Advertisement
E-Paper

অশান্তি এড়াতে খুলল না কার্যালয়

দোতলা পার্টি অফিস। পতপত করে উড়ছে লাল পতাকা। কিন্তু তালা বন্ধ। সামনেই মঞ্চ বেঁধে সভায় এসেছেন শাসকদলের হেভিওয়েট নেতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা, মঙ্গলকোট

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৬ ০২:২২
মঞ্চে শুভেন্দু। পাশে বন্ধ সিপিএমের পার্টি অফিস।— অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

মঞ্চে শুভেন্দু। পাশে বন্ধ সিপিএমের পার্টি অফিস।— অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

দোতলা পার্টি অফিস। পতপত করে উড়ছে লাল পতাকা। কিন্তু তালা বন্ধ। সামনেই মঞ্চ বেঁধে সভায় এসেছেন শাসকদলের হেভিওয়েট নেতা।

রবিবার মঙ্গলকোটের কাশেমনগর দেখল এমনই ছবি। সিপিএম নেতাদের যদিও দাবি, অযথা অশান্তি এড়াতেই কার্যালয় খোলা হয়নি।

এ দিনই কালনাতেও সভা করেন তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। সভাস্থল, বড়ধামাস পঞ্চায়েতের বালিন্দর গ্রাম। কালনা ২ নম্বর ব্লকে এটিই একমাত্র সিপিএমের দখলে থাকা পঞ্চায়েত। সিপিএম নেতাদের দাবি, জমি খুঁজতেই সভা করছে তৃণমূল। কিন্তু লাভ হবে না।

কাশেমনগরে যেখানে বড় মঞ্চ বেঁধেছে শাসকদল, তার ডান দিকেই রয়েছে সিপিএমের মঙ্গলকোট পশ্চিম লোকাল কমিটির পার্টি অফিস। দিনভর অফিসটি তালাবন্ধ অবস্থায় থাকতে দেখা যায়। সিপিএম সূত্রে খবর, বেলা ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অফিসের তালা খোলা হয়নি।

কেন এমনটা? সিপিএমের সূত্রে দাবি করা হয়েছে, প্রাক-ভোট অশান্তি এড়াতেই পার্টি অফিস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দিন কয়েক ধরেই মঙ্গলকোটের আঁতকুল, মজলিশদিঘি-সহ বেশ কয়েকটি এলাকা অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগকে কেন্দ্র করে তেতে রয়েছে। এরপর এ দিন শাসকদলের সভা চলাকালীন পার্টি অফিস খুলে রেখে অশান্তি ডেকে আনতে চাননি সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য মহম্মদ বদরুদ্দোজা বলেন, ‘‘অশান্তি এড়াতেই দুপুর ১২টার পর অফিস বন্ধ রাখা হয়।’’

এ দিন মঙ্গলকোটের সভা থেকে যথেষ্ট চড়া গলাতেই আক্রমণ শানাতে দেখা যায় তৃণমূল সাংসদকে। ২০০৯ সালে মঙ্গলকোটের খুদরুনে তাঁর উপর সিপিএম হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দুবাবু। শুধু তাই নয় রাজ্যের বিরোধী জোটকেও বিঁধতে দেখা যায় শুভেন্দুবাবুকে। মঙ্গলকোটের ধান্যরুখীতে কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়ার উপর হামলার প্রসঙ্গ তুলে শুভেন্দুবাবু এ দিন বলেন, ‘‘এখন ওঁরা সূর্যবাবুদের সঙ্গে করেই তৃণমূল কর্মীকে খুন করছেন।’’

কালনাতেও সভামঞ্চ থেকে জোটকে কড়া আক্রমণ করেন শুভেন্দু। তিনি দাবি করেন, ‘‘২৫টি আসনেই সিপিএম হারবে।’’ বিজেপি নেতৃত্বকেও আক্রমণ করে শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘বিজেপি বিহার, দিল্লি সব জায়গায় হারছে। ওরা স্লোগান তুলেছিল, ‘ভাগ মমতা ভাগ’ এখন তা উল্টে হয়েছে ভাগ বিজেপি ভাগ।’’ বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য রাজীব ভৌমিক অবশ্য পাল্টা বলেন, ‘‘স্লোগান বৃথা যাবে না। তৃণমূলের বিদায় আসন্ন।’’

যদিও তৃণমূল সাংসদের এই সব মন্তব্যকে পাত্তা দিতে নারাজ সিপিএম নেতৃত্ব। বদরুদ্দোজার দাবি, ‘‘মানুষের জোটকে ভয় পেয়েই এমন কথা বলছেন শুভেন্দুবাবু।’’

ভাতারে শুভেন্দুবাবুর সভায় আবার দলেরই দুই বিবদমান গোষ্ঠীর নেতাকে একই মঞ্চে দেখা গেল। এ দিন শুভেন্দুবাবুর পাশেই দেখা যায় বিদায়ী বিধায়ক বনমালী হাজরা ও দলে তাঁর বিরোধী বলে পরিচিত ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মানগোবিন্দ অধিকারীকে। শুধু তাই নয়, দু’জনকে হাতে হাত ধরে দলীয় প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য আবেদন জানাতেও দেখা যায়।

ভাতারের বিদায়ী বিধায়ক বনমালী হাজরাকে এ বার প্রার্থী না করায় ক্ষোভ আছড়ে পড়ে কলকাতার তপসিয়ায় তৃণমূল ভবনের সামনেও। ২০১১ সালে মাত্র ২৯৮ ভোটে জিতে বিধায়ক হন তৃণমূলের বনমালী হাজরা। বছর খানেক পরে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাতার থেকে জেলা পরিষদের তিনটি আসনে প্রায় ষাট হাজারের লিড পায় তৃণমূল। আবার ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে জয়ের ব্যবধান দাঁড়ায় ১৪ হাজার ২১৭। জয়ের ব্যবধানের এমন ওঠাপড়ার পিছনে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই রয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি।

এ দিন শুভেন্দুবাবুর শভায় দাঁড়িয়ে বনমালীবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘এলাকায় উন্নয়ন, কলেজ হয়েছে। তা দেখেই মানুষ আমাদের ভোট দেবেন।’’ এ দিনের সভা থেকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কাঁটা অনেকটাই ওপড়ানো গিয়েছে বলে বার্তা দেন তৃণমূল নেতৃত্বও। শুভেন্দুবাবুও বলেন, ‘‘আমরা এককাট্টা। আর কোনও অসুবিধা নেই।’’ যদিও তৃমমূল কর্মীদের একটা বড় অংশের মতে, বিবদমান দুই গোষ্ঠীর হাত ধরাধরির ছবির প্রতিফলন ভোট বাক্সে কতখানি পড়বে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। কারণ এখনও ভাতারের তৃণমূল প্রার্থী সুভাষ মণ্ডলের সমর্থনে রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি বিদায়ী বিধায়ককে।

assembly election 2016 shuvendu adhikary cpm tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy