পাছে গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে দেরি হয়, তাই আগের রাতে কাছাকাছি এলাকায় হোটেল-লজে ও পার্টি অফিসে রাত্রিবাসে ঢল জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাউন্টিং এজেন্টদের। অন্যবার গণনা শুরু হয় সকাল আটটা থেকে। এ বার নির্বাচন কমিশন থেকে সকাল সাড়ে ছ’টায় গণনা কেন্দ্রে প্রবেশ করার কথা জানাজানি হতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলগুলি। সেই মতো রামপুরহাট, বোলপুর ও সিউড়িতে তারা ব্যবস্থা নিয়েছে।
মঙ্গলবার সেই নিয়েই ব্যস্ততা দেখা গেল রামপুরহাট মহকুমা প্রশাসনিক কার্যালয় ভবনের চত্ত্বরে।
রামপুরহাট, হাঁসন, নলহাটি, মুরারই— এই চারটি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটগণনার জন্য দলীয় এজেন্টদের নামের তালিকা নিয়ে সমস্ত দলের নেতৃত্ব রা প্রশাসনিক ভবনের একতলা থেকে দোতলা ওঠানামা করছেন। হাঁসন বিধানসভা কেন্দ্রের নলহাটি থানার বাঁধখালা থেকে আসা এক সিপিএম কর্মী বলেন, ‘‘সাড়ে ছটার সময় সমস্ত এজেন্টদের গণনা কেন্দ্রের ভিতর চলে আসার নির্দেশ। একবার ঢুকে যাওয়ার পর গণনা কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে গেলে আর ঢোকা যাবে না। তাই স্নান সেরে সঙ্গে জবরদস্ত টিফিন করে নিতে হবে। অগত্যা থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রয়োজন মতো কাউন্টিং এজেন্টদের জন্য আলাদা করে ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোথাও লজে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে, কোথাও বা পার্টি অফিসে।’’ একই কথা বলেন জেলা সিপিএমের নেতা পল্টু কোঁড়া। নলহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের এক সিপিএম নেতা জানালেন, রামপুরহাটে একটি লজে কর্মীদের ১৮ তারিখ রাতে ১৪ জন এজেন্ট-সহ কুড়ি জনের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
সকাল সকাল যাতে গণনা হলে ঢুকে পড়তে পারেন, সেই জন্য এজেন্টদের গণনাকেন্দ্রের কাছে রাখছে বিজেপিও। খয়রাশোলের এজেন্টদের সিউড়ি পার্টি অফিসে আগের দিন রাতে নিয়ে এসে রাখার কথা জানালেন বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়। মুরারই, নলহাটি, হাসন বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীর এজেন্টরাও থাকছেন রামপুরহাটে লজে। রামপুরহাট স্টেট ব্যঙ্ক লাগোয়া সেই লজেই আবার জোট প্রার্থীর কুড়ি জন এজেন্টও থাকবেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাড়ে ছটা থেকে পোস্টাল ব্যালট ট্রেজারি অফিস থেকে গণনাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে। সেই সময় কোনও দলের এজেন্ট, পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গী হতেও পারেন। ট্রেজারি অফিস থেকে ব্যালট পৌঁছে যাওয়ার পর সাড়ে সাতটার সময় স্ট্রং রুম খোলা হবে। সেই সময়ও এজেন্টদের উপস্থিতি প্রয়োজন। আবার পৌনে আটটা নাগাদ পোস্ট অফিস থেকে পোস্টাল ব্যালট নিয়ে আসা হবে। সুতরাং সে সময়ও এজেন্টদের উপস্থিতি দরকার। ৮ টার সময় ইভিএম মেশিন খোলা হবে। সেই সময়ও টেবিলে টেবিলে এজেন্টদের উপস্থিতি দরকার।
জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকেও জেলার তিন গণনাকেন্দ্রে এজেন্টদের পৌঁছনোর সুবিধার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রামপুরহাট মহকুমা শাসক সুপ্রিয় দাস বলেন, ‘‘রামপুরহাট ও হাঁসন বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য ১৯ রাউন্ড গণনা হবে ১৪টি টেবিলে। মুরারই কেন্দ্রের জন্য ২০ রাউন্ড হবে ১৪ টি টেবিলে। আর নলহাটি বিধানসভা কেন্দ্রে গণনা হবে ১৮টি রাউন্ডে ১৪টি টেবিলে।” নিয়ম অনুযায়ী পোস্টাল ব্যালট গণনা হয়ে যাওয়ার আগে এক রাউন্ড গণনা বাকী রেখে দেওয়া হবে। পোস্টাল ব্যালট গণনা শেষ হওয়ার পরে ওই রাউন্ডের গণনা হবে বলে জানান মহকুমাশাসক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy