পুলিশের সঙ্গে বচসায় উদয়ন গুহ।
শেষ দফার ভোটে মরিয়া হয়ে কামড় বসানোর চেষ্টা তৃণমূলের। পুলিশ আর কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিদারুণ কড়াকড়ি ভেঙে যে কোনও উপায়ে ভোট লুঠের জন্য বৃহস্পতিবার মরিয়া হয়ে ঝাঁপালেন উদয়ন গুহ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। কখনও ভোটকর্মীকে হুমকি দিয়ে বশে আনার চেষ্টা, কখনও ঘেরাও করার হুমকি, কখনও পুলিশকে শাসিয়ে নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা, কখনও বুথে ঢুকে গিয়ে ছাপ্পা ভোট শুরু করিয়ে দেওয়া— কোচবিহারে তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতা দিনভর নানা রকম উপায় খুঁজলেন ভোট করানোর। দেখে মনে হল, এই শেষ দফাতেও যদি ভোট অবাধ হতে দেওয়া হয়, তা হলে খুব সমস্যায় পড়তে হতে পারে উদয়ন, রবীন্দ্রনাথদের দলকে। তাই সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনেই ভোট লুঠের চেষ্টা চলল নির্লজ্জ ভাবে।
ইভিএমের সামনে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ছাপ্পা ভোট দেওয়ানোর অভিযোগ উঠল দিনহাটার তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহর বিরুদ্ধে। লোকজন নিয়ে বুথে ঢুকে পড়লেন, বুথের মধ্যে দাঁড়িয়ে ফোনে দীর্ঘ কথোপকথন চালালেন, ইভিএম-এর সামনে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ভোটারকে ভোট দিতে বাধ্য করলেন ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া এই নেতা। সাংবাদমাধ্যমের ক্যামেরাতেই ধরা পড়েছে উদয়নের কার্যকলাপ। ফলে দিনহাটার তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
দিনহাটার ১২৩ নম্বর বুথে ছাপ্পা দেওয়ানোর সময়েই সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় এ দিন ধরা পড়েছেন উদয়ন গুহ। বেলা ৩টে নাগাদ দলবল নিয়ে তিনি ওই বুথে হাজির হন। তার পর সোজা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকে যান। মোবাইল ফোন নিয়ে বুথের মধ্যে দাঁড়িয়ে কথোপকথন শুরু করেন তিনি। ভোটার কোথায় ভোট দিচ্ছেন তা দেখতে কখনও উদয়ন নিজেই হাজির হয়ে যান ইভিএম-এর সামনে, কখনও ভোটারের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে চিনিয়ে দেন বোতাম, কখনও আবার উদয়ন গুহর সাঙ্গীরা ভোটদান কক্ষের ভিতরে গিয়ে ভোটারের হয়ে ভোট দিয়ে দেন।
উদয়ন গুহ যখন এই ভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন বুথের ভিতর, ছাপ্পা দেওয়াচ্ছিলেন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে, তখন প্রিসাইডিং অফিসার বা পোলিং অফিসাররা বাধা দেননি। উদয়নের তদারকিতে অবাধে ছাপ্পা চলে। এই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে নির্বাচন কমিশন। জেলাশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয় উদয়ন গুহর বিরুদ্ধে এফআইআর করানোর।
দেখুন সেই শাসানির ভিডিও:
উদয়ন বুথের বাইরে পুলিশকেও হুমকি দিয়েছেন। শিলিগুড়ি কমিশনারেট থেকে কোচবিহারে ডিউটি করতে যাওয়া এক পুলিশ অফিসারকে উদয়ন লোকজন নিয়ে ঘিরে ধরে শাসানি দেন। তিনি বলেন, ‘‘ডিউটি করছেন ডিউটি করুন, অতিসক্রিয়তা দেখাবেন না।’’ পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী কেন লাঠি চালাচ্ছে, কেন পথচলতি গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে, তা নিয়ে পরেশ বর্মন নামে ওই পুলিশ অফিসারকে প্রশ্ন করেন উদয়ন। তার পর ফোনে কোনও প্রশাসনিক কর্তাকে উদয়নবাবু নির্দেশ দেন, পরেশ বর্মনকে এলাকা থেকে সরিয়ে নিতে। তিনিই বেশি বাড়াবাড়ি করছেন বলেও উদয়ন মন্তব্য করেন। পরেশ বর্মনকে সরিয়ে না নেওয়া হলে গোলমাল হবে বলে হুমকি দিতেও শোনা গিয়েছে উদয়ন গুহকে।
আরও পড়ুন:
সেক্টর অফিসারকে ‘মহাবদমায়েশ’ বলে দেখে নেওয়ার হুমকি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy