Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Mamata Banerjee

Bengal Polls: মাথা নত করবেন না, মমতার বার্তা রাজ্য পুলিশকে

তৃণমূল নেত্রী আরও বলেন, যদি পুলিশ বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য ভয় দেখায় সেই কথা না শুনে, তাঁরা যেন সবাই ভোট দিতে যান।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২১ ০৫:১২
Share: Save:

ভোটের মরসুমে এখন রাজ্যের পুলিশ নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সেই সঙ্গেই নিরাপত্তার কাজে বাংলায় এসেছে বিপুল সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী। এ বার এই দুই বাহিনীর মধ্যে ভেদ রেখা টানলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার একাধিক নির্বাচনী সভায় তাঁর অভিযোগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপির পক্ষে ভোট করাচ্ছে। অপর দিকে রাজ্যের পুলিশ বাহিনীর প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতার আহ্বান তাঁরাও যাতে নজর রাখেন। মাথা নত না করেন।

আগামী ১০ এপ্রিল, হুগলির কিছু কেন্দ্রে ভোট। বৃহস্পতিবার শেষবেলায় এখানে প্রচারে এসে গুপ্তিপাড়া এবং শ্রীরামপুরে সভা করেন মমতা। বলাগড়ের দলীয় প্রার্থী সাহিত্যিক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর সমর্থনে গুপ্তিপাড়া রথ সড়কের সভায় তিনি বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নির্দেশ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ‘যাও গিয়ে গ্রামে গ্রামে ভয় দেখাও’। ভোটের প্রচার শেষ হওয়ার পরে গ্রামে গ্রামে গিয়ে মেয়েদের গায়ে হাত দিচ্ছে। ছেলেদের ভয় দেখাচ্ছে। বিজেপির সঙ্গে গিয়ে বলছে বিজেপিকে ভোট দাও।’’

মমতা অবশ্য কেন্দ্রীয় বাহিনীকে এর জন্য দোষ দিচ্ছেন না। তাঁর সরাসরি নিশানায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তাঁর নির্দেশ, ‘‘মা-ভাই-বোনেরা আপনাদের বলব, এই ধরনের ঘটনা ঘটলে এফআইআর থানায় করবেন। আর যে থানা এফআইআর নেবে না, আমাদের জানাবেন। আমরা দেখব কোন থানা এফআইআর কেন নিচ্ছে না।’’

তৃণমূল নেত্রী আরও বলেন, যদি পুলিশ বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য ভয় দেখায় সেই কথা না শুনে, তাঁরা যেন সবাই ভোট দিতে যান। তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘ওরা রটিয়ে দেবে, সারা এলাকায় ১৪৪ ধারা। মিথ্যে কথা। নিয়ম হচ্ছে, ভোট কেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকে। অন্য জায়গায় হয় না।’’ ভোটের আগের দিন মহিলাদের এলাকা পাহারা দেওয়ারও পরামর্শ দেন মমতা।

এর পরই রাজ্য পুলিশের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, ‘‘আমাদের বাংলার পুলিশ বাহিনীকেও বলব নজর রাখতে। আপনারা আমাদের বাংলার পুলিশবাহিনী। আপনারা দয়া করে আপনাদের মাথা নত করবেন না। আপনারা মানুষকে শান্তি দেবেন। কেউ যাতে গণ্ডগোল করতে না পারে, মানুষ যাতে গণতান্ত্রিক রায় প্রয়োগ করতে পারেন, সেটা দেখবেন। সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট যাতে হয়, সেটা দেখবেন।’’

বেহালার জনসভায় এ দিনই মমতা বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন থেকে কোনও বিচার আমরা পাচ্ছি না। এটা দুর্ভাগ্যজনক। দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, সারা পৃথিবী দেখছে আমরা কোথাও থেকে কোনও বিচার পাচ্ছি না। সমস্ত এজেন্সিকে বিজেপি কিনে নিয়েছে।’’ রাজ্য পুলিশের উঁচু তলার কেউ কেউ আত্মসমর্পণ করেছে বলে দাবি করলেও নিচু তলার পুলিশ কর্মীদের প্রশংসা করেছেন তিনি। নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ তুলে তাঁর অভিযোগ, সেখানে ভোটের আগের দিন সারা রাত গ্রামে গ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনী তাণ্ডব করেছে।

ডোমজুড়ের জনসভা থেকেও প্রায় একই সুরে মমতার বক্তব্য, ‘‘বিজেপি যা-ইচ্ছে তাই ইলেকশন কমিশনকে দিয়ে করিয়ে নিচ্ছে।’’

মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সাংবিধানিক ব্যবস্থা এবং নির্বাচন কমিশনের কাঠামো সম্পর্কেই প্রশ্ন তুলে দিলেন। সাংবিধানিক পদে থেকে তিনি যে এটা বলতে পারেন না, তা হয়ত তিনি ভুলে গেছেন। তিনি তো প্যারাসুটে করে রাজনীতির ময়দানে নামেননি। বাংলার মাটির গন্ধ তাঁর জানা, তাই ভোটের ফল কি হতে চলেছে তা তিনি বুঝতে পারছেন, সে জন্যেই এই আক্রমণ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE