু তো বিদ্যালয়ের মুখ দেখেননি।’’
এ দিন শিলিগুড়িতে সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির কংগ্রেস প্রার্থী শঙ্করবাবুকে সঙ্গে নিয়ে প্রচার করেছেন। সিপিএম এবং কংগ্রেসের নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে শিলিগুড়ির মাটিগাড়়া-নকশালবাড়ি কেন্দ্রে দু’দলের কর্মীদের নিয়ে এক সঙ্গে গড়া হচ্ছে বুথ কমিটিও। ওই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী শঙ্কর মালাকার রবিবার প্রচার মিছিলের শেষে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ঢুকে পড়েন সিপিএমের লোকাল কমিটির অফিসে। দু’দলের প্রচার কর্মসূচিতে সমন্বয় গড়ে তুলতেই শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সিপিএমের সভাধিপতি তাপস সরকার, সিপিএম নেতা ভবেন্দু আচার্যরা প্রস্তাব দেন বুথ স্তরে যৌথ কমিটি হোক। ওই প্রস্তাবে শঙ্করবাবুরাও একমত হন। ঠিক হয়েছে, ১৫ এপ্রিল জোটের মহামিছিল হবে শিলিগুড়িতে। তাতে নেতৃত্ব দেবেন সূর্যকান্ত মিশ্র। সোমবার মনোনয়নের মূল মিছিল শুরু হবে শিলিগুড়ির হাসমিচকে কংগ্রেস পার্টি অফিসের সামনে থেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy