Advertisement
E-Paper

জোসেফের ঘুরঘুর, চালসা ছাড়লেন মুখ্যমন্ত্রী

দিনভর রিসর্টের ভিতরেই ছিলেন। কখনও টিভি দেখেছেন। কখনও হনহনিয়ে রিসর্টের লনে হাঁটলেন। ঠিক ছিল, রাতে এখানেই থাকবেন। কিন্তু দুপুরে হঠাৎ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন। বিকেল পৌনে পাঁচটার সময় ডুয়ার্সের চালসার রিসর্টের ১৭২ নম্বর সুইট থেকে বেরিয়ে সড়ক পথে চলে যান শিলিগুড়ি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে পুলিশের কোনও পাইলট কার দেখা যায়নি। ছিল না হুটার। ছিল না রাস্তার ধারে ধারে পুলিশের তৎপরতাও।

সব্যসাচী ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৬ ০৪:৩৪
চালসা থেকে শিলিগুড়ির পথে মুখ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।

চালসা থেকে শিলিগুড়ির পথে মুখ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।

দিনভর রিসর্টের ভিতরেই ছিলেন। কখনও টিভি দেখেছেন। কখনও হনহনিয়ে রিসর্টের লনে হাঁটলেন। ঠিক ছিল, রাতে এখানেই থাকবেন। কিন্তু দুপুরে হঠাৎ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন। বিকেল পৌনে পাঁচটার সময় ডুয়ার্সের চালসার রিসর্টের ১৭২ নম্বর সুইট থেকে বেরিয়ে সড়ক পথে চলে যান শিলিগুড়ি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে পুলিশের কোনও পাইলট কার দেখা যায়নি। ছিল না হুটার। ছিল না রাস্তার ধারে ধারে পুলিশের তৎপরতাও।

কেন? প্রশাসনের ছোট্ট জবাব, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী চাননি।’’

মমতা চাননি বলেই তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাও তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। বিকেল চারটে নাগাদ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন জলপাইগুড়ির প্রাক্তন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তথা তৃণমূলের কুমারগ্রাম আসনের প্রার্থী জেমস কুজুর। রিসর্টের ভিতরে ঢুকলেও দ্রুতই ফিরতে দেখা যায় তাঁকে। সূত্রের খবর, জেমস মুখ্যমন্ত্রীর নাগাল পাননি। রিসর্টের বাইরে দুপুর থেকে দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে দলনেত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি জলপাইগুড়ির মহিলা তৃণমূলের সাসপেন্ডেড নেত্রী সাগরিকা সেনও। এক বার শুধু ‘‘দিদিকে প্রণাম করব’’ বলে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর সে ইচ্ছা পূর্ণ হয়নি।

কেন মমতা আচমকা শিলিগুড়ি চলে গেলেন, তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে তৃণমূল ও প্রশাসন। তবে তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, নাগরাকাটার কংগ্রেস প্রার্থী জোসেফ মুন্ডা ওই রিসর্টেই কংগ্রেস নেতাদের জন্য ঘর চেয়ে বারবার ফোন করছেন খবর পেয়েই বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী রিসর্ট ছেড়ে যান। বুধবার রাতেই চালসায় আচমকা চলে আসেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্র ও সর্দার আমজাদ আলি। তখন মুখ্যমন্ত্রী যে রিসর্টটিতে উঠেছিলেন, সেখানেই ঘর চেয়ে ফোন করেন জোসেফ। কিন্তু রিসর্টে ঘর ফাঁকা নেই বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন। এর পরেই জোসেফ এবং সোমেনবাবুরা দাবি করেন, রিসর্টের অনলাইন বুকিং সাইটে বেশ কিছু ঘর খালি থাকলেও তা রিসর্ট কর্তৃপক্ষ চেপে গিয়েছেন। জোসেফ আবার ফোন করেন রিসর্টে। জোসেফ বলেন, ‘‘এই এলাকায় ভাল রিসর্ট বলতে এই একটিই। তাই ফোন করেছিলাম। কিন্তু ঘর থাকা সত্ত্বেও পাইনি।’’ শুধু ফোনই নয়, বুধ এবং বৃহস্পতিবার রিসর্টের কাছে তাঁকে কয়েক বার যাতায়াত করতেও দেখা যায়। কংগ্রেস সূত্রের খবর, জোসেফ যে ঘুরঘুর করছেন বারবার, ফোনও করছেন, এ কথা নিশ্চয়ই মমতার কানে পৌঁছেছে। জোসেফের অভিযোগ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে কাছের পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে রিসর্টের গোপন কুঠুরিতে বসে কোচবিহারের ভোট পরিচালনা করবেন বলে ভেবেছিলেন, তা কমিশন, পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী এক সঙ্গে রুখে দিয়েছে। তাই প্রায় নিঃশব্দে কোনও বাড়তি নিরাপত্তা ছাড়াই মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি চলে গিয়েছেন।’’

মঙ্গলবার মমতা এই রিসর্টে আসেন। বুধবার এক বার বেরিয়েছিলেন। চা বাগানের সামনে পায়চারি করেন। কথা ছিল, শুক্রবার দুপুরে এখান থেকেই বাগডোগরা যাবেন। এ দিন দুপুর দেড়টাতেও রিসর্ট কর্তৃপক্ষ জানতেন না, মমতা আচমকা সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেছেন। তাঁর রাতের রান্নারও আয়োজন হচ্ছিল। কিন্তু এর পরেই সিদ্ধান্ত বদলে যায়। শিলিগুড়ি পৌঁছন সন্ধ্যা ৭টায়। আড়াই মাইলের একটি হোটেলে পৌঁছনোর পরে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা রক্ষীদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তিনি কারও সঙ্গে দেখা করবেন না। আজ, শুক্রবার বাগডোগরা থেকে বিকেলের বিমানে মুখ্যমন্ত্রীর কলকাতা ফেরার কথা।

assembly election 2016 chalsa siliguri resort Mamata Banerjee TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy