বিজ্ঞান গবেষণাকে আরও বেশি করে মানুষের কাজে লাগানোর জন্য সওয়াল করলেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ডক্টর হর্ষ বর্ধন। মঙ্গলবার দুর্গাপুরের কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থা দুর্গাপুরের ‘সেন্ট্রাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটে’ (সিএমইআরআই) এসে বিজ্ঞানীদের সঙ্গে আলোচনায় মন্ত্রী ওই সওয়াল করেন।
সিএমইআরআই সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবারই দুর্গাপুরে পৌঁছন মন্ত্রী। সে দিন বেশ কয়েকটি প্রয়োজনীয় বৈঠক সারেন তিনি। মঙ্গলবার ‘কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ’ (সিএসআইআর)-এর ডিরেক্টর গিরিশ সাহানিকে সঙ্গে নিয়ে গবেষণাগারে পৌঁছন হর্ষ বর্ধন। মন্ত্রীর আসার খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই গবেষণাগারের কর্মী ও বিজ্ঞানীদের মধ্যে সাজোসাজো রব দেখা যায়। গবেষণাগারের মাঠে সাজিয়ে রাখা হয় সিএমইআরআইয়ের তৈরি করা বিভিন্ন যন্ত্রপাতি। গবেষণাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, যন্ত্রপাতির প্রদর্শনীতে সোনালিকা ও কৃষিশক্তি ট্রাক্টর, সোলেক্স, পূর্ব ভারতের জন্য তৈরি করা মশলার মেশিন, সোলার ট্রি, আলু রোপনের যন্ত্র সবই রাখা হয়। আলু রোপন করার যন্ত্রটি ইতিমধ্যেই বাজারে ছাড়া হয়েছে বলে জানান বিজ্ঞানীরা। গবেষণাগার সূত্রে খবর, আলু রোপন করার যন্ত্র তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন মেমারির বাসিন্দা শেখ আব্দুল আজিজ নামে এক চাষি। মন্ত্রীর সামনেই আব্দুল দাবি করেন, ‘‘এই যন্ত্রটি ব্যবহার করলে আলু রোপনের সময় প্রায় ৭৫ শতাংশ সময় বাঁচছে।’’ মন্ত্রীকে বিজ্ঞানীরা জানান, প্রচলিত পদ্ধতিতে আলু চাষ করতে হলে কম করে ৩ জন চাষির দরকার পড়ে। কিন্তু এই যন্ত্রটির সাহায্যে এক জনেই আলুচাষের পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করা সম্ভব বলে দাবি করেন বিজ্ঞানীরা। প্রদর্শনী ঘুরে দেখার পর মন্ত্রীকে সোনালিকা ট্রাক্টর ও সোলেক্স চালাতেও দেখা যায়।
এ দিন মন্ত্রী বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্যে গবেষণার সুফল মানুষের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানান। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আগের তুলনায় বর্তমানে গবেষণাগারে অনেক উন্নত পরিকাঠামো রয়েছে। আমাদের দেখতে হবে বিজ্ঞানীদের নতুন আবিষ্কার সাধারণ মানুষের কতটা কাজে লাগল।’’ অল্প পরিকাঠামোর মধ্যেও কী ভাবে কাজ করা যায়, তার দৃষ্টান্ত দিতে গিয়ে মন্ত্রীকে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, জগদীশচন্দ্র বসু, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, সিভি রমনের মতো বিজ্ঞানীদের কথা বলতে শোনা যায়। তিিন বলেন, ‘‘বড় বিজ্ঞানীদের জন্য বড় গবেষণাগার চাই না। ওঁরা সেটা প্রমাণ করে দিয়েছেন।’’ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে উৎসাহ দিতে সীমিত সুযোগ-সুবিধের মধ্যে কাজ করেও নজরকাড়া সাফল্য পেয়েছেন, এমন ৫৫ জন ভারতীয় বিজ্ঞানীদের জীবন নিয়ে একটি বই প্রকাশের উদ্যোগ হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।