Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Dilip Ghosh

BJP Candidates List: খড়্গপুর সদরে দিলীপ না তৃণমূলে ক্ষুব্ধ মুনমুন? প্রার্থী তালিকায় ৩টি ঘর ফাঁকা রেখে দিল বিজেপি

প্রথম দু’দফায় ৬০ আসনে ভোটগ্রহণ। কিন্তু ৫৭টি আসনের তালিকা প্রকাশ করল বিজেপি। যে গুলি বাদ রইল, তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য খড়্গপুর সদর।

 বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২১ ২০:৪৫
Share: Save:

প্রথম দু’দফায় ৬০ আসনে ভোটগ্রহণ। কিন্তু শনিবার সন্ধ্যায় ৫৭টি আসনের প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করল বিজেপি। যে তিনটি আসন বাদ রইল, তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য খড়্গপুর সদর। ২০১৬ সালে এই আসন থেকেই বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এর পরে তিনি মেদিনীপুর থেকে সাংসদ হয়ে ওই আসনটি ছেড়ে দেন। এর পরে উপনির্বাচনে অবশ্য তৃণমূলের প্রদীপ সরকারের কাছে হেরে যায় বিজেপি। কিন্তু খড়্গপুর সদরে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হল না কেন? তবে কি দিলীপকে প্রার্থী করা নিয়ে এখনও ভাবনাচিন্তা করছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব? নাকি ওই আসনে প্রার্থী করা হবে শনিবারই খড়্গপুরের প্রাক্তন কাউন্সিলর দেবাশিস চৌধুরী ওরফে মুনমুনকে? যিনি শনিবারই জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক পদটিও ছেড়ে দিয়েছেন।

খড়্গপুর সদরের পাশাপাশি বাঁকুড়ার বড়জোড়া এবং পুরুলিয়ার কাশীপুর কেন্দ্রের প্রার্থীর নামও শনিবার জানায়নি বিজেপি। বিজেপি সূত্রে খবর, পুরুলিয়ার কাশীপুর থেকে প্রার্থী হতে চান ওই জেলার সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী। দলের একাংশের বক্তব্য, জেলা সভাপতিকে প্রার্থী করা হবে কি না, সেই নীতিগত সিদ্ধান্ত এখনও নিতে পারেননি নেতৃত্ব। তবে বিজেপি শিবিরে এটাও আলোচনা হচ্ছে যে, ঝাড়গ্রামের সভাপতি সুখময় শতপথি এবং মেদিনীপুরে সমিত দাসকে প্রার্থী করা হয়েছে। সুতরাং জেলা সভাপতিকে প্রার্থী না করার যে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, তা পুরোপুরি ঠিক নয়। একই ভাবে বাঁকুড়ার বড়জোড়া আসনের প্রার্থীর নামও কেন জানানো হল না, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচ্য খড়্গপুর সদর।

তিনি কি বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান? এমন প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ বরাবর বলে এসেছেন, ‘‘দল যা চাইবে তাই হবে।’’ শনিবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা ঠিকআগেই সাংবাদিক বৈঠকে একই প্রশ্নের মুখোমুখি হন দিলীপ। জবাবে তিনি বলেন, ‘‘দলের পক্ষ থেকে আমাকে এই ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞাসা করা হয়নি। অতীতে দু’বার দল বলেছে। আমি প্রার্থী হয়েছি।’’ তবে প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পর যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে, তার জবাব পেতে বারবার দিলীপের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

তবে খড়্গপুর সদর কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম এখনও ঘোষণা না হওয়ায় খুশি রাজ্য বিজেপি-তে দিলীপ-ঘনিষ্ঠ নেতারা। দ্বিতীয় দফায় ১ এপ্রিল ভোট ওই আসনে। দিলীপ-ঘনিষ্ঠদের আশা, সময় নিয়ে দল হয়তো দিলীপের নামই ঘোষণা করবে। নীলবাড়ির লড়াইয়ে দিলীপ প্রার্থী হবেন কি হবেন না, তা নিয়ে অনেক দিন থেকেই দু’ভাগ বিজেপি নেতৃত্ব। এক দলের বক্তব্য, দিলীপ প্রার্থী হলে একটি কেন্দ্রেই আটক থাকবেন। রাজ্য জুড়ে তিনি যে প্রচারাভিযান চালাচ্ছেন, তা ব্যাহত হবে। তবে দিলীপ-ঘনিষ্ঠদের পাল্টা যুক্তি, দ্বিতীয় দফায় খড়্গপুর সদরে ভোটগ্রহণ হয়ে যাবে। এর পরে ছ’দফায় রাজ্যের অন্যত্র প্রচারে অসুবিধা হবে না। তাঁদের প্রশ্ন, শুভেন্দু অধিকারী যদি নন্দীগ্রাম সামলে গোটা রাজ্যে প্রচার করতে পারেন তবে দিলীপ কেন পারবেন না?

২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই রাজনীতিতে যোগ দেন এবং বিজেপি-র সভাপতি হন আদতে আরএসএসের প্রচারক দিলীপ। খড়্গপুর সদর থেকে দলের টিকিটে লড়াই করেন। জয়ও পান। সেই জয় বিজেপি-র কাছে আশাতীত ছিল। উত্তরবঙ্গে মাদারিহাট ও বৈষ্ণবনগরে বিজেপি জিততে পারে বলে আশা করলেও খড়্গপুর সদর নিয়ে সে ভাবে আশাবাদী ছিল না দল। কিন্তু ছ’বারের কংগ্রেস বিধায়ক জ্ঞান সিংহ সোহনপালকে হারিয়ে দেন দিলীপ। এর পর ২০১৯ সালে মেদিনীপুর থেকে সাংসদ হন। সেই বছরই খড়্গপুর সদরে উপনির্বাচনে পরাজিত হন দিলীপ-ঘনিষ্ঠ প্রেমচন্দ্র ঝা। প্রসঙ্গত, তখনও তৃণমূলেই শুভেন্দু। দলের পক্ষে সেই উপনির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন তিনিই। তবে বিজেপি শিবিরে এমনও শোনা যাচ্ছে যে, নীলবাড়ির লড়াইয়েও খড়্গপুর সদরে শুভেন্দুই থাকছেন বিজেপি-র সেনাপতি। আগেরবার প্রদীপ সরকারকে জিতিয়েছিলেন তিনি। এ বার প্রদীপকে হারাতেও দিলীপ নয়, শুভেন্দুকেই প্রাধ্যান্য দিতে চান পদ্মের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

পূর্বের পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুরেও শুভেন্দুর পছন্দের প্রার্থীরা শনিবার প্রকাশিত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন। ফাঁকা থাকা আসনেও সেটাই হতে পারে। খুব তাড়াতাড়ি ঘোষণা করা হতে পারে মুনমুনের নাম। তবে জেলার তৃণমূল নেতারা অবশ্য বলছেন উপ নির্বাচনে ওই আসনে শুভেন্দুর পরামর্শেই মুনমুনের পরিবর্তে প্রদীপকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। আর এ বার তৃণমূল টিকিট না দেওয়ায় শুভেন্দুর হাত ধরেই বিজেপি-তে এসে ভোটে লড়তে পারেন মুনমুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE