Advertisement
E-Paper

মাঠে নেমে ভোট করতে প্যারোল চাইলেন মদন

পথে নেমেছে তাঁর গোটা পরিবার। এলাকার উন্নয়নে শেষ মুহূর্তের প্রসাধন হিসেবে এখনও রাস্তায় পিচ পড়ছে এখানে-ওখানে। যদিও নিয়ম বাঁচিয়ে। ভোট ঘোষণার আগের টেন্ডারে। কিন্তু যাঁর জন্য এত কিছু, তিনিই তো জেলে! দল প্রার্থী করলেও প্রচারে নিজে নেই ‘দাদা’।

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৬ ০৪:২১

পথে নেমেছে তাঁর গোটা পরিবার। এলাকার উন্নয়নে শেষ মুহূর্তের প্রসাধন হিসেবে এখনও রাস্তায় পিচ পড়ছে এখানে-ওখানে। যদিও নিয়ম বাঁচিয়ে। ভোট ঘোষণার আগের টেন্ডারে। কিন্তু যাঁর জন্য এত কিছু, তিনিই তো জেলে! দল প্রার্থী করলেও প্রচারে নিজে নেই ‘দাদা’। তাঁর হয়ে ভোট চাইছেন পরিবারের সকলে ও অনুগামীরা। কিন্তু প্রচারের শেষ লগ্নে ১৩টা দিনও যদি সশরীর হাজির হতে পারতেন এলাকায়! নিজের মুখে, নিদেনপক্ষে লিফলেটে জানাতে পারতেন, মানুষের সমর্থন পেলে কী কী করতে চান আগামী পাঁচ বছরে! এ সব মাথায় রেখেই প্যারোলে ক’টা দিনের জন্য মুক্তি চেয়েছেন সারদা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত বিচারাধীন বন্দি মদন মিত্র।

নিজের ইচ্ছার কথা জানিয়ে কারা দফতরের কাছে গত বৃহস্পতিবার আবেদনও জানিয়েছেন কামারহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মদন। সোমবার প্রাক্তন মন্ত্রীর সেই আবেদন বিবেচনার জন্য রাজ্যের নির্বাচন দফতরে পাঠিয়েছে কারা দফতর। চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে নিলেও নির্বাচন কমিশনের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘সবেমাত্র চিঠি এসেছে। দিল্লির সঙ্গে কথা বলেই এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

শুধু আগামী ১০ এপ্রিল থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত প্যারোলে মুক্তি চেয়ে আর্জি জানানোই নয়, ভোট প্রচারে নিজের লেখা লিফলেট বিলি করার জন্যেও কারা দফতরের কাছে আবেদন জানিয়েছেন মদন। রাজ্য কারা দফতরের এডিজি অরুণকুমার গুপ্ত দু’টি আর্জিই (‌মেমো নং-১০৭/এডিজি/১৬) বিবেচনা করে দেখে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়ার জন্য এ দিন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

রাজ্যে নির্বাচন ঘোষণার দিনই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কামারহাটিতে প্রার্থী হিসেবে বন্দি মদনের নাম ঘোষণা করেন। এর পর থেকেই গোটা এলাকায় কোমর বেঁধে ভোট প্রচারে নেমে পড়েছেন মদন মিত্রের পরিবার এবং তাঁর অনুগামীরা। জেলে বসেই ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে ভোট-যুদ্ধের রণনীতি ঠিক করছেন মদন। দলীয় কর্মীদের নিয়মিত বার্তা পাঠাচ্ছেন। তবু নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না তিনি। বিশেষ করে বিরোধীদের প্রচারের মুখে তাঁর সশরীর উপস্থিতি একান্তই জরুরি বলে মনে করছেন তিনি। তাই অন্তত ১৩টা দিন নিজেই কামারহাটিতে থেকে ‘ভোট করতে’ মরিয়া মদন।

সবিস্তারে দেখুন

বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন সিপিএমের পোড়খাওয়া নেতা তথা এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায়। সিপিএম ও কংগ্রেস জোটের নেতারা কামারহাটি জুড়ে তাঁদের প্রচারে জেলবন্দি তৃণমূল প্রার্থী জিতলে বাসিন্দারা বিপদে পড়বেন বলে প্রচার করছেন। বিরোধীদের বক্তব্য, যিনি ভোটের প্রচারেই এলাকায় আসার অনুমতি পান না, তিনি সারা জীবন জেলেই থাকবেন। বিধায়কের একটা শংসাপত্র নিতেও ভোটারদের জেলে ছুটতে হবে। বিরোধীদের এই প্রচারকে মিথ্যে প্রমাণ করতেও জেল থেকে বেরোনোটা তাঁর পক্ষে জরুরি। সে কারণেই গত ২৪ মার্চ তিনি রাজ্য কারা দফতরের কাছে আবেদন করেছেন। মদন-ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, ‘‘দাদা প্রথমে জেলে থেকেই নির্বাচনে লড়বেন বলে ঠিক করেছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টে যাওয়ায় দিন বারো-তেরোর জন্য বাইরে আসতে চাইছেন।’’

আলিপুর জেল সূত্রের খবর, একান্তই প্যারোলে মুক্তি না পেলে জেল সুপারের মাধ্যমে নির্বাচনের মনোনয়নপত্র পেশ করবেন মদন মিত্র। সে ক্ষেত্রে তাঁর আইনজীবীরা মনোনয়নপত্র তুলে তা পৌঁছে দেবেন জেলে। সেখানে সুপারের সামনে শপথ নিয়ে মনোনয়নপত্র পূরণ করবেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তার পরে তার একটি প্রতিলিপি নিজের কাছে রেখে মূল কপিটি সুপার পাঠিয়ে দেবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে।

এখনও মদনের লেখা লিফলেট বিলি করার অনুমতি না মেলায় তাঁর স্ত্রী অচর্না মিত্রের একটি আবেদন বাড়ি-বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। বক্তব্য, ‘পতির লড়াই সতীর লড়াই। এ লড়াই জিততে হবে।’

assembly election 2016 parole Madan Mitra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy