Advertisement
E-Paper

জোটের মার শেষ রাতে, রাহুলের মঞ্চে বুদ্ধ

কৌশলগত কারণে সীতারাম ইয়েচুরি এড়িয়ে যেতে পারেন। কিন্তু বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এড়াচ্ছেন না! সব ঠিকঠাক চললে খাস কলকাতায় কংগ্রেস সহ-সভাপতির সঙ্গে এক মঞ্চেই দেখা যাবে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪১

কৌশলগত কারণে সীতারাম ইয়েচুরি এড়িয়ে যেতে পারেন। কিন্তু বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এড়াচ্ছেন না!

সব ঠিকঠাক চললে খাস কলকাতায় কংগ্রেস সহ-সভাপতির সঙ্গে এক মঞ্চেই দেখা যাবে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র ভবানীপুর-সহ দক্ষিণ কলকাতায় ভোট ৩০ এপ্রিল। তার আগে কাল, বুধবার পার্ক সার্কাস ময়দানে সমাবেশ করতে আসার কথা রাহুলের। বিরোধী জোটের স্বার্থে ওই সভায় বুদ্ধবাবুকে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে। প্রথম দিকে গররাজি থাকলেও শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের যুবরাজের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নিতে সম্মত হয়েছেন বাম শিবিরের প্রায় অবসৃত সেনাপতি!

কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ জোট এখন মসৃণ। ভোট-পর্ব যত এগোচ্ছে, জোট শিবিরের আত্মবিশ্বাস তত বাড়ছে। তৃণমূলকে উৎখাত করে রাজ্যে বিকল্প সরকার প্রতিষ্ঠা করার ব্যাপারে সিপিএম এবং কংগ্রেস নেতারা এখন আশাবাদী। প্রতি বিধানসভা কেন্দ্রেই জোটের তরফে যৌথ মিছিল, সমাবেশ চলছে। স্থানীয় ভিত্তিতে দু’দলের নেতারাই সে সব ঠিক করে নিচ্ছেন। তবু সিপিএম এবং কংগ্রেস নেতারা চাইছিলেন, অন্তত একটি সভায় শীর্ষ নেতাদের হাজির করে ভোটের শেষ পর্বের আগে জোটের বার্তা আরও জোরালো করতে। সেই অঙ্কেই রাহুল ও বুদ্ধবাবুর এক মঞ্চে আগমন।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী জানিয়েছেন, বুধবার বিকেলে পার্ক সার্কাস ময়দানে রাহুলের পাশে উপস্থিত থাকবেন বুদ্ধবাবু। শ্রীরামপুরে আজ, মঙ্গলবার কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সভায় থাকবেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা সিঙ্গুরের প্রার্থী রবীন দেব। অধীরের পাশাপাশিই প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য লাগাতার দৌত্য চালিয়ে গিয়েছিলেন, বুদ্ধবাবুর মতো ওজনদার কোনও সিপিএম নেতাকে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতৃত্বের পাশে হাজির করাতে। শেষ পর্যন্ত সেই চেষ্টা সফল হওয়ায় তাঁরা খুশি। তাঁদের মতে, ভবানীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভোটের আগে রাহুল-বুদ্ধের যৌথ সভা জোটের মনোবল আরও বাড়াবে।

দলের অন্দরে জোটের প্রবক্তা হলেও এ বারের ভোটে বুদ্ধবাবু প্রচারে বেরোতে প্রথম দিকে রাজি ছিলেন না। দলের একাংশের চাপাচাপিতে কয়েক দিন আগে ঢাকুরিয়া থেকে গড়িয়া পর্যন্ত রোড-শো’য় অবশ্য বেরোতে হয়েছিল তাঁকে। টালিগঞ্জ, যাদবপুর ও কসবার দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে সেই রোড-শো’য় জনস্রোত দেখেছিল দক্ষিণ কলকাতা। সিপিএম সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রচারে পথে নামলেও এখনও কোনও নির্বাচনী সভা করেননি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। শেষ পর্যন্ত এ বার একটিই সভা করবেন তিনি। এবং সেই সভা হবে রাহুলের সঙ্গেই। যে কারণে ওই দিন লোক জড়ো করতে কংগ্রেসের পাশাপাশিই মুখ্য দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে সিপিএম।

আসানসোলে রাহুলের সভায় প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীকে পাঠিয়ে জোট-বার্তা স্পষ্ট করতে শুরু করেছিল সিপিএম। বসিরহাটে সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কলকাতায় স্বয়ং বুদ্ধবাবুকে রেখে সেই প্রক্রিয়া আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে আলিমুদ্দিন সূত্রের ব্যাখ্যা। সিপিএমের এক পলিটব্যুরো সদস্যের কথায়, ‘‘এর পরে দক্ষিণ কলকাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর ও কোচবিহারে ভোট বাকি। যেখানে হারানোর কিছু নেই। রাহুলের সঙ্গে বুদ্ধদা’কে রেখে মানুষের জোট সম্পর্কে একেবারে স্পষ্ট একটা ধারণা তৈরি করে রাখতে চাইছি আমরা।’’

সনিয়া-রাহুলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখলেও দলের একাংশের চাপেই তাঁদের মঞ্চ এখনও পর্যন্ত এড়িয়ে চলছেন ইয়েচুরি। সিঙ্গুরে রবিবারই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর নেমে যাওয়ার পরে মঞ্চে উঠেছিলেন তিনি। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দলের কট্টরপন্থী অংশ এবং কেরল শিবিরের বাধ্যবাধকতা মাথায় রাখতে হচ্ছে তাঁকে। বুদ্ধবাবু সেই তুলনায় দায়হীন! তৃণমূলকে হারানোই তাঁর প্রধান লক্ষ্য এবং সেই লক্ষ্যপূরণে রাহুলের হাত ধরতে তাঁর আপত্তি নেই!

assembly election 2016 rahul gandhi budhdhadeb bhattacharya
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy