Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
TMC

Bengal Polls: তারাপীঠে পুজো শিউলির, পড়ানোয় মন প্রীতীশের

ভোটের ফলাফল নিয়ে নানাবিধ জল্পনার মধ্যেই তারাপীঠে চলে গিয়েছেন বিদায়ী বিধায়ক তথা তৃণমূল প্রার্থী শিউলি। 

 তারাপীঠে শিউলি

তারাপীঠে শিউলি নিজস্ব চিত্র

বরুণ দে
কেশপুর শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২১ ০৮:৪৩
Share: Save:

কী বুঝছেন, কী হতে পারে ভোটের ফল?

কেশপুর বাজারে এক দোকানে চপ আর মুড়ি দিয়ে প্রাতরাশ সারতে সারতে এক বৃদ্ধের জবাব, ‘‘ভয় ভেঙেছে মানুষের। এ বার অন্য রকম ভোট হয়েছে এখানে। এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না!’’

কেশপুর বরাবর শাসকের ‘নিশ্চিত’ আসন। ২০০১ সালে সিপিএমের নন্দরানি ডল জিতেছিলেন প্রায় ১ লক্ষ ৮ হাজার ভোটে। ২০১৬ সালে তৃণমূলের শিউলি সাহার জয়ের ব্যবধানও ছিল প্রায় ১ লক্ষ ১ হাজার। ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দেব ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এখান থেকে প্রায় ৯২ হাজার ভোটের ‘লিড’ পেয়েছিলেন। তবে এ বার পুরো নিশ্চিন্ত নয় রাজ্যের শাসক দলও।

ভোটের ফলাফল নিয়ে নানাবিধ জল্পনার মধ্যেই তারাপীঠে চলে গিয়েছেন বিদায়ী বিধায়ক তথা তৃণমূল প্রার্থী শিউলি। শিউলি বলছেন, ‘‘পুজো দিতেই তারাপীঠে এসেছিলাম।’’ প্রার্থীর ঘনিষ্ঠরা জানাচ্ছেন, কেশপুরের মানুষের শান্তি কামনায় পুজো দিয়েছেন ‘দিদি’। ভিন্ জেলায় দলীয় প্রার্থীদের প্রচারে যাচ্ছেন না কেন? শিউলি বলছিলেন, ‘‘পায়ে ব্যথা। অন্যত্র প্রচারে যাওয়ার কথা ছিল। যেতে পারিনি।’’

বাড়িতে প্রীতিশ

বাড়িতে প্রীতিশ নিজস্ব চিত্র

বিজেপি এ বার এখানে প্রার্থী করেছিল স্কুলশিক্ষক প্রীতীশরঞ্জন কুঙারকে। তাঁর আদি বাড়ি কেশপুরের ঘোষডিহায়। তবে থাকেন খড়দহে। প্রীতীশরঞ্জন রহড়া রামকৃষ্ণ মিশনের ইংরেজির সহ-শিক্ষক। ভোটের পরে তিনি স্কুলে যেতে শুরু করেছিলেন। পিএম প্রার্থী রামেশ্বর দোলুই জামশেদ আলি ভবনে গিয়ে কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।

খুন, বোমাবাজি, ভাঙচুর, মারধর— ভোটের কেশপুর এ বারও সবই দেখেছে। ভোটের আগের রাতে তৃণমূল কর্মী খুন হয়েছেন। ভোটের দিন বিজেপি প্রার্থী, বিজেপি প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট আক্রান্ত হয়েছেন, তৃণমূল প্রার্থীর এজেন্টও আক্রান্ত হয়েছেন। কেশপুরের ৩৫৯টি বুথের মধ্যে অন্তত ৭২টি বুথে ছিল ‘সিঙ্গল-এজেন্ট’। আর ‘সিঙ্গল- এজেন্ট’ বুথের ৯০ শতাংশেই শুধুমাত্র তৃণমূলের এজেন্টই ছিলেন। বাকি ১০ শতাংশ বুথে আবার শুধু বিজেপির এজেন্ট ছিলেন। তৃণমূল প্রার্থী শিউলি তো এখনও ফুঁসছেন। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন করতে গিয়ে আমি ডে-ওয়ান থেকে লক্ষ্য করেছি পুলিশ-প্রশাসনের দ্বিচারিতা মনোভাব। আমার গায়ে আঘাত করা হয়েছে। এফআইআর করেছি। অথচ কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।’’ তিনি আরও জুড়ছেন, ‘‘ভোটের আগের রাতে তলপেটে ছুরি ঢুকিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে আমাদের এক কর্মীকে। এখান-ওখান থেকে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অথচ, মূল অভিযুক্ত বিজেপি নেতাদের গ্রেফতার করা হল না।’’

সিপিএম প্রার্থী রামেশ্বর দোলুইয়েরও দাবি, কেশপুরের সর্বত্র অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘১০২টি বুথে সুষ্ঠুভাবে ভোট হয়নি। আমরা নির্দিষ্টভাবে ৩২টি লিখিত অভিযোগ করেছি কমিশনে। তাও কেন কোনও বুথে পুনর্নির্বাচন হল না বুঝলাম না।’’ সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘কেশপুরে ত্রিমুখী লড়াই হয়েছে।’’

শিউলি, রামেশ্বর দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতিতে। বিজেপি প্রার্থী প্রীতীশরঞ্জন কুঙার অবশ্য সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন না। ভোটের দিনে গুণহারায় বুথ পরিদর্শনে গিয়ে তৃণমূল কর্মী- সমর্থকদের হামলার মুখে পড়ে জখম হন তিনি। পদ্ম-প্রার্থী বলছিলেন, ‘‘সন্ত্রাসের দিন শেষ। ক্ষমতায় এসে কেশপুরকে সন্ত্রাসমুক্ত করবই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE