‘ভিআইপি’ নিরাপত্তায় ফাঁক রাখা চলবে না। অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নন্দীগ্রামের ঘটনার পর পুলিশ- প্রশাসনকে সতর্ক করলেন নির্বাচন কমিশন নিযুক্ত বিশেষ পর্যবেক্ষকেরা। মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে ওই দিন কেমন পুলিশি ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল, তা সবিস্তারে জানতে চেয়েছে কমিশন। নন্দীগ্রামের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টও তলব করা হয়েছে। ঘটনার যথাযথ তদন্তের আশ্বাসও দিয়েছে কমিশন।
শুক্রবার মেদিনীপুরে আসেন নির্বাচন কমিশন নিযুক্ত এ রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সাধারণ পর্যবেক্ষক অজয় ভি নায়েক এবং বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম— এই তিন জেলাকে নিয়ে ম্যারাথন বৈঠক করেন তাঁরা। শুরুতে রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এরপর ভোটের জন্য জেলায় আসা কমিশন নিযুক্ত পর্যবেক্ষকদের সঙ্গেও বৈঠক করে তাঁরা। পরে বৈঠক হয় জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপারদের সঙ্গে। শেষে ভোটের জন্য জেলায় আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর কমাডান্টদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। বিশেষ পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকের পরে পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতা সোমনাথ বেরা বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের ঘটনায় আমরা পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছি। আমরা চেয়েছি, এই তদন্ত নির্বাচন কমিশনই করুক। ওঁরা বলেছেন, নিশ্চিতভাবে তদন্ত হবে।’’ সোমনাথ বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের ঘটনায় আমরা নির্দিষ্টভাবে কারও নামে অভিযোগ জানাইনি। তবে এটা জানিয়েছি, শুভেন্দু অধিকারীর উস্কানিমূলক বক্তব্য থেকেই বিভিন্ন জায়গায় উত্তেজনা ছড়াচ্ছে।’’ শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে এ দিন ঝাড়গ্রামে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা যখন দুর্বল ছিলাম, তখন আমরা বলতাম, আমাদের চমকাচ্ছে, ভয় দেখাচ্ছে, মামলা করছে। এখন ওরা বলছে এসব কথা। বোঝা যাচ্ছে, কে দুর্বল আর কে সবল।’’ মেদিনীপুরের এ দিনের বৈঠকে ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরের বিজেপির প্রতিনিধি থাকলেও ছিলেন না পূর্ব মেদিনীপুরের বিজেপির কোনও প্রতিনিধি।
এ দিন সকালেই মেদিনীপুরে পৌঁছন অজয় ভি নায়েক, বিবেক দুবে। প্রথম দু’দফার বৈঠক হয়েছে মেদিনীপুর কালেক্টরেটের সভাকক্ষে। শেষ দু’দফার বৈঠক হয়েছে মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে। বৈঠকে বিশেষ পর্যবেক্ষকেরা বুঝিয়ে দিয়েছেন, কোনওরকম অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। সম্প্রতি নির্বাচনী প্রচারে নন্দীগ্রামে এসে আহত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক পর্বে বিশেষ পর্যবেক্ষকেরা বুঝিয়ে দিয়েছেন, নিরাপত্তায় ফাঁক না- থাকলে এমন ঘটনা ঘটত না।