ফাইল চিত্র।
পাঁচলায় সংযুক্ত মোর্চার হয়ে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে আইএসএফ। তাঁদের আপত্তি ধোপে টেঁকেনি। তাই ওই দলকে সমর্থন করা থেকে সরে দাঁড়ালেন এখানকার ফরওয়ার্ড
ব্লক নেতৃত্ব।
শুক্রবার ফরওয়ার্ড ব্লকের লোকাল কমিটির বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের অনেক নেতাই। তবে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ফরওয়ার্ড ব্লকের লোকাল কমিটির সম্পাদক ফরিদ মোল্লা। তবে, আইএসএফ প্রার্থী মহম্মদ জলিলের দাবি, ‘‘ফরওয়ার্ড ব্লকের একটা অংশ আমাদের সঙ্গেই আছেন। সবাই যাতে মিলেমিশে আমাদের সঙ্গে কাজ করেন সে জন্য নেতাদের সঙ্গে কথা বলব। মনে হয় শেষ পর্যন্ত সবাই লড়াইয়ের ময়দানে নামবেন।’’
সিপিএমের হাওড়া জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার বলেন, ‘‘ফরওয়ার্ড ব্লক পাঁচলা আসনটি রাখতেই চেয়েছিল। তবে বৃহত্তর রাজনীতির স্বার্থে বামফ্রন্টের রাজ্য নেতৃত্ব যে ভাবে যেখানে আসন বরাদ্দ করেছেন, মতবিরোধ ভুলে সেই সব আসনে জোরদার লড়াইয়ে সকলের ঝাঁপিয়ে পড়া দরকার।’’
পাঁচলা ফরওয়ার্ড ব্লকের শক্ত ঘাঁটি। গোড়া থেকেই এই আসনটি আইএসএফ-কে ছাড়তে চাননি এখানকার ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্ব। দলের রাজ্য নেতৃত্বকে তাঁরা এ নিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি সংযুক্ত মোর্চার ডাকা ব্রিগেড সমাবেশও বয়কট করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের আপত্তি মানেননি মোর্চা নেতৃত্ব। পাঁচলায় তৃণমূল-ত্যাগী মহম্মদ জলিলকে আইএসএফ প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করে দেওয়ার পরেই এখানকার ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্বের সব আশা শেষ হয়ে যায়।
কেন আপত্তি তাঁদের?
ফরওয়ার্ড ব্লকের এক স্থানীয় নেতা জানান, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আদর্শে দল চলে। সেই অবস্থায় ‘সাম্প্রদয়িক শক্তি’র সঙ্গে জোট করা নেতাজির আদর্শের পরিপন্থী বলে তাঁরা মনে করেন। তাই তাঁরা প্রার্থীকে সমর্থন বা ভোটের কাজ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
যদিও আইএসএফ সুপ্রিমো আব্বাস সিদ্দিকীর দাবি, তাঁদের দল সাম্প্রদায়িক নয়। সব শ্রেণির পিছিয়ে পড়া মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতেই তাঁরা লড়াই করবেন। দলের প্রার্থী-তালিকাতেও সেই ভারসাম্য বজায় রাখা হয়েছে। দলে মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা মাত্র ৩৫ শতাংশ। বাকি অন্য সম্প্রদায়ের।
তবে, জেলার রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, সাম্প্রদায়িকতা এখানে ফরওয়ার্ড ব্লকের আপত্তির মূল কারণ নয়। আসল কারণ হল, ১৯৫২ সাল থেকে যে আসনে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে, সেটা এ বার হাতছাড়া হওয়া।
ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্বের একাংশ জানিয়েছেন, মহম্মদ জলিলের বিরুদ্ধে এক সময়ে তাঁদের দলীয় কর্মীদের মারধর করা, মিথ্যা মামলার ফাঁসানোর বহু অভিযোগ আছে। সেই জলিলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভোট চাওয়া কর্মীদের পক্ষে অস্বস্তির কারণ হবে। সেটাও বিরোধিতার অন্যতম কারণ। যদিও জলিল বলেন, ‘‘আমি যখন তৃণমূলে ছিলাম তখন ফরওয়ার্ড ব্লকের কর্মীদের একটা অংশের তরফ থেকে আমাদের কর্মীদেরও মারা হয়েছে। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। কিন্তু এখন সেইসব মনে রাখার সময় নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy