Advertisement
১৮ মে ২০২৪

তৃণমূলের ঝগড়ায় ফের গরম গঙ্গারামপুর

যে যা-ই বলুক, দক্ষিণ দিনাজপুরের ভবি ভোলার নয়। এমনকী, তিনি যদি খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হন, তবুও।

অনুপরতন মোহান্ত
গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৩৪
Share: Save:

যে যা-ই বলুক, দক্ষিণ দিনাজপুরের ভবি ভোলার নয়। এমনকী, তিনি যদি খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হন, তবুও।

সবে গত ১০ এপ্রিল কুমারগঞ্জের সভামঞ্চে জেলার দুই প্রবীণ নেতা এবং এ বারের ভোটে দুই প্রার্থী বিপ্লব মিত্র ও শঙ্কর চক্রবর্তীকে পাশে দাঁড় করিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে নির্দেশ দেন মমতা। কিন্তু তা যে শেষ পর্যন্ত কারও কানে ঢোকেনি, তিন দিনের মধ্যে তার প্রমাণ রাখলেন জেলার তৃণমূল কর্মীরা। এ দিন সকালে গঙ্গারামপুর থানার নন্দনপুর অঞ্চলে বিকোইর গ্রামে ভোট প্রচারে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন ওই কেন্দ্রের প্রার্থী সত্যেন রায়। সেই পথ আটকে বিক্ষোভ থেকে শুরু। দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপ, কথা কাটাকাটি, ইট ছোড়াছুড়ি থেকে শেষ পর্যন্ত ঘটনা বোমা-গুলিতে গড়ায় বলে অভিযোগ। তাতে গুরুতর জখম হন চার জন।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। মার্চের ১০ তারিখ থেকে এই এক মাসে পারস্পরিক হামলা, হাতাহাতি, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির গাড়ি লক্ষ করে গুলি— সবই ঘটে গিয়েছে।

জেলার তৃণমূল কর্মীরা এই প্রসঙ্গে তুলে আনছেন পাশের জেলা মালদহের উদাহরণ। বলছেন, ওখানে যেমন সাবিত্রী মিত্র ও কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী গত পাঁচ বছর ধরে সমানে পা়ঞ্জা কষে গেলেন, এখানেও তেমনই। মাস তিনকে আগে বিপ্লব মিত্রকে সরিয়ে শঙ্কর চক্রবর্তীকে জেলা সভাপতি করা হয়। তার পর থেকে এই টক্কর যেন বেড়ে গিয়েছে। যা দেখেশুনে হতাশ কর্মীদের বক্তব্য, এই জেলায় দলের অবস্থা খারাপ ছিল না। শুধু নিজেরা ঝগড়া করে সব হারানোর পথ তৈরি করছে।

ঘটনাটিকে অবশ্য অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে নবান্ন। নবান্ন সূত্রে জেলা প্রশাসনকে বলা হয়েছে, ঘটনার পিছনে যে বা যারা রয়েছে, প্রভাব-প্রতিপত্তি না দেখে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।

প্রশ্ন হচ্ছে, কেন মমতা বোঝানোর পরেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কমছে না? সরাসরি জবাব দেননি কেউই। তবে শাসক-বিরোধী দুই পক্ষের প্রচারে গেলেই বিষয়টা মালুম হচ্ছে। যেমন গত বুধবার হরিরামপুর কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী রফিকুল ইসলামের সমর্থনে মহম্মদ সেলিমের জনসভায় হাজার আষ্টেকের ভিড় হয়েছিল। কিন্তু তাতে নাকি ছ’হাজারের মতো এক তৃণমূল নেতারই অনুগামী। তিনি কে? দলের কর্মীদের কেউ কেউ দাবি করেছেন— সোনা পাল। তাঁর অঙ্গুলিহেলনেই বিপ্লব মিত্রের দিক থেকে সমর্থনের কাঁটা অন্য দিকে ঘুরে যাচ্ছে বলে দাবি বিপ্লব অনুগামীদের।

এবং তার প্রভাব পড়ছে অন্যত্র। নিজের আসন নড়বড়ে, তাই অন্যদের স্বস্তিতে থাকতে দিতে নারাজ বিপ্লববাবু, বলছেন কর্মীরা। তারই প্রভাব পড়েছে পাশের দুই কেন্দ্র গঙ্গারামপুর ও তপনে। তারই আঁচ পাচ্ছেন সত্যেন রায়রা।

সব শুনে সোনা বলছেন, ‘‘আমি বিপ্লববাবুকে কাকু বলি। অথচ উনি প্রচারে আমাকে ডাকলেনই না। একটু তো অভিমান হয়ই।’’ আর বিপ্লববাবু বলেছেন, অভিযোগ ভিত্তিহীন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016 TMC gangarampur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE