ফের মমতাকে নোটিস কমিশনের।
বার বার শো-কজ করেও কোনও লাভ হবে না, বৃহস্পতিবারই প্রচারসভা থেকে এমন মন্তব্য করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরই ফের তৃণমূল নেত্রীকে নোটিস ধরাল নির্বাচন কমিশন। গত ২৮ মার্চ এবং ৭ এপ্রিল প্রচার সভা থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে মন্তব্যের জেরেই এই নোটিস বলে কমিশন সূত্রে খবর। বৃহস্পতিবার নোটিস ধরানো হয়েছে তৃণমূল নেত্রীকে। শনিবার সকাল ১১টার মধ্যে উত্তর দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায়, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৬ (সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা দেওয়া), ১৮৯ সরকারি কর্মীকে হুমকি এবং ৫০৫ (সাম্প্রদায়িক অশান্তি সৃষ্টিতে ইন্ধন জোগানো) ধারায় নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।
কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোটারদের ‘প্রভাবিত করছে’ বলে শুরু থেকেই অভিযোগ তুলে আসছে তৃণমূল। গত ২৮ মার্চ পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের সভায় তা নিয়ে মুখ খোলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েদের ভোট দিতে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় বাহিনী। হুমকি দিচ্ছে। কে এত ক্ষমতা দিয়েছে ওদের? বাংলায় যে ওরা রয়েছে, তার থাকার, খাওয়ার খরচ দিচ্ছি আমরা। আর এখানেই মানুষকে লাঠি দিয়ে মারছে? ২০১৬ এবং ২০১৯-এও একই জিনিস দেখেছি। কার নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোটারদের মারধর করছে জানি। এ বার মারতে এলে হাতা-খুন্তি-বঁটি নিয়ে তেড়ে যাবেন মা-বোনেরা। বুথ থেকে বার করে দিতে এলে বিদ্রোহ করবেন।’’
এর পর কোচবিহারের জনসভা থেকেও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে একহাত নেন তৃণমূল নেত্রী। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘নির্দেশে’ই সিআরপিএফ-এর একাংশ বিজেপি-র হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘সিআরপিএফ যদি গন্ডগোল করে, মেয়েদের একটা দল মিলে ওদের ঘেরাও করে রাখবেন। আর একটা দল ভোট দিতে যাবেন। শুধু ঘেরাও করে রাখলে ভোট দেওয়া হবে না। তাই ভোট নষ্ট করবেন না। ৫ জন ঘেরাও করবেন। ৫ জন ভোট দেবেন।’’ কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার মন্তব্যে এর আগে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এবং কোচবিহারের জেলা শাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছিল কমিশন।
এই ধরনের মন্তব্য করে একাধিক ধারায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে মত নির্বাচন কমিশনের। গত দু’দিনে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার মমতাকে নোটিস ধরাল তারা। এর আগে, হুগলির তারকেশ্বরে মমতা বিধিভঙ্গ করেছেন বলে বুধবারই তাঁকে নোটিস পাঠানো হয়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছিল তাঁকে। তবে নোটিস হাতে পাওয়ার পর কমিশনকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দেন মমতা। বৃহস্পতিবার হাওড়ার ডোমজুড়ের সভা থেকে তিনি বলেন, ‘‘আমাকে ১০ বার শো-কজ করেও লাভ নেই। একই জবাব দেব।’’ কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও তোলেন তিনি। অভিযোগ করেন, বিজেপি-র নেতারা প্রকাশ্যে সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করলেও, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy