মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
একসঙ্গে দুই কেন্দ্রে দাঁড়ানোর পথ খুলে রাখতে চান না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার পাশাপাশি নিজের পুরনো কেন্দ্র ভবানীপুরেও লড়তে পারেন বুঝে বিরোধী মহল থেকে কটাক্ষ শুরু হয়েছিল। মমতা তাতে জল ঢেলে শুধুই নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ নিতে চলেছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্তে বদল না হলে তিনি ভবানীপুরে দাঁড়াবেন না।
বিষয়টি অবশ্য এখনও তৃণমূলের শীর্ষ স্তরেই রয়েছে। যথা সময়ে ঘোষণা করলে ছবি পরিষ্কার হবে। এখনও পর্যন্ত সূত্রের খবর, বুধবার দলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের প্রস্তুতি রয়েছে। তালিকা প্রকাশ হতে পারে দফাওয়াড়ি। সেই হিসেবে নন্দীগ্রামের ভোট দ্বিতীয় পর্বে এবং দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর সপ্তম পর্বে।
শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যাওয়ার পরে নন্দীগ্রামে মমতা প্রথম দলীয় সমাবেশের মঞ্চ থেকে কার্যত চমক দিয়ে নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। নন্দীগ্রাম থেকে তৃণমূলের টিকিটে দু’বার জিতেছিলেন শুভেন্দু। ফলে সেই নন্দীগ্রামে স্বয়ং মমতার দাঁড়াতে চাওয়া রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তার পরই শুভেন্দু হুমকি দেন, মমতাকে তিনি ‘আধ লাখ’ ভোটে হারাবেন। মুকুল রায়ের কটাক্ষ ছিল, মমতা শেষ পর্যন্ত ভবানীপুরেই ‘পালিয়ে’ যাবেন। বিজেপি শিবির এই প্রচারও করে যে, অনিশ্চয়তা বুঝে মমতা নন্দীগ্রামে দাঁড়ালেও ভবানীপুর ছাড়বেন না।
সূত্রের খবর, ভবানীপুর ছে়ড়ে শুধু নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর মধ্যে দিয়ে সব বিরোধী প্রচারের ‘জবাব’ দেওয়ার বিষয়টিকে মমতা অগ্রাধিকার দিতে চান। আরও একটি ব্যাখ্যা, রাজ্যে ক্ষমতা দখলের ক্ষেত্রে মমতার বড় সহায়ক হয়েছিল নন্দীগ্রাম আন্দোলন। তিনি আর কোনও কেন্দ্রে না দাঁড়ালে নন্দীগ্রামের মানুষের কাছে অর্থবহ বার্তা দেওয়া যাবে। ভবানীপুরে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মমতার জয়ের ব্যবধান ছিল ২৫ হাজারের সামান্য বেশি। আর গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এই কেন্দ্রে তৃণমূল এগিয়েছিল ৩১৬৮ ভোটে। বহু ভাষাভাষী ভোটারের এই ভবানীপুর কেন্দ্রের সর্বশেষ চিত্রটি তাই রাজনৈতিক মহলে চর্চার বিষয়।
সোমবার তৃণমূলের নির্বাচনী কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সূত্রের খবর, সেখানে আলোচনায় ঠিক হয়, প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে বয়স, শারীরিক সক্ষমতা এবং ভাবমূর্তিই বিবেচ্য হবে। তালিকায় বিভিন্ন স্তরের কিছু পরিচিত মুখ থাকতে পারেন। প্রার্থী বাছাইয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন মমতা। দলীয় সূত্রে খবর, দলের খসড়া প্রার্থী তালিকা তাঁর হাতে রয়েছে। এ দিন সে কথা জানিয়ে মনোনয়নের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তের কথাও উল্লেখ করেন নেত্রী। তালিকা চূড়ান্ত করার দায়িত্ব আনুষ্ঠানিক ভাবে মমতার হাতে ছেড়ে দিয়েছে কমিটি। বয়স, অসুস্থতা ও অন্য নানা কারণে অন্তত ৫০টি কেন্দ্রে প্রার্থী বদল হতে পারে। কয়েক জন বিধায়ক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান না বলে দলকে জানিয়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ আবার পরিবারের কাউকে প্রার্থী করতে আর্জিও জানান। দলের এক নেতার দাবি, এ বারও মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা ৩০%-এর কম হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy