Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Dilip Ghosh

Bengal Polls: বারমুডা পরুন মমতা, শাড়ি সরিয়ে পা দেখানো অশোভন, বক্তব্যে অটল দিলীপ

যতই সমালোচনার ঝড় বয়ে যাক, ‘বারমুডা ট্রায়াঙ্গল’ থেকে বেরোতে নারাজ দিলীপ ঘোষ। পায়ের আঘাতের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে প্লাস্টার করা হয়েছে। সেই অবস্থাতেই হুইলচেয়ারে ঘুরে ঘুরে প্রচার করছেন মমতা। বাঁ-পায়ে প্লাস্টার থাকায় তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা মমতার শাড়িটি সামান্য উপরে তুলে রাখছেন। প্লাস্টার-করা বাঁ-পা হুইলচেয়ারের একটি পাদানির উপর রেখে মমতা বক্তৃতা করছেন। সেই দৃশ্য দেখেই মঙ্গলবার দিলীপ মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘শাড়ি ছেড়ে বারমুডা পরুন দিদি!’’ দিলীপের ওই বিতর্কিত মন্তব্যের বিরোধিতায় পাল্টা তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র টুইট করেছেন। যেখানে দিলীপকে তিনি ‘বাঁদর’ বলে অভিহিত করেছেন। সে সব দেখে এবং জেনেও দিলীপ তাঁর বক্তব্যে অনড়। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি আনন্দবাজার ডিজিটালকে সাফ বলেছেন, ‘‘আমি কিছু ভুল বলিনি। মানুষের কাছে গিয়ে শাড়ি সরিয়ে পা দেখানো কোনও ভদ্রতা নয়। তার চেয়ে বারমুডা পরা ভাল।’’

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২১ ২০:২২
Share: Save:

যতই সমালোচনার ঝড় বয়ে যাক, ‘বারমুডা ট্রায়াঙ্গল’ থেকে বেরোতে নারাজ দিলীপ ঘোষ। পায়ের আঘাতের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে প্লাস্টার করা হয়েছে। সেই অবস্থাতেই হুইলচেয়ারে ঘুরে ঘুরে প্রচার করছেন মমতা। বাঁ-পায়ে প্লাস্টার থাকায় তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা মমতার শাড়িটি সামান্য উপরে তুলে রাখছেন। প্লাস্টার-করা বাঁ-পা হুইলচেয়ারের একটি পাদানির উপর রেখে মমতা বক্তৃতা করছেন। সেই দৃশ্য দেখেই মঙ্গলবার দিলীপ মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘শাড়ি ছেড়ে বারমুডা পরুন দিদি!’’ দিলীপের ওই বিতর্কিত মন্তব্যের বিরোধিতায় পাল্টা তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র টুইট করেছেন। যেখানে দিলীপকে তিনি ‘বাঁদর’ বলে অভিহিত করেছেন। সে সব দেখে এবং জেনেও দিলীপ তাঁর বক্তব্যে অনড়। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি আনন্দবাজার ডিজিটালকে সাফ বলেছেন, ‘‘আমি কিছু ভুল বলিনি। মানুষের কাছে গিয়ে শাড়ি সরিয়ে পা দেখানো কোনও ভদ্রতা নয়। তার চেয়ে বারমুডা পরা ভাল।’’

চাঁছাছো‌লা ভাষায় কথা বলা দিলীপের চিরকালের অভ্যাস। তার জন্য কথায় কথায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ‘ধমক’ টেলিফোন আসে তাঁর কাছে। তাতেও যে তিনি দমবার পাত্র নন, তা বারবার দেখিয়েছেন বিতর্ককে ছায়াসঙ্গী করা দিলীপ। নীলবাড়ির লড়াই যখন প্রায় ক্লাইম্যাক্সে, তখন প্রথম দফার ভোটগ্রহণের ঠিক আগে আগে ফের বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেছেন দিলীপ। বিতর্কের কেন্দ্রে দিলীপের যে বক্তব্য, তার ভিডিয়ো নিয়ে প্রচারে নেমে পড়েছে তৃণমূল। দলের টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা ওই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে দিলীপ বলছেন, ‘‘প্লাস্টার কাটা হয়ে গেল। ক্রেপ ব্যান্ডেজ বাঁধা হয়ে গেছে। আর পা তুলে সবাইকে দেখাচ্ছেন। শাড়ি পরে আছেন, একটা পা ঢাকা আর একটা খোলা। এই রকম করে শাড়ি পরতে আমি কাউকে কখনও দেখিনি। যদি পা-টা বার করেই রাখবেন, তবে শাড়ি কেন, বারমুডা পরতে পারেন। তা হলে পা পরিষ্কার দেখা যায়।’’

ওই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার ডিজিটাল যাচাই করে দেখেনি। তবে বুধবার দিলীপই বলেছেন, ‘‘হ্যাঁ! ওটা আমারই কথা। আমিই বলেছি। আর ঠিকই তো বলেছি। কারও কোনও অসুস্থতা থাকলে মানুষ সেটা ঢেকে রাখে। উনি এক পায়ের শাড়ি তুলে দেখাচ্ছেন। পা যদি দেখাতেই হয় তবে বারমুডা পরাই তো ভাল।’’ দিলীপের এই মন্তব্যের আগেই তৃণমূলের পক্ষে লেখা হয়, ‘এই রকম কুরুচিকর মন্তব্য দিলীপ ঘোষ ছাড়া আর কারও থেকে আশা করা যায় না। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে এই রকম নিন্দনীয় ভাষা প্রয়োগ প্রমাণ করে যে, বাংলার বিজেপি নেতারা মহিলাদের সম্মানটুকুও করে না।’’ তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া নেটমাধ্যমে কড়া সমালোচনা করেছেন দিলীপের। টুইটে দিলীপকে ‘বিকৃতকাম’ এবং ‘বাঁদর’ বলে অভিহিত করেছেন মহুয়া। লিখেছেন, ‘‘এই বিকৃতকাম বাঁদররাই কি না বাংলা দখল করার কথা ভাবছে’।

কে কী বলেছে, তা নিয়ে অবশ্য আদৌ ভাবিত নন দিলীপ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘যাঁরা আমার বক্তব্যে ভুল খুঁজছেন, তাঁদেরই জিজ্ঞাসা করুন, কোনও ভদ্রমহিলা কি এই ভাবে পা দেখায়? আর পা দেখানো কোনও সংস্কৃতি হতে পারে না।’’ একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে কি এমন মন্তব্য করা ঠিক? জবাবে দিলীপ বলেন, ‘‘মহিলা বলেই তো তিনি যেটা করছেন সেটা অশালীন মনে হচ্ছে।’’ বিজেপি প্রথম থেকেই নন্দীগ্রামে মমতার আহত হওয়া এবং তার পরে হুইলচেয়ারে বসে প্রচারকে ‘সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা’ বলে অভিহিত করে আসছে। নানা ভাবে রাজ্য নেতারা আক্রমণও শানিয়েছেন। তবে দিলীপ সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছেন তাঁর মন্তব্যে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও অভিযোগ করেছেন, নন্দীগ্রামের মানুষকে মমতা অপমান করেছেন। মমতা ‘বাহানা’ করছেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন মোদী। ফলে এটা স্পষ্ট যে, শুধু রাজ্য নেতারাই নয়, বিজেপি-র কেন্দ্রীয় কর্তারাও মমতার হুইলচেয়ারে বসে প্রচার নিয়ে চিন্তিত। তবে শাড়ি প্রসঙ্গ টেনে দিলীপের মন্তব্যে মোদী-শাহরা খুশি হবেন কি না, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কারণ, রাজ্য বিজেপি-র একাংশ মনে করছে, অতীতেও অমর্ত্য সেন থেকে গরুর দুধে সোনা— দিলীপের নানা মন্তব্যে দলের সমস্যা হয়েছে। এ বার ভোটের মধ্যে এই মন্তব্য দলকে ফের অস্বস্তিতে ফেলতে পারে। ভোটারদের কাছে খারাপ বার্তাও দিতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE