এ বলে আমায় দেখ, তো ও বলে আমায়!
চতুর্থ দফা ভোট শেষ হওয়ার তখনও ঘণ্টাখানেক বাকি। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করলেন, তাঁর দল এই চার দফাতেই সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন নিজেদের ঘরে তুলে নিতে পেরেছে। এখনও দু’দফা ভোট বাকি রয়েছে। মমতার দাবি, ওই দুই দফায় যে ক’টি আসন পাওয়া যাবে তা ‘ম্যাজিক ফিগার’-এ বাড়তি সংখ্যা যোগ করবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা হিসেব করে ফেলেছি। আপনারা ভোটের ফল প্রকাশ পেলে মিলিয়ে নেবেন।’’
তিনি যখন এই দাবি করছেন, তখন প্রায় একই সুরে কথা বললেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সোমবারের আগে পর্যন্ত যতগুলো আসনে নির্বাচন হয়েছে, সেখান থেকেই বাম ও গণতান্ত্রিক জোট ১০০-র বেশি আসন পাচ্ছে। মানুষের এই জোট ধীরে ধীরে ডাবল সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছে। ১৯ মে-র পর ধর্ম নিরপেক্ষ নতুন গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’’ তাঁর আরও দাবি, মানুষের ভোট দেওয়ার যে প্রবণতা তাঁরা দেখছেন, তাতে তৃণমূল শেষ পর্যন্ত তিন অঙ্কে পৌঁছতে পারবে না।
আরও পড়ুন: তৃণমূল এজেন্টের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, কমিশনের নজরদারিতে রূপা
চতুর্থ দফায় উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়ার ৪৯টি আসনে এ দিন ভোট ছিল। বিক্ষিপ্ত কিছু হিংসার অভিযোগ ছাড়া ভোট মিটেছে মোটামুটি শান্তিতেই। কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা আগের চেয়ে বেশি সক্রিয় ছিল বলে জানিয়েছে প্রধান বিরোধী দল সিপিএম। সূর্যবাবুর দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, প্রায় ১২৪০০টি বুথে নির্বাচন হয়েছে। তার মধ্যে বুথ দখল, ছাপ্পা দেওয়ার চেষ্টা, এজেন্টদের মেরে বার করে দেওয়া, ভোটারদের হুমকি দেওয়া, প্রার্থীকে আক্রমণ— এ সব যা ঘটনা ঘটেছে, তা সব মিলিয়ে মোট বুথের এক শতাংশের বেশি হবে না। তাঁর কথায়, ‘‘এই ভোটে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন মানুষ। প্রথম থেকেই আমরা এটা বলে আসছিলাম। এ বারের পর্বে এসে মানুষ আরও সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁরা কী চান।’’
সূর্যবাবু এ দিন আলাদা করে সেলাম জানিয়েছেন হালিশহরের দেবশ্রী ঘোষকে। তার তিন বছরের শিশুকন্যা আক্রান্ত হাওয়ার পর সে আধো আধো গলায় অভিযোগ জানিয়েছে, তার পরেও তার মা বলেছেন, ‘প্রাণ গেলেও তিনি বুথে গিয়ে ভোটটা দেবেন।’ এবং শেষ পর্যন্ত তিনি ভোট দিয়েছেন। সূর্যবাবুর কথায়, ‘‘এই মা-ই পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবাদের প্রতীক। তাঁকে সেলাম জানাচ্ছি। আর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর যদি বিবেচনা বোধ থাকে, তা হলে ওই শিশুটির মুখে অভিযোগ শোনার পর তার রাতের ঘুম উড়ে যাওয়ার কথা।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে মুখ্যমন্ত্রী ব্যবস্থা নিন। আর না পারলে, ১৯ মে পর্যন্ত আমরা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করব। তার পরে নতুন সরকার এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy