Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Kolkata Police

Bengal Polls: বেনজির সুরক্ষা, তবু আজ শঙ্কা গোলমালের

শুক্রবার থেকেই বাহিনী নিজের এলাকায় পৌঁছে গিয়েছে। এ দিন সকাল থেকে ৪৬টি জায়গায় পুলিশ পিকেট বসেছে। শহরে ঢোকা-বেরোনোর সব রাস্তায় চলছে নজরদারি।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২১ ০৫:১৪
Share: Save:

রাজ্যের রাজধানী কলকাতা, ভোটের আবহে এমনিতেই অতি-সংবেদনশীল। তার মধ্যে বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম তিন দফার ভোট-চিত্রে উঠে আসা গোলমালের একের পর এক ঘটনা কলকাতা পুলিশের চিন্তা বাড়াচ্ছে। গত তিন দফায় গোলমালের হাত থেকে যেখানে ছাড় পাননি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাও। আজ, শনিবার শহরের একটি অংশে চতুর্থ দফার ভোট। তাই কোথাও যাতে সামান্য গোলমালও না হয়, সে জন্য অতি-সতর্ক লালবাজার। যদিও বৃহস্পতিবার রাতে চেতলায় এবং শুক্রবার কসবায় দফায় দফায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের পরে আজকের ভোট শান্তিপূর্ণ করাই বড় চ্যালেঞ্জ বলে দাবি পুলিশের।

শুক্রবার থেকেই বাহিনী নিজের এলাকায় পৌঁছে গিয়েছে। এ দিন সকাল থেকে ৪৬টি জায়গায় পুলিশ পিকেট বসেছে। শহরে ঢোকা-বেরোনোর সব রাস্তায় চলছে নজরদারি। এ ছাড়াও ‘হেভি রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড’ (এইচ আর এফ এস)-কে ৩৭টি জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছে। লালবাজার সূত্রের খবর, শহরের সাতটি কেন্দ্র থেকে ভোটের সামগ্রী নিয়ে ভোটকর্মীরা নিজেদের বুথে পৌঁছে গিয়েছেন। সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। আজ যে ২৫টি থানা এলাকায় ভোট হচ্ছে, সেখানকার স্পর্শকাতর ভোটকেন্দ্র ও বুথের তালিকা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ‘কুইক রেসপন্স টিম’-কে ওই সব ভোটকেন্দ্র বা বুথ শুক্রবার চিনিয়ে দিয়েছে পুলিশ। ফলে গোলমালের খবর পেলে ওই বাহিনী দ্রুত পৌঁছে যেতে পারবে। কলকাতা পুলিশের সেক্টর মোবাইল এবং আর টি ভ্যান-ও এ দিন বিভিন্ন এলাকায় নজরে এসেছে। যাদবপুর এবং বেহালার বিভিন্ন গলিতে মোটরবাইকে চড়ে টহল দিয়েছেন পুলিশকর্মীরা।

২৫টি থানা এলাকার ডিভিশনাল ডেপুটি কমিশনার ছাড়াও অতিরিক্ত ১৬ জন ডেপুটি কমিশনারকে আজকের ভোটের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁদের উপরে রয়েছেন ২৫টি থানা এলাকার ছ’টি ডিভিশনের প্রতিটির দায়িত্ব পাওয়া এক জন করে যুগ্ম কমিশনার। যা নজিরবিহীন বলে দাবি পুলিশকর্তাদের। তাঁদের মতে, এ বারের মতো পুলিশি ব্যবস্থা বিগত নির্বাচনে হয়নি। ভোটের এক দিন আগে থেকেই কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা তাঁদের এলাকা ঘুরে গিয়েছেন।

এক নজরে কলকাতার ভোট

  • বিধানসভা কেন্দ্র: যাদবপুর, টালিগঞ্জ, কসবা, বেহালা পূর্ব, বেহালা পশ্চিম এবং মেটিয়াবুরুজ ও ভাঙড়ের কলকাতা পুলিশের অধীনস্থ অংশে।
  • ভোটগ্রহণ কেন্দ্র: ৭২১
  • বুথ: ২৩৪৩
  • কেন্দ্রীয় বাহিনী: ৯০ কোম্পানি
  • কলকাতা পুলিশ: প্রায় চার হাজার
  • কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি): ৯৪
  • সেক্টর মোবাইল: ১২৩
  • আরটি ভ্যান: ৭৫
  • টহলদার মোটরবাইক: ৫০
  • হাই রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড (এইচআরএফএস): ৩৭
  • নাকা-তল্লাশি: ৪০টি জায়গায়
  • পুলিশ পিকেট: ৪৬টি জায়গায়

পুলিশের একটি অংশ জানাচ্ছে, এ বার ভোটের আগে অস্ত্র এবং বোমা উদ্ধার হয়েছে অন্য বারের তুলনায় অনেক কম। এর থেকে অনুমান, দুষ্কৃতীদের কাছ থেকে বোমা বা অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ ততটা সক্রিয় ছিল না। যার পরিণাম দেখা যেতে পারে ভোটের দিন। যদিও লালবাজার জানাচ্ছে, নির্বিঘ্নে ভোট পরিচালনা করতে যা যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তা-ই হয়েছে।

যে সব দুষ্কৃতী এবং রাজনৈতিক কর্মীর বিরুদ্ধে আগের ভোটে গোলমালের অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোথাও তাঁদের বাড়ি গিয়ে সতর্ক করে এসেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কোথাও আবার তাঁদের দিয়ে মুচলেকা লিখিয়ে নিয়েছে পুলিশ। তাতেও সংশয় থাকছে লালবাজারের। যার কারণ বৃহস্পতিবার রাতে চেতলা এবং শুক্রবার সকালে কসবার রাজনৈতিক সংঘর্ষ।

অন্যান্য বারের ভোটে অভিযুক্ত রাজনৈতিক কর্মী বা দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে মুচলেকা নেওয়া হলেও তাঁরা ভোটের দিন কী করবেন, তা নিয়ে সন্দিগ্ধ পুলিশের একটি অংশ। কমিশন শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট করাতে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগের দিন তাঁদের নজরবন্দি করার নির্দেশ দিয়েছিল। এ বার তেমন কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়নি। ফলে পুলিশের নজর এড়িয়ে তাঁরা মাঠে নামলে, ভোটের দিন বড় কিছু ঘটার আশঙ্কা থাকছেই।

গোয়েন্দা বিভাগ এই দুষ্কৃতীদের বিষয়ে সতর্ক রয়েছে বলে দাবি লালবাজারের। দাগিদের নির্দিষ্ট তালিকা রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে। সেই তালিকা ধরে ধরে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি। আজ গুন্ডা দমন শাখার দল বিভিন্ন এলাকায় ঘুরবে।

এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে সুনামের সঙ্গে ভোট পরিচালনা করেছিলেন বর্তমানের পুলিশ কমিশনার। এ বারেও যাতে সেই সুনাম অক্ষুণ্ণ থাকে, সেই জন্য এই নজিরবিহীন পুলিশি ব্যবস্থা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE